Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Balvant Parekh

Balvant Parekh: মিথ্যা মানতে না পেরে চাকরি ছাড়েন, অনাহারে দিন কাটানো বলবন্তই ভারতের ‘ফেভিকল ম্যান’

এক সময়ে বেকার হয়ে বন্ধুর গুদামে স্ত্রীকে নিয়ে দিন কাটানো সেই ব্যক্তিই আজ কোটিপতি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২১ ১০:০২
Share: Save:
০১ ১৮
অনীহা নিয়ে কি বেশি দূর এগোনো যায়! কেউই পারেন না। বলবন্তও পারেননি। মিথ্যার ঝুলি ভর্তি হতে দেখে প্রতি দিন বাড়ি ফিরে কাঁদতেন। শেষে মোটা মাইনের আইনজীবীর চাকরি ছেড়ে পিয়নের কাজ শুরু করলেন।

অনীহা নিয়ে কি বেশি দূর এগোনো যায়! কেউই পারেন না। বলবন্তও পারেননি। মিথ্যার ঝুলি ভর্তি হতে দেখে প্রতি দিন বাড়ি ফিরে কাঁদতেন। শেষে মোটা মাইনের আইনজীবীর চাকরি ছেড়ে পিয়নের কাজ শুরু করলেন।

০২ ১৮
সেই পিয়নই আজ ভারতের ‘ফেভিকল ম্যান’। ঘরে ঘরে ভাঙা জিনিস জোড়া লাগাচ্ছেন তিনি। এক সময়ে বেকার হয়ে বন্ধুর গুদামে স্ত্রীকে নিয়ে দিন কাটানো সেই ব্যক্তিই আজ কোটিপতি।

সেই পিয়নই আজ ভারতের ‘ফেভিকল ম্যান’। ঘরে ঘরে ভাঙা জিনিস জোড়া লাগাচ্ছেন তিনি। এক সময়ে বেকার হয়ে বন্ধুর গুদামে স্ত্রীকে নিয়ে দিন কাটানো সেই ব্যক্তিই আজ কোটিপতি।

০৩ ১৮
গুজরাতের ভাবনগর জেলার মাহুবা শহরে এক জৈন পরিবারে জন্ম বলবন্ত পারেখের। তাঁর ঠাকুরদা এলাকার নামকরা আইনজীবী ছিলেন।

গুজরাতের ভাবনগর জেলার মাহুবা শহরে এক জৈন পরিবারে জন্ম বলবন্ত পারেখের। তাঁর ঠাকুরদা এলাকার নামকরা আইনজীবী ছিলেন।

০৪ ১৮
ছোট থেকেই বলবন্ত গতে বাঁধা চাকরির বাইরে বেরিয়ে কিছু করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রাজি ছিলেন না মা-বাবা। তাঁদের কথাতেই আইন নিয়ে পড়াশোনা করতে হয়েছিল বলবন্তকে।

ছোট থেকেই বলবন্ত গতে বাঁধা চাকরির বাইরে বেরিয়ে কিছু করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রাজি ছিলেন না মা-বাবা। তাঁদের কথাতেই আইন নিয়ে পড়াশোনা করতে হয়েছিল বলবন্তকে।

০৫ ১৮
মুম্বইয়ের একটি সরকারি কলেজে ভর্তি হন তিনি। সে সময় ভারত ছাড়ো আন্দোলনে গর্জে উঠেছিল দেশ। যুবক বলবন্তও সেই আন্দোলনে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। বাড়ির অমতে গিয়ে পড়াশোনা মাঝ পথে থামিয়েই আন্দোলনে নামেন তিনি।

মুম্বইয়ের একটি সরকারি কলেজে ভর্তি হন তিনি। সে সময় ভারত ছাড়ো আন্দোলনে গর্জে উঠেছিল দেশ। যুবক বলবন্তও সেই আন্দোলনে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। বাড়ির অমতে গিয়ে পড়াশোনা মাঝ পথে থামিয়েই আন্দোলনে নামেন তিনি।

০৬ ১৮
পড়া শেষ না করেই গ্রামে ফিরে গিয়েছিলেন। পরে মা-বাবার জোড়াজুড়িতে ফের তাঁকে মুম্বই এসে আইন পাশ করতে হয়।

পড়া শেষ না করেই গ্রামে ফিরে গিয়েছিলেন। পরে মা-বাবার জোড়াজুড়িতে ফের তাঁকে মুম্বই এসে আইন পাশ করতে হয়।

০৭ ১৮
ঠাকুরদার মতো দুঁদে আইনজ্ঞ হবে ছেলে, মা-বাবা স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু আইন পাশ করেও আইনের বোঝা বইতে পারেননি তিনি। রোজ গায়ে কালো কোট চাপিয়ে জেনে বুঝে মিথ্যা বলতে পারছিলেন না তিনি।

ঠাকুরদার মতো দুঁদে আইনজ্ঞ হবে ছেলে, মা-বাবা স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু আইন পাশ করেও আইনের বোঝা বইতে পারেননি তিনি। রোজ গায়ে কালো কোট চাপিয়ে জেনে বুঝে মিথ্যা বলতে পারছিলেন না তিনি।

০৮ ১৮
চরম অনীহা থেকে আইনের কালো কোট খুলে ফেলে রাতারাতি বেকার হয়ে যেতে দু’বার ভাবেননি। বেকার অবস্থাতেই কান্তাবেন নামে এক মহিলার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।

চরম অনীহা থেকে আইনের কালো কোট খুলে ফেলে রাতারাতি বেকার হয়ে যেতে দু’বার ভাবেননি। বেকার অবস্থাতেই কান্তাবেন নামে এক মহিলার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।

০৯ ১৮
তার পরের দিনগুলি কেটেছিল চরম আর্থিক দুরাবস্থার মধ্যে। নিজে কী খাবেন, স্ত্রীকে কী খাওয়াবেন জানতেন না। মাথার উপর থাকার ছাদও চলে গিয়েছিল তাঁর।

তার পরের দিনগুলি কেটেছিল চরম আর্থিক দুরাবস্থার মধ্যে। নিজে কী খাবেন, স্ত্রীকে কী খাওয়াবেন জানতেন না। মাথার উপর থাকার ছাদও চলে গিয়েছিল তাঁর।

১০ ১৮
এক বন্ধুকে রাজি করিয়ে তাঁর গুদামে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতে শুরু করেছিলেন তিনি। তার পর অনেক চেষ্টার পর একটি কাঠের ব্যবসায়ীর অধীনে নামমাত্র মাইনেতে পিয়নের কাজ পান।

এক বন্ধুকে রাজি করিয়ে তাঁর গুদামে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতে শুরু করেছিলেন তিনি। তার পর অনেক চেষ্টার পর একটি কাঠের ব্যবসায়ীর অধীনে নামমাত্র মাইনেতে পিয়নের কাজ পান।

১১ ১৮
ব্যবসায়ী মন নিয়ে কোনও চাকরিতেই স্থায়ী হতে পারেননি তিনি। কিছু দিন যাওয়ার পর পিওনের চাকরি ছেড়ে দেন। তার পর এক বন্ধুর সাহায্যে বিদেশ থেকে সাইকেল, পেপার ডাই- সমস্ত জিনিস আমদানি করে ব্যবসায়ীদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া শুরু করলেন।

ব্যবসায়ী মন নিয়ে কোনও চাকরিতেই স্থায়ী হতে পারেননি তিনি। কিছু দিন যাওয়ার পর পিওনের চাকরি ছেড়ে দেন। তার পর এক বন্ধুর সাহায্যে বিদেশ থেকে সাইকেল, পেপার ডাই- সমস্ত জিনিস আমদানি করে ব্যবসায়ীদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া শুরু করলেন।

১২ ১৮
প্রথম থেকেই ব্যবসায় বেশ ভাল লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছিলেন তিনি। কয়েক মাসের মধ্যেই স্ত্রীকে নিয়ে মুম্বইয়ে একটি ফ্ল্যাট কিনে ফেলেন। স্ত্রী, ছেলে এবং ভাই সুশীলের সঙ্গে সেই ফ্ল্যাটেই থাকতে শুরু করেন বলবন্ত।

প্রথম থেকেই ব্যবসায় বেশ ভাল লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছিলেন তিনি। কয়েক মাসের মধ্যেই স্ত্রীকে নিয়ে মুম্বইয়ে একটি ফ্ল্যাট কিনে ফেলেন। স্ত্রী, ছেলে এবং ভাই সুশীলের সঙ্গে সেই ফ্ল্যাটেই থাকতে শুরু করেন বলবন্ত।

১৩ ১৮
সময় যত এগিয়েছে পরিচিতি তত বেড়েছে। মাঝে এক জার্মান সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু কারও অধীনে কাজ করার মানসিকতা বলবন্তের ছিল না। তিনি নিজের সংস্থা খুলতে চেয়েছিলেন।

সময় যত এগিয়েছে পরিচিতি তত বেড়েছে। মাঝে এক জার্মান সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু কারও অধীনে কাজ করার মানসিকতা বলবন্তের ছিল না। তিনি নিজের সংস্থা খুলতে চেয়েছিলেন।

১৪ ১৮
১৯৫৪ সালে ভাই সুশীলের সঙ্গে মুম্বইয়ের জেকব সার্কল-এ পারেখ ডাইকেম ইন্ডাস্ট্রিজ নামে একটি সংস্থা গড়ে তোলেন। মূলত কাপড় রঙের জিনিসপত্রই তিনি তৈরি করতেন।

১৯৫৪ সালে ভাই সুশীলের সঙ্গে মুম্বইয়ের জেকব সার্কল-এ পারেখ ডাইকেম ইন্ডাস্ট্রিজ নামে একটি সংস্থা গড়ে তোলেন। মূলত কাপড় রঙের জিনিসপত্রই তিনি তৈরি করতেন।

১৫ ১৮
এর বছর পাঁচেক পর পিডিলাইট সংস্থার জন্ম। যার অন্যতম উৎপাদন হল ফেভিকল। ফেভিকলের জনপ্রিয়তা ঘরে ঘরে পৌঁছে যায়।

এর বছর পাঁচেক পর পিডিলাইট সংস্থার জন্ম। যার অন্যতম উৎপাদন হল ফেভিকল। ফেভিকলের জনপ্রিয়তা ঘরে ঘরে পৌঁছে যায়।

১৬ ১৮
ফেভিকলের জোড় এতটাই মজবুত যে ৬২ বছর ধরে ভারতবাসীর মনে রয়ে গিয়েছে এটি। ফেভিকল দিয়ে যাত্রা শুরু করা বলবন্তের সংস্থা পিডিলাইট এখন ২০০-র বেশি ধরনের জিনিস তৈরি করে।

ফেভিকলের জোড় এতটাই মজবুত যে ৬২ বছর ধরে ভারতবাসীর মনে রয়ে গিয়েছে এটি। ফেভিকল দিয়ে যাত্রা শুরু করা বলবন্তের সংস্থা পিডিলাইট এখন ২০০-র বেশি ধরনের জিনিস তৈরি করে।

১৭ ১৮
আমেরিকা, তাইল্যান্ড, মিশর, বাংলাদেশেও কারখানা খুলেছে পিডিলাইট। সিঙ্গাপুরে গড়ে উঠেছে গবেষণা কেন্দ্র।

আমেরিকা, তাইল্যান্ড, মিশর, বাংলাদেশেও কারখানা খুলেছে পিডিলাইট। সিঙ্গাপুরে গড়ে উঠেছে গবেষণা কেন্দ্র।

১৮ ১৮
বলবন্ত এশিয়ার অন্যতম যাঁকে টেক্সাসের দ্য ইনস্টিটিউট অব জেনারেল সিমেনটিকস্ পুরস্কার দিয়েছে। ২০১১ সালে এই পুরস্কার পান তিনি।

বলবন্ত এশিয়ার অন্যতম যাঁকে টেক্সাসের দ্য ইনস্টিটিউট অব জেনারেল সিমেনটিকস্ পুরস্কার দিয়েছে। ২০১১ সালে এই পুরস্কার পান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy