সুনসান: রাস্তায় রাস্তায় প্রহরা পুলিশের। মঙ্গলবার শ্রীনগরে। ছবি: পিটিআই
ইদের দিন নিরাপত্তা কিছুটা শিথিল করা হয়েছিল, কিন্তু মহরমে কার্যত থমথমে কাশ্মীর। পথে তাজিয়া নেই, রয়েছে ভারী বুটের শব্দ, নিরাপত্তার ব্যারিকেড। প্রশাসনের বক্তব্য, জম্মু-কাশ্মীরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে উপত্যকায় মহরমের মিছিলের অনুমতি দেওয়া হয়নি। যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহের দাবি, কাশ্মীরে কার্ফু জারি হয়নি। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কিছু জায়গায় বিধিনিষেধ ছিল মাত্র। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পর এটাই ছিল প্রথম মহরম।
স্থানীয়দের মতে, নব্বইয়ের দশকে অশান্ত সময়ে ও তার পরেও মহরমের দিন উপত্যকায় জনশূন্য রাস্তা দেখা যায়নি। কিন্তু আজ অ্যাম্বুল্যান্স ছাড়া কোনও গাড়ির পথে নামার অনুমতি ছিল না। প্রয়োজনে যাঁরা বাইরে বেরিয়েছেন, তাঁদের পরিচয়পত্র দেখতে চেয়েছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। অনন্তনাগ, কুলগাম, পুলওয়ামা, সোপিয়ান, কুপওয়ারা, বারামুলা-সহ একাধিক জেলায় নতুন করে কার্ফুর মতো বিধিনিষেধ জারি হয়। শ্রীনগরের সুনসান রাস্তা পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীতে ছয়লাপ ছিল। ওল্ড শ্রীনগরের বাসিন্দা, চিত্র সাংবাদিক মহম্মদ মকবুল বলেন, ‘‘ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ পুলিশ কার্ফুর কথা মাইকে ঘোষণা করেছে। রাস্তায় বার হতেও নিষেধ করা হয়।’’
মহরমে প্রস্তুতি হিসেবে রাস্তার ধারে কালো পতাকা টাঙানো হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাজিয়া বার করার অনুমতি মেলেনি। শ্রীনগর মিউনিসিপ্যাল কমিটির সদস্য তনবীর পঠানের অভিযোগ, ‘‘গলিতে মিছিল বার করেছিলাম। নিরাপত্তা বাহিনী পাহারায় ছিল। আচমকা তারা কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ছর্রা ছুড়তে থাকে।’’
এ দিকে, সংবাদ সংস্থা এপি এক রিপোর্টে উপত্যকার বাসিন্দাদের উপর নিরাপত্তা বাহিনীর অত্যাচারের অভিযোগ এনেছে। কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ২০০ জনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে লেখা রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাতে নিরাপত্তা বাহিনী বাড়িতে ঢুকে যুবকদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে, বেধড়ক পেটাচ্ছে এমনকি, বৈদ্যুতিক শক দিয়েছে। এমন বেশ কয়েক জনের কথা রিপোর্টে রয়েছে। বশির আহমেদ নামে এক প্রৌঢ় জানিয়েছেন, তাঁর ভাই জঙ্গিদের দলে যোগ দেওয়ায় সেনা তাঁকে ১০ অগস্ট তুলে নিয়ে গিয়েছিল। ভাইয়ের খবর জানতে তাঁকে এমন পেটানো হয় যে তিনি জ্ঞান হারান। তাতেও শেষ হয়নি। পরে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে সেনাবাহিনী খাবারে কেরোসিন মিশিয়ে দেয়। এ ছাড়া, নোংরা জল খেতে বাধ্য করা, খাবার নষ্ট করে দেওয়া, রাস্তায় ফেলে লাঠি দিয়ে তিন ঘণ্টা ধরে পিটুনির কথাও জানিয়েছেন বেশ কয়েক জন। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রাজেশ কালিয়া সব অভিযোগ খারিজ করে জানান, তাঁরা কখনও মানবাধিকার লঙ্ঘন করেননি। দেশবিরোধী কাজ করায় কয়েক জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে মাত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy