লালকৃষ্ণ আদবাণী।
রামমন্দির আন্দোলনের প্রধান কান্ডারি ছিলেন তিনি। সে সময়ে রামমন্দির নির্মাণে দেশব্যাপী রথযাত্রা কর্মসূচির অন্যতম সারথি ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। আজ সেই নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্বের দ্বিতীয় পর্বে রামমন্দির নির্মাণের পথ প্রশস্ত করল সুপ্রিম কোর্ট।
লালকৃষ্ণ আডবাণী একাধিক বার ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছিলেন, তাঁর আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল রামমন্দির নির্মাণের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী, শান্তিপূর্ণ দেশ গঠন করা। যেখানে সামিল হবেন সকলে। বাদ যাবেন না কেউই। কিন্তু সিকি শতাব্দী পরেও আজ বাবরি মসজিদ ধ্বংসের স্মৃতি তাড়িয়ে বেড়ায় তাঁকে। ঘনিষ্ঠ মহলে একাধিক বার আক্ষেপ প্রকাশ করে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ওই আন্দোলন এক সময়ে লাগামছাড়া হয়ে পড়ে। আন্দোলনের উপরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন নেতৃত্ব। আজ সুপ্রিম কোর্ট সকালেই রায় দিলেও সন্ধ্যার মুখে একটি বিবৃতি দিয়ে মুখ খোলেন আডবাণী। তিনি বলেন, ‘‘এত দিনে আমার অবস্থানের স্বীকৃতি মিলল। আমি যা চেয়েছিলাম শেষ পর্যন্ত তা হয়েছে। আদালত সর্বসম্মত ভাবে যে রায় দিয়েছে তাতে রামমন্দির নির্মাণের রাস্তা প্রশস্ত হল। রামমন্দির নির্মাণের জন্য জন আন্দোলনে শরিক হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। সে জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।’’
গত কাল জন্মদিন ছিল আডবাণীর। বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে গিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। আর আজ রায় আসার পরেই আডবাণীর বাড়িতে ছুটে যান রাম জন্মভূমি আন্দোলনের অন্যতম মুখ উমা ভারতী। বাড়ি গিয়েই সটান আডবাণীর পায়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন উমা। পরে বলেন, ‘‘রাম মন্দির আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি ছিলেন আডবাণী। রাম মন্দিরের পাশাপাশি ছদ্ম ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে প্রথম সংসদে সরব হয়েছিলেন তিনি। ছদ্ম ধর্মনিরপেক্ষতা কতটা ক্ষতিকর তা প্রথম দেশের সামনে তুলে ধরেছিলেন।’’ উমার দাবি, মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার ভিত গড়ে দিয়েছিল আডবাণীর রামমন্দির আন্দোলন। তাঁর বিরুদ্ধে মসজিদ ভাঙার যে অভিযোগ রয়েছে তা নিয়ে অবশ্য বিন্দুমাত্র দুঃখ নেই উমার। তিনি বলেন, ‘‘যে কোন ধরনের শাস্তির মুখোমুখি হতে রাজি আছি।’’
আডবাণী-উমার মতো সে সময়ে রাম জন্মভূমি আন্দোলনের আর এক প্রথম সারির নেতা ছিলেন মুরলীমনোহর জোশী। বর্তমানে আডবাণী-উমার মতো পিছনের সারিতে চলে যাওয়া জোশীও আদালতের সিদ্ধান্তে খুশি। আজ তিনি বলেন, ‘‘রায়ে সবাই খুশি। সবাইয়ের উচিত খোলা মনে ওই সিদ্ধান্তকে গ্রহণ করা। আশা করব এই সিদ্ধান্ত দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করবে। সকলকে সঙ্গে নিয়ে যাতে মন্দির গড়ে ওঠে তা খেয়াল রাখতে হবে ট্রাস্টকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy