লোকসভায় রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
তিনি লোকসভায় যা বলেছেন, তার মধ্যে কোনও অসত্য কিছু নেই। ‘হিন্দুত্ব’, নিট এবং অগ্নিপথ প্রকল্প প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য নিয়ে শাসকজোটের শোরগোলের পরই মঙ্গলবার তার পাল্টা জবাব দিয়েছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। সংসদে ঢোকার আগে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “মোদীজির জমানায় সত্যের কণ্ঠরোধ করা হয়। কিন্তু বাস্তবে সত্যকে চাপা দিয়ে রাখা যায় না। তারা যত খুশি কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করুক না কেন, আমার যা বলার, তা-ই বলেছি। সত্যিটা সত্যিই।”
ঘটনাচক্রে, হিন্দু, নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি এবং আরএসএস নিয়ে রাহুল যে মন্তব্য করেছিলেন, স্পিকার ওম বিড়লার নির্দেশে তা সংসদের কার্যবিবরণী থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, শিল্পপতি আদানি, অম্বানী এবং অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে যে মন্তব্য করেছিলেন, সেগুলিও কার্যবিবরণী থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর মন্তব্য কেন বাদ দেওয়া হল তা নিয়েও মঙ্গলবার প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল। তাঁর মন্তব্য বাদ দেওয়াকে সংসদীয় গণতন্ত্রের বিরোধী বলেও তোপ দেগেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা। তার পরই তিনি স্পিকারকে চিঠি লিখে সেই মন্তব্য কার্যবিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানিয়েছেন।
সোমবার বিরোধী দলনেতা রাহুলের ‘হিন্দু’ মন্তব্যের জেরে উত্তাল হয় লোকসভা। রাষ্ট্রপতির প্রারম্ভিক ভাষণ নিয়ে আলোচনায় বক্তৃতা করছিলেন রাহুল। সেই সময় শাসকজোটের সাংসদদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “যাঁরা নিজেদের হিন্দু বলেন, তাঁরা কেবল হিংসার কথা বলেন, ঘৃণার কথা এবং অসত্য কথা বলেন।”
তার পরই ট্রেজ়ারি বেঞ্চ থেকে হইচই শুরু হয়ে যায়। রাহুলকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তোলেন বিজেপি সাংসদেরা। এমনকি রাহুলের বক্তব্যের মাঝেই নিজের আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “গোটা হিন্দু সম্প্রদায়কে হিংসাশ্রয়ী বলে দেগে দেওয়া খুবই বিপজ্জনক।” সোমবার সংসদে নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপি-আরএসএসের প্রধান অস্ত্র ‘হিন্দুত্ব’কে নিশানা করেন রাহুল। তাঁর হাতে ছিল শিবের একটি ছবি। সেই ছবি বার বার দেখিয়ে রাহুল বলেছিলেন, “হিন্দু ধর্ম বলে, ভয় পেয়ো না। ভয় দেখিয়ো না। শিব এই ভাবনার প্রতীক। তাই তাঁর গলায় সাপ জড়ানো। ডান হাতে নয়, বাঁ দিকে পিঠের পিছনে মাটিতে ত্রিশূল পোঁতা।” তার পরই বিজেপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, “যাঁরা নিজেদের হিন্দু বলে, তাঁরা ২৪ ঘণ্টা হিংসা, ঘৃণা আর অসত্য অসত্য করছেন।” রাহুলের এই মন্তব্যের ঘোর বিরোধিতা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাহুলকে ক্ষমা চাইতে বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁকে আক্রমণ করতে গিয়ে কংগ্রেস আমলের জরুরি অবস্থা এবং শিখ-বিরোধী হিংসার প্রসঙ্গও তোলেন শাহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy