Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Assam

মেয়ের আত্মা ঘুরে বেড়াচ্ছে! ‘শাপমুক্তি’-র জন্য ৩ বছরের শিশুকে বলির চেষ্টা শিক্ষক পরিবারের

পুলিশ জানিয়েছে, বিজ্ঞানের শিক্ষক যাদব শহরিয়া, তাঁর স্ত্রী, ছেলে, দুই শ্যালক, দুই শ্যালিকা, তাঁদের ছেলে-সহ ৮ জন শনিবার বেলা ১২টা নাগাদ প্রথমে নগ্ন হয়ে পুজোয় বসেন।

যাদব শহরিরয়ার বাড়িতে পুলিশ পৌঁছতেই তাঁদের লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোড়েন পরিবারের সদস্যরা। ছবি সৌজন্য: অসমিয়া প্রতিদিন।

যাদব শহরিরয়ার বাড়িতে পুলিশ পৌঁছতেই তাঁদের লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোড়েন পরিবারের সদস্যরা। ছবি সৌজন্য: অসমিয়া প্রতিদিন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৯ ১৩:২০
Share: Save:

মেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার দোষ কাটাতে আত্মীয়ের ছেলেকে বলি দিতে উদ্যোগী হয়েছিল অসমের এক শিক্ষক পরিবার! অসমের ওদালগুড়ি জেলার কলাইগাঁওয়ের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, রৌতার লালবাহাদুর শাস্ত্রী মেমোরিয়াল হাইস্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষক যাদব শহরিয়া।

গ্রামবাসীরা জানান, অনেক ক্ষণ ধরেই বাড়ির ভিতর থেকে পুজো, মন্ত্রোচ্চারণের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলেন। ধোঁয়াও বেরোতে দেখেন। যজ্ঞ চলছিল যে সেটাও স্পষ্ট বুঝতে পারছিলেন তাঁরা। বাড়িতে জাঁকজমক করে পুজো হচ্ছে অথচ পাড়ার কেউই আমন্ত্রিত নন! বিষয়টায় একটু খটকাই লেগেছিল পড়শিদের। তাঁদেরই কয়েকজন কৌতুহলবশত বাড়ির ভিতরে উঁকি মারতেই চমকে ওঠেন। ঘরের মাঝখানে যজ্ঞের আগুন জ্বলছে। আর সেটাকে ঘিরে নগ্ন অবস্থায় বসে রয়েছেন পরিবারের সদস্যরা! ওই শিক্ষক জোরে জোরে মন্ত্র পড়ছিলেন। তাঁর হাতে ধরা ছিল ধারালো একটা অস্ত্র। একটু দূরেই শোয়ানো ছিল বছর তিনেকের একটি শিশু। পড়শিদের তখনই সন্দেহ হয় শিশুবলির আয়োজন চলছে ওই বাড়িতে। সঙ্গে সঙ্গে অন্য গ্রামবাসী ও পুলিশে খবর দেন তাঁরা।

পুলিশ আসতেই তাদের উপর ধারালো অস্ত্র, ইট, পাথর নিয়ে আক্রমণ করে শহরিয়া পরিবারের সদস্যরা। আক্রমণ করা হয় গ্রামবাসীদেরও। জেলাশাসক দিলীপকুমার দাস জানান, আগুন দেখে গ্রামের মানুষ চলে আসেন। বলি দিতে যাওয়া বাচ্চাটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালান তাঁরা। তখন শহরিয়া পরিবার ধারালো অস্ত্র, ইট-পাথর নিয়ে গ্রামবাসীদের আক্রমণ করে। খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া দুই সাংবাদিকও জখম হন। পুলিশ এলে পুলিশকেও আক্রমণ করেন পরিবারের সদস্যরা। বাধ্য হয়ে পুলিশ শূন্যে গুলি চালায়। তখনই জখম হন যাদববাবু ও তার ছেলে। তাঁদের পায়ে গুলি লাগে। বাচ্চাটিকে উদ্ধার করা হয়।

আরও পড়ুন: ৩৩ হাজার বছর আগে ইতিহাসের প্রথম জানা খুনের রহস্যভেদ!

আরও পড়ুন: মণিপুরে জঙ্গিদের গোপন ডেরা গুঁড়িয়ে দিল সেনা, উদ্ধার প্রচুর অস্ত্র

পুলিশ জানিয়েছে, বিজ্ঞানের শিক্ষক যাদব শহরিয়া, তাঁর স্ত্রী, ছেলে, দুই শ্যালক, দুই শ্যালিকা, তাঁদের ছেলে-সহ ৮ জন শনিবার বেলা ১২টা নাগাদ প্রথমে নগ্ন হয়ে পুজোয় বসেন। তার পর সকলে মিলে নিজেদের ঘরবাড়ি, মোটরসাইকেলে আগুন লাগিয়ে দেন। এর পর নগ্ন হয়ে পরিবারের নারী-পুরুষ সদস্যরা মিলে তাণ্ডব নৃত্য করেন। পুজোর শেষে শ্যালিকার ৩ বছরের ছেলেকে বলি দিতে উদ্যোগী হন যাদববাবু। পরিবারের দাবি, যাদববাবুর মেয়ে অশুভ শক্তির কবলে পড়ে চার বছর আগে আত্মঘাতী হয়। পরিবারের বিশ্বাস, মেয়ের আত্মা ঘরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর সে কারণেই যাদববাবুর স্ত্রী পূর্ণকান্তি শহরিয়া গত দু’বছর ধরে অস্বাভাবিক আচরণ করছেন। শিশুবলি দিয়ে পুজো না করলে শাপমুক্তি ঘটবে না। জানা যায়, বানেইরকুচির রমেশ শহরিয়া নামে এক তান্ত্রিক শহরিয়া পরিবারকে নগ্ন হয়ে পুজো ও শিশুবলির বিধান দিয়েছিলেন। তার পরই এমন উদ্যোগ নেয় শহরিয়া পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে, আটক করা হয়েছে শহরিয়া পরিবারের সদস্যদের এবং তান্ত্রিককে।

অন্য বিষয়গুলি:

Assam Child Sacrifice Police Crime অসম শিশুবলি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy