Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

তিন দিকে বিপদ, গভীর সঙ্কটে অরবিন্দের দল

একেবারে ত্র্যহস্পর্শ।এক দিকে আম আদমি পার্টির ২১ জন বিধায়কের পদ খোয়াবার আশঙ্কা। অন্য দিকে ডেঙ্গি-চিকুনগুনিয়ায় ত্রস্ত দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রী ও উপ-মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতি ঘিরে রাজনীতি।

অরবিন্দ কেজরীবাল

অরবিন্দ কেজরীবাল

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৫৯
Share: Save:

একেবারে ত্র্যহস্পর্শ।

এক দিকে আম আদমি পার্টির ২১ জন বিধায়কের পদ খোয়াবার আশঙ্কা। অন্য দিকে ডেঙ্গি-চিকুনগুনিয়ায় ত্রস্ত দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রী ও উপ-মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতি ঘিরে রাজনীতি। আবার অন্য রাজ্যের সংবাদপত্রে দিল্লি সরকারের বিজ্ঞাপনে আপের কৃতিত্ব প্রচার হওয়ায় ফ্যাসাদে পড়ে গিয়েছেন অরবিন্দ কেজরীবালরা। বিজ্ঞাপনের জন্য খরচ হওয়া টাকা সরকারি কোষাগারে আম আদমি পার্টিকেই ফিরিয়ে দিতে হবে বলে নির্দেশ জারি হয়েছে। চার দিক থেকে নানা আক্রমণে এখন কার্যত কোণঠাসা আপ শিবির।

গোটা দিল্লিই এখন মশাবাহিত রোগের কবলে। ফি দিন বাড়ছে রুগির সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে কাশি সারাতে বেঙ্গালুরুতে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। আর উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া সরকারি কাজে ফিনল্যান্ডে। কার্যত মাথাহীন প্রশাসন দেখে গত কালই দিল্লির উপ-রাজ্যপাল নজীব জঙ্গ মণীশ সিসৌদিয়াকে দ্রুত দেশে ফেরার তলব করায় অস্বস্তিতে পড়ে যায় আম আদমি শিবির।

তাই আজ রাজনৈতিক ভাবে পাল্টা আক্রমণে নামেন দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন ও বিধায়ক কপিল মিশ্র। দু’জন আজ সকালে রাজধানীর ডেঙ্গি ও চিকুনগুনিয়ার সর্বশেষ পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে পৌঁছে যান জঙ্গের দফতরে। কিন্তু আগে থেকে অনুমতি না নেওয়ায় জঙ্গের সঙ্গে দেখা হয়নি দুই আপ নেতার। এর পরেই শুরু হয় জঙ্গের বিরুদ্ধে আপের আক্রমণ। সত্যেন্দ্র জৈনের বক্তব্য, ‘‘জঙ্গের দফতর থেকে জানানো হয়, শনি-রবিবার ছুটি থাকার কারণে তিনি আসবেন না। যদিও আমাদের কিন্তু কোনও ছুটি নেই।’’

আপ শিবির অভিযোগ করে, বিজেপির প্ররোচনাতেই জঙ্গ পরিকল্পিত ভাবে শাসক শিবিরকে অপদস্থ করতে মণীশ সিসৌদিয়াকে তলব করেছেন। যদিও রাজ্য বিজেপি সভাপতি সতীশ উপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী, উপ-মুখ্যমন্ত্রী দু’জনেই বাইরে। এর থেকেই স্পষ্ট দিল্লির মানুষের বিষয়ে কোনও চিন্তাই নেই এই সরকারের।’’

মশাদের মতোই আপ শিবিরকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। লাভজনক পদ বিতর্কে ২১ জন আপ বিধায়ক নিজেদের পদ বাঁচাতে পারবেন কিনা তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে দলের মধ্যেই। দিল্লিতে ক্ষমতায় এসেই দলের ২১ জন বিধায়ককে বিভিন্ন দফতরের রাজনৈতিক সচিবের পদ দিয়েছিলেন কেজরীবাল সরকার। ওই সচিবদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা দিতে একটি বিল কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হলে রাষ্ট্রপতি তা ফেরত পাঠিয়ে দেন। অভিযোগ ওঠে আপ বিধায়করা একসঙ্গে দুই জায়গা থেকে সরকারি সুবিধে নিচ্ছেন। বিষয়টি যায় নির্বাচন কমিশনে। শুনানিতে আপ বিধায়কেরা দাবি করেন, তাঁরা সচিব হিসাবে কোনও সুবিধে নেননি। কিন্তু গতকাল তাঁদের ওই যুক্তি খারিজ করে দেয় কমিশন। পরবর্তী শুনানি আগামী সপ্তাহে। সেখানেও যদি বিধায়কদের যুক্তি খারিজ হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে তাঁদের বিধায়ক পদ নিয়ে টানাটানি হতে পারে।

এরই মধ্যে সমস্যা বাড়িয়েছে বি বি টন্ডন কমিটির রিপোর্ট। যাতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন রাজ্যের সংবাদপত্রে দিল্লি সরকারের বর্ষপূর্তিতে একাধিক বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। সে জন্য সরকারের কোষাগার থেকে টাকা খরচ হলেও, বিজ্ঞাপনে সরকারের কাজকে আপের সাফল্য হিসেবে তুলে ধরা হয়। কমিটির মতে, এ কাজ সুপ্রিম কোর্টের আদেশের বিরোধী। তাই কমিটি সুপারিশে জানিয়েছে, বিভিন্ন সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিতে দিল্লি সরকারের যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়েছে সেই টাকা ফেরত দিতে হবে আম আদমি পার্টিকেই। এ ছাড়া যাঁদের নির্দেশে ওই ধরনের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে ওই কমিটি।

সুযোগ বুঝে আপ নেতৃত্বকে আক্রমণ শানিয়ে কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন বলেন, ‘‘রাজধানীর স্কুলের বেতন কমানোর বিজ্ঞাপন কেন তামিলনাড়ুর সংবাদপত্রে প্রথম পাতার বিজ্ঞাপন হবে? দিল্লির মানুষের করের টাকায় কেন ওই বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে তা নিয়ে জবাব দিতে হবে কেজরীবালদের।’’

অন্য বিষয়গুলি:

AAP Arvind kejriwal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy