রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
এম কে স্ট্যালিন, সুপ্রিয়া সুলে, আদিত্য ঠাকরে থেকে ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতিরা ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় পা মিলিয়েছেন। কিন্তু এই যাত্রা থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অখিলেশ যাদবদের দল।
কন্যাকুমারী থেকে শুরু করে কাশ্মীর পর্যন্ত প্রায় ৩৮৫০ কিলোমিটার পদযাত্রা আজ শেষ হল। যাত্রার শেষে আগামিকাল, সোমবার শ্রীনগরে শের-ই-কাশ্মীর স্টেডিয়ামে জনসভা। কংগ্রেসের তরফে ২১টি বিরোধী দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস নেতাদের হিসেবে, খুব বেশি হলে ১২টি রাজনৈতিক দলের নেতা বা প্রতিনিধি সেখানে হাজির থাকবেন। তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি (এসপি), তেলুগু দেশমের মতো দল হয়তো থাকবে না। আম আদমি পার্টির মতো অনেক দলকে আবার কংগ্রেস আমন্ত্রণই জানায়নি।
বিরোধী শিবিরের এই ছত্রভঙ্গ পরিস্থিতির মুখে দাঁড়িয়েও আজ ওয়েনাডের কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর পাল্টা প্রশ্ন, “আপনারা কিসের ভিত্তিতে বিরোধী শিবির ছত্রভঙ্গ বলছেন? বিরোধীদের বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির পরে বিরোধী ঐক্য তৈরি হয়। এটা মতাদর্শের লড়াই।” কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র রাজনৈতিক ফায়দা মিলবে কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক শিবিরে প্রশ্ন ছিল। এই যাত্রার শেষে কংগ্রেসের পিছনে বাকি বিরোধীরা এসে দাঁড়াবে কি না, প্রশ্ন ছিল তা নিয়েও। রাহুলের দাবি, “এই যাত্রার অবশ্যই রাজনৈতিক প্রভাব পড়বে। নির্দিষ্ট ভাবে কী প্রভাব পড়বে, তা এখনই বলতে পারব না।” বিরোধী জোট নিয়ে তাঁর দাবি, “বিরোধীদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। কিন্তু কথাও হবে। বিরোধীরা ছত্রভঙ্গ নয়। বিরোধীরা অবশ্যই একজোট হয়ে দাঁড়াবে।”
কংগ্রেস সূত্রের দাবি, ডিএমকে, এনসিপি, আরজেডি, শিবসেনা, এনসি, পিডিপি, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, সিপিএম, সিপিআই-সহ এক ডজন দলের প্রতিনিধিরা সোমবারের জনসভায় যোগ দেবেন। বিরোধী শিবিরের অধিকাংশ নেতার মতে, ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ যতখানি না বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই ছিল, তার থেকেও বেশি ছিল রাহুলের ‘পাপ্পু’ ভাবমূর্তি থেকে বেরিয়ে আসার লড়াই।
ওয়েনাডের সাংসদ আজ নিজে বলেছেন, “ব্যক্তিগত ভাবে এটা আমার জীবনের সব চেয়ে গভীর ও সুন্দর অভিজ্ঞতা। অনেক কিছু শিখলাম, বুঝতে পারলাম। কেউ আশা করেনি, এত সাড়া মিলবে।” রাহুল ১৩৫ দিন ধরে নিয়মিত ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার হেঁটেছেন। এই ১৩৫ দিন দাড়ি কাটেননি। রাতে বাকি কংগ্রেস নেতাদের মতোই ট্রাকের উপরে কন্টেনারে থেকেছেন। রাহুলের দাবি, কংগ্রেস তো বটেই, বিজেপিও মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। কথা হচ্ছে ভায়া সংবাদমাধ্যম। যা পুরোপুরি নিরপেক্ষ নয়। তাই তিনি এই যাত্রার মাধ্যমে সরাসরি মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চেয়েছিলেন।
প্রশ্ন উঠেছে, ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র পরে কী?
রাহুল মজা করে বলেছেন, “এতখানি হাঁটলাম, একটু তো বিশ্রাম নিতে দিন।” কিন্তু জানিয়েছেন, তাঁকে কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরাই বলছেন, আরও ‘অ্যাকশন’ দরকার। জয়রাম রমেশের মতো কংগ্রেস নেতারা ইতিমধ্যেই বলতে শুরু করেছেন, দক্ষিণ থেকে উত্তরে ভারত যাত্রার পরে, পশ্চিম থেকে পূর্বে— গুজরাত থেকে অরুণাচল পর্যন্ত ভারত যাত্রা করা দরকার। রাহুলের নিজের বক্তব্য, “আমার মনে দু’-তিন রকম পরিকল্পনা রয়েছে। আরও গভীর কিছু কর্মসূচির ভাবনা রয়েছে।”
ইঙ্গিত মিলেছে, ‘পার্টটাইম রাজনীতিক’-এর তকমা ঝেড়ে ফেলে এ বার টানা ময়দানে থাকতে চাইছেন সনিয়া-তনয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy