এনসিবি কর্তা সমীর ওয়াংখেড়েকে কড়া হুঁশিয়ারি মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা নবাব মালিকের। ফাইল চিত্র।
মাদক কাণ্ডে আরিয়ান খান ধরা পড়ার পর থেকেই তিনি বার বার দাবি করেছেন, শাহরুখ-পুত্রকে ফাঁসানো হয়েছে। এর জন্য অভিযোগের আঙুল তুলেছেন নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) এবং এনসিবি কর্তা সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে। আবারও একই দাবি করলেন এনসিপি নেতা তথা মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক। শুধু তাই নয়, এ বার হুঁশিয়ারির ঢঙে ভবিষ্যদ্বাণীও করলেন যে, ওয়াংখেড়ে তাঁর চাকরি খোয়াবেন। সর্বভারতীয় এক সাংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই দাবি করলেন এনসিপি নেতা।
হঠাৎ এমন হুঁশিয়ারি কেন? তা হলে কি ব্যক্তিগত কোনও আক্রোশ কাজ করছে এখানে? বিষয়টি কতটা সত্যি? মালিক বিষয়টি ব্যক্তিগত আক্রোশ বলতে নারাজ। তাঁর কথায়, “এটা ব্যক্তিগত লড়াই নয়। আন্তঃরাজ্য এবং আন্তর্জাতিক মাদক চক্র ধরাই এনসিবি-র কাজ। সামান্য পরিমাণ মাদক সংক্রান্ত বিষয়গুলি দেখা পুলিশের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে। এনসিবি গত ৩৫ বছরে এ ধরনের কাজ করেনি।”
মালিকের অভিযোগ, এই খেলা শুরু হয়েছে অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীর মামলাকে ঘিরে। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা ছিল। হাই কোর্টও রিয়াকে বেকসুর খালাস করেছে। তার পরই হঠাৎ করে দেখা গেল বলিউডের বেশ কয়েক জনকে এ বিষয়ে ডাকা হল। সেই তালিকায় ছিলেন ২৫ জন। কিন্তু কেন তাঁদের ডাকা হল তার কোনও চার্জশিটও ছিল না, দাবি করেছেন এনসিপি নেতা।
তাঁর কথায়, “এনসিবি এগুলিকে খোলা মামলা হিসেবে ব্যবহার করেছে এবং তাদের ইচ্ছামতো তলব করেছে। মাদকাসক্তদের রিহ্যাবে পাঠানো উচিত। যদি কেউ মাদক নিয়েই থাকেন, তা হলে তাঁর পরীক্ষা করানো হোক। প্রমাণিত হলে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। কিন্তু এনসিবি এ ধরনের কাজ করে মানুষের মধ্যে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।”
মালিকের জামাইও মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে এনসিবি কর্তা ওয়াংখেড়েই সেই মামলার তদন্ত করছিলেন। সেই ঘটনার রেশ টেনে সমীরের উপর কি ‘বদলা’ নিতে চাইছেন মালিক? এনসিপি নেতার দাবি, তাঁর জামাইয়ের ঘটনার সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। আরিয়ানের ঘটনায় অবিচার করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, “যখন আমার জামাই গ্রেফতার হয়েছিল তখন বলেছিলাম আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। বিচারবিভাগ এই মামলার সিদ্ধান্ত নেবে।” গ্রেফতার হওয়ার আট মাস পরই জামিনে ছাড়া পান মালিকের জামাই। এ প্রসঙ্গে এনসিপি নেতা বলেন, “তখনও বলেছিলাম জামাইকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। কোনও কিছুই পাওয়া যায়নি তাঁর কাছ থেকে। তার পর থেকেই সব কিছুর উপর নজর ছিল আমাদের।” মালিক ফের প্রমোদতরীতে দুই ব্যক্তির প্রসঙ্গ তোলেন। ওই দুই ব্যক্তিকে কেন দেখা গিয়েছিল প্রমোদতরীতে এনসিবি-র তল্লাশি অভিযানের সময়, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণও হাতে রয়েছে বলে দাবি মালিকের। ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত করা হবে। তখনই ঘুষচক্রের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসবে। ঘটনাচক্রে, ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে এই মামলায় ঘুষ ২৫ কোটি ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও তিনি সেই অভিযোগকে সরাসরি খারিজ করে পাল্টা দাবি করেছেন, তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চক্রান্ত চলছে। তবে এনসিপি নেতার দাবি, এনসিবি-র পঞ্চনামাতেই ঘুষের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর এতেই স্পষ্ট যে তাঁরা যা বলছেন সেটা সঠিক।
ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে জাতির শংসাপত্র নিয়েও অভিযোগ তুলেছেন মালিক। তাঁর দাবি, জাতির ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে এই চাকরি পেয়েছেন ওয়াংখেড়ে। এটা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত। আবার হিন্দু-মুসলিম তত্ত্বও উঠে আসছে এই মামলাকে ঘিরে। যদিও মালিক সেই তত্ত্বকে খারিজ করেছেন। তাঁর দাবি, এই তত্ত্ব পুরোপুরি ভুয়ো। বিজেপি-ই এই ধরনের তত্ত্বকে চারিয়ে দিতে চাইছে। তাঁর কথায়, “যদি কোনও দলিত মুসলিম বা খ্রিস্টান ধর্ম নেন, তা হলে তিনি সংরক্ষণের সুবিধা নিতে পারেন না। এর একটা আইন আছে। ওয়াংখেড়েরা মুসলিম ছিলেন। এবং ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে এই চাকরি পেয়েছেন। আমরা প্রমাণ করেই ছাড়ব যে ওয়াংখেড়ে এক জন দলিতের অধিকার হরণ করেছেন। এই চাকরি ওঁকে খোয়াতে হবে, প্রতিজ্ঞা করছি।” তবে এটা কোনও ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে লড়াই নয়। যেখানে অন্যায় দেখবেন সেখানেই তিনি লড়াই করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মালিক।
একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে যে সব তথ্য তিনি জমা দিয়েছেন যদি সেগুলি ভুয়ো হয়, তা হলে তিনি ইস্তফা দেবেন। সবে শেষে ফের তিনি দাবি করেন, তাঁর জামাইকে যে ভাবে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছিল, আরিয়ানকেও একই ভাবে ফাঁসানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy