ওড়িশা থেকে রাজ্যসভায় তিনটি সদস্য পেতে পারত নবীন পট্টনায়কের দল বিজেডি। সেই তিনটির মধ্যে একটি বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল বিজেডি।
কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের মতে, বিজেডি যে বিজেপি-র ‘বি’ দল তা আবারও প্রকাশ্যে চলে এল। সূত্রের খবর, বিজেডি-র লোকসভার নেতা পিনাকী মিশ্র আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি আসন্ন লোকসভায় দাঁড়াবেন না। রাজ্যসভার টিকিট প্রত্যাশী ছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁকে রাজ্যসভার টিকিট দিলেন না নবীন। এর পিছনে বিজেপি-র চাপ রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
আগামী এপ্রিল মাসে রাজ্যসভা সাংসদ হিসেবে মেয়াদ শেষ হচ্ছে রেলমন্ত্রীর। এর আগে ওড়িশা থেকে নির্বাচিত হয়ে সংসদের উচ্চকক্ষে গিয়েছিলেন তিনি। এ বারও ওড়িশা থেকে রাজ্যসভায় সাংসদ পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা ছিল না বিজেপির কাছে। এপ্রিল মাসে এই রাজ্যের তিন সাংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
অঙ্কের হিসেবে এই রাজ্য থেকে এই তিন আসনে রাজ্যসভা সদস্য হতে গেলে এক-এক জন প্রার্থীর ৩৭টি করে ভোট লাগবে। তবে ওড়িশা বিধানসভায় বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা মাত্র ২২। তা সত্ত্বেও অশ্বিনীকে ওড়িশা থেকেই প্রার্থী করা হয়েছে। এবং বৈষ্ণবকে প্রার্থী করার পরেই ওড়িশার শাসকদল বিজু জনতা দল জানিয়ে দিয়েছে, তারা কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীকে সমর্থন করবে। এই আবহে বিজেডি নিজেদের দলের দু’জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। বিজেডি বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, রাজ্যে রেল পরিকাঠামো ব্যবস্থার উন্নয়নের স্বার্থে অশ্বিনী বৈষ্ণবকে সমর্থন করবে তারা।
ওড়িশার দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা অজয় সিংহ তাঁর এক্স হ্যান্ডলে গত বছর জুন মাসে বালাসোরে ট্রেন দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ বিশদে উল্লেখ করে বলেছেন, ‘সে দিন রেলমন্ত্রী লোক দেখানোর জন্য কয়েক ফোঁটা চোখের জল ফেলেছিলেন। আজ আবার সেই রেলমন্ত্রীকেই বিজেডি সমর্থন করছে। গোটা ওড়িশা নজর রাখছে।’
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, পিনাকী মিশ্রকে নবীন যাতে রাজ্যসভার টিকিট না দেন, তার জন্য বিজেপি নেতৃত্বের চাপ ছিল। প্রশ্ন ঘুষ কাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে এথিক্স কমিটির সংঘাত প্রকাশ্যে চলে আসে। বিজেপির একটি অংশের বক্তব্য, এই লড়াইয়ে মহুয়ার পাশে ছিলেন বিজেডির এই সাংসদ। তাই তাঁকে কোপে পড়তে হচ্ছে বলেই খবর রাজনৈতিক মহলের।
দেশের ১৫টি রাজ্য থেকে মোট ৫৬টি রাজ্যসভা আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি। পশ্চিমবঙ্গেরও পাঁচটি আসনে সে দিন নির্বাচন হবে। তবে ভোটাভুটি হবে না। কারণ, ‘অতিরিক্ত’ প্রার্থী দেয়নি কোনও দলই।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)