খারাপ পরিস্থিতি কাটবে কবে? ছবি: রয়টার্স।
ধীরে ধীরে প্রত্যাহার হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা। সংযোগ ফিরে আসছে ল্যান্ডলাইনে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ফের চালু হলেও, কাশ্মীর কি ফিরবে আগের কাশ্মীরে? আজ তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কাশ্মীরের একটি দৈনিক সংবাদপত্রের কার্যনির্বাহী সম্পাদক অনুরাধা ভাসিন। তাঁর কথায়, ‘‘অতীতে খারাপ সময়ের মধ্যে গিয়েছে উপত্যকা, কিন্তু এ রকম খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।’’
অনির্দিষ্টকালীন কার্ফু, মোবাইল-ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ায় জম্মু-কাশ্মীরে সংবাদপত্র প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না, এই অভিযোগ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ভাসিন। গত কাল সেই মামলার শুনানি হয়। সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা তোলার জন্য সরকারকে কিছুটা সময় দিতে রাজি হয় শীর্ষ আদালত। আদালতের রায় নিয়ে সে ভাবে মন্তব্য না করলেও আজ দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে কেন ল্যান্ডলাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, কেন সাংবাদিকদের গতিবিধিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ভাসিন। তাঁর কথায়, ‘‘কী কারণে নিষেধাজ্ঞা তার কোনও স্পষ্ট কারণ জানা নেই।’’ কেনই বা কার্ফু জারির তিন দিনের মাথায় জম্মু-কাশ্মীর পুলিশকে অস্ত্র জমা করতে হল তারও কোনও উত্তর নেই ভাসিনের কাছে। তাঁর কথায়, ‘‘কার্ফুর তিন দিনের মাথায় দফতরে যেতে গিয়ে জানতে পারি স্থানীয় পুলিশকে আধাসেনার কাছে অস্ত্র জমা দিতে বলা হয়েছে।’’
অতীতে নব্বইয়ের দশকে কিংবা ২০১০ বা ২০১৬ সালে প্রবল জনবিক্ষোভের সাক্ষী থেকেছে উপত্যকা। সে সময়েও কার্ফু জারি হলেও এ বার যে ভাবে সংবাদমাধ্যম প্রশাসনের ব্ল্যাক আউটের শিকার হয় তা নজিরবিহীন বলেই মত ভাসিনের। তাঁর কথায়, ‘‘অতীতেও এ ধরনের গোলমালের দিনগুলিতে খবর পাঠাতে সমস্যা হতো সাংবাদিকদের। তাও কোনও ভাবে এসএমএস করে বা দু’মিনিটের জন্য ফোন করে খবর পাঠাতে পারতেন। এ বারে সব স্তব্ধ। ’’
গত কয়েক বছরে যে ভাবে উপত্যকার সাংবাদিকদের গ্রেফতার করার প্রবণতা শুরু হয়েছে তাও উদ্বেগজনক বলে মনে করেন ভাসিন। তাঁর দাবি, ‘‘এক সাংবাদিক সরকারের খবর লেখেন না বলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। জঙ্গি যোগাযোগের প্রমাণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেয় প্রশাসন।’’ অন্য এক সাংবাদিক হিজবুল জঙ্গি বুরওয়ান ওয়ানির মৃত্যুর এক বছর পরে জঙ্গি নেটওয়ার্ক কী ভাবে উপত্যকায় সক্রিয় তা নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন লেখেন। তথ্যসমৃদ্ধ ওই লেখাটি শুধু কাশ্মীর নিয়ে গবেষণাকারীদের কাছেই মূল্যবান তাই নয়, গোয়েন্দাদের জন্যও সেটি গুরুত্বপূর্ণ নথি হতে পারত। কিন্তু কেন জঙ্গিদের কথোপকথন, তাদের বক্তব্য প্রকাশ হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওই সাংবাদিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ভাসিনের কথায়, ‘‘আগামী দিনে সাংবাদিকদের উপরে প্রশাসনের খবরদারি বাড়বে বলেই আশঙ্কা।’’
আজ উপত্যকায় প্রায় ৫০ হাজার ল্যান্ডলাইন চালু হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে মোবাইল-ইন্টারনেট পরিষেবাও ফের চালু করা হতে পারে। প্রশাসনের দাবি, রাস্তায় ব্যারিকেড থাকলেও স্থানীয় মানুষের পরিচয়পত্র পরীক্ষা করে তাঁদের যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের প্রিন্সিপ্যাল সচিব রোহিত কানসলের বক্তব্য, ‘‘এখনও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। গণপরিবহণ ব্যবস্থা চালু রয়েছে।’’ খুলেছে সরকারি অফিসও। তবে বেশির ভাগ দোকানপাট, পেট্রল পাম্প এখনও বন্ধ। আগামী সপ্তাহ থেকে এলাকা ধরে ধরে স্কুল খোলার অনুমতি দেওয়া হবে। ‘‘সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার জন্য কোনও রাজনীতিককে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে? এটা কি গণতন্ত্র?’’— প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy