ধনখড়ের তত্ত্ব খারিজ করলেন চন্দ্রচূড়। ফাইল চিত্র।
কলেজিয়াম ব্যবস্থা এবং বিচারালয়ে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার এবং বিচারবিভাগের টানাপড়েনের মধ্যেই সংবিধানের ‘মূল কাঠামো’ নিয়ে নিজের অবস্থান জানালেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। সংবিধানের মূল কাঠামো বা ‘বেসিক স্ট্রাকচার’ নিয়ে সওয়াল করাই শুধু নয়, তাকে ‘ধ্রুবতারা’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। কিছু দিন আগেই রাজস্থানে একটি সম্মেলনে যোগ দিয়ে দেশের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় সংবিধানের ‘মূল কাঠামো তত্ত্ব’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। ধনখড়ের সেই বক্তব্যকে খারিজ করে দিলেন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান।
শনিবার মুম্বইয়ে আইনজীবী ‘ননী পালকিওয়ালা স্মারক বক্তৃতা’য় ভাষণ দেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। সেখানেই তিনি বলেন, “সংবিধানের মূল কাঠামো আমাদের কাছে ধ্রুবতারার মতো। আমাদের পথ যখন অন্ধকারে ঢেকে যায়, তখন এই মূল কাঠামোই আমাদের সঠিক দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।” সংবিধানের মূল কাঠামোর ধারণাকে ব্যাখ্যা করে তিনি এ-ও জানান যে, সংবিধানের মধ্যে থাকা ধর্মনিরপেক্ষতা, যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা, ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ ইত্যাদি আদর্শ আবর্তিত হয় ওই ধারণাকে কেন্দ্র করেই। এ প্রসঙ্গে আইনজীবী ননী পালকিওয়ালাকে স্মরণ করে তিনি বলেন, “উনি এই বার্তাই দিয়ে গিয়েছেন, দেশের সংবিধানকে বদলানো যায় না।”
১৯৭৩ সালে কেশবানন্দ ভারতী বনাম কেরল সরকার মামলায় রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, দেশের সরকার সংবিধান সংশোধন কিংবা পরিবর্তন করতে পারলেও, তার মূল কাঠামো বা ‘বেসিক স্ট্রাকচারে’ কোনও বদল আনা যাবে না। সম্প্রতি শীর্ষ আদালতের এই রায় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ধনখড়। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও কেন তারা সংবিধান সংশোধন করতে পারবে না, তা নিয়েও পরোক্ষে প্রশ্ন তোলেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকার দীর্ঘ দিন ধরেই কলেজিয়াম ব্যবস্থায় সংস্কার দাবি করছে। এই ব্যবস্থায়, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং প্রবীণ চার বিচারপতি শীর্ষ আদালতের সম্ভাব্য বিচারপতিদের নাম প্রস্তাব করে আইন মন্ত্রককে। কিন্তু সরকারপক্ষ চাইছে কলেজিয়ামে সরকারেরও কোনও প্রতিনিধি থাকুন। এ ক্ষেত্রে বিচারপতি নিয়োগে জনমতের প্রতিফলন থাকবে বলে দাবি করেছে তারা। কিছু দিন আগেই এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়েছেন আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু। আগেও কলেজিয়াম ব্যবস্থার পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন চন্দ্রচূড়। এ সবের আবহে বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, সরকার বিচারবিভাগকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy