তৎপর বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে বিরোধী শিবিরকে জোটবদ্ধ করতে তৎপরতা শুরু করে দিলেন নীতীশ কুমার। সব কিছু ঠিক থাকলে বিরোধী অস্ত্রে শান দিতে আগামী সপ্তাহে দিল্লি আসছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ। বৈঠক করবেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী ও সিপিএম-সিপিআইয়ের মতো বাম দলগুলির সঙ্গে। জেডিইউ সূত্রের বক্তব্য, বৈঠক করার কথা রয়েছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের সঙ্গেও। কিন্তু বিজেপি বিরোধিতার প্রশ্নে কেজরীওয়ালের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন থাকায় মেপে পা ফেলার পক্ষপাতী নীতীশ শিবির।
বিহারে সদ্য বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে আরজেডি-কংগ্রেসের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে সরকার গড়েছেন নীতীশ। বিজেপি শিবিরের দাবি, ২০২৪ সালে মোদী ফের প্রধানমন্ত্রী হলে নীতীশের রাজনৈতিক জীবন শেষ হয়ে যেতে পারে ওই আশঙ্কায় বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করেছেন নীতীশ। তাঁর লক্ষ্য বিজেপি-বিরোধী শিবিরের প্রধান মুখ হয়ে ওঠা। সে কারণেই বিজেপি-বিরোধী বিভিন্ন রাজ্যে বিরোধী দলগুলিকে এক জোট করার লক্ষ্যে ভারত সফরের পরিকল্পনা আগেই ঘোষণা করেছিলেন নীতীশ। দল জানিয়েছে, দিল্লি সফরের মাধ্যমে সেই যাত্রার আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু করার পরিকল্পনা নিয়েছেন নীতীশ। যদিও আজ পটনায় নীতীশ ফের জানিয়েছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে নেই। তাঁর লক্ষ্য হল বিরোধীদের একজোট করে বিজেপিকে হটানো। সূত্রের মতে, কী ভাবে অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে বিরোধীরা শাসক জোটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে সক্ষম হবে, সেই নীল নকশা ঠিক করতেই এ যাত্রায় রাজধানী আসছেন তিনি। সূত্রের মতে, প্রথম সফরে বিরোধী জোট গঠনের উপরে জোর দিতে চাইছেন নীতীশ। বিরোধী শিবিরের মুখ কে হবেন, সেই স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে আপাতত আলোচনা এড়িয়ে যাওয়ার পক্ষপাতী জেডিইউ নেতৃত্ব।
জেডিইউ শিবিরের মতে, গোটা দেশ জুড়ে বিরোধীদের মনোবল ভাঙতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহার করে চলেছে মোদী সরকার। যাতে মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, বেহাল অর্থনীতির মতো আমজনতার বিষয় নিয়ে বিরোধীরা সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পান। তাই বিরোধীদের এক জোট করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী জোট গঠনই হল নীতীশের আশু লক্ষ্য। দল ওই দাবি করলেও রাজনীতির অনেকেরই মতে, দীর্ঘ দিন ধরেই প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছেন নীতীশ। তাঁর লক্ষ্যই হল বিজেপি-বিরোধী জোটের মুখ হওয়া। কিন্তু কংগ্রেসের তাতে আপত্তি রয়েছে। ঘরোয়া ভাবে কংগ্রেস নেতৃত্ব বলছেন, নেতৃত্ব কে দেবেন, তা সময় ও পরিস্থিতি ঠিক করে দেবে। অন্য দিকে আর এক বিরোধী নেতা কেজরীওয়াল নিজেই প্রধানমন্ত্রিত্বের দাবি জানিয়ে বসে রয়েছেন। ফলে তিনিও নীতীশের নেতৃত্ব কতটা মেনে নেবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষেও নীতীশের নেতৃত্বে লড়াইয়ে নামা অস্বস্তিকর। একমাত্র তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও এখনও পর্যন্ত সরাসরি নীতীশের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। সর্বোপরি জাতীয় রাজনীতিতে নীতীশের বারংবার অবস্থান পরিবর্তনের ফলে তাঁকে মুখ করে এগোনোর প্রশ্নে দ্বিধা রয়েছে বিরোধী দলগুলির মধ্যেই।
আজ থেকে পটনায় শুরু হয়েছে জেডিইউ-এর কার্যসমিতির বৈঠক। সূত্রের মতে, আগামী লোকসভায় বিহারে যাতে চল্লিশটি আসন জেডিইউ-আরজেডি জোট দখল করতে সক্ষম হয়, তা নিয়ে মূলত আলোচনা হয়। গত কাল প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, তিনি দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলেই বিরোধীরা তাঁর বিরুদ্ধে একজোট হচ্ছেন। রাজনীতির অনেকে মনে করছেন, নাম না করে নীতীশের দলের সঙ্গে আরজেডির জোট বাঁধাকে কটাক্ষ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আজ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের উপস্থিতিতে নীতীশ বলেন, ‘‘গোটা দেশে বিজেপির প্রায় হাজার খানেক বিধায়ক ও শ’তিনেক সাংসদ রয়েছেন। তাঁদের কারও বাড়িতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তল্লাশিতে যাচ্ছে না। বিজেপির নেতারা কি ধোয়া তুলসী পাতা?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy