শ্মীরে কর্মরত ভারতীয় সেনা জওয়ান হাবিলদার প্রভাকরণ। —ফাইল চিত্র।
স্ত্রীকে অর্ধনগ্ন করে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ তুলেছিলেন কাশ্মীরে কর্মরত ভারতীয় সেনা জওয়ান হাবিলদার প্রভাকরণ। প্রভাকরণের অভিযোগের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরেই পদক্ষেপ করেছিল সেনাবাহিনী। কিন্তু এ বার ওই জওয়ানের অভিযোগের সত্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল। সৌজন্যে একটি অডিয়ো রেকর্ডিং। ওই অডিয়োয় শোনা যাচ্ছে, বন্ধুকে ফোনে বিষয়টি কী ভাবে সামলাতে হবে, তার নির্দেশ দিচ্ছেন ওই সেনা জওয়ান। তিনি যে ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনে তামিলনাড়ুর রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় বইয়ে দিয়েছেন, ফোনে সে কথাও বন্ধুকে জানান প্রভাকরণ। যদিও আনন্দবাজার অনলাইন এই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি।
প্রভাকরণ তাঁর বন্ধুকে বলেন, “আমার ছড়ানো ভিডিয়ো বিজেপি-সহ তামিলনাড়ুর সব দলের কাছে পৌঁছে গিয়েছে।” একই সঙ্গে তিনি তাঁর বন্ধুকে জানান, তামিলনাড়ুর বহু মন্ত্রী, রাজনীতিক এবং মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের আধিকারিকেরা তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রভাকরণের ফোনের এই অডিও রেকর্ডিং খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
সম্প্রতি টুইটারে লেফটেন্যান্ট কর্নেল এন থিয়াগারাজন নামে একটি হ্যান্ডলে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়। সেই ভিডিয়োয় রয়েছেন প্রভাকরণও। তাঁর আসল বাড়ি তামিলনাড়ুর পাদাভেদু গ্রামে। বর্তমানে কর্মসূত্রে তাঁকে থাকতে হয় কাশ্মীরে। ভিডিয়োয় প্রভাকরণকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমার স্ত্রী ভাড়ায় একটি দোকান চালান। তাঁকে ১২০ জন মিলে মারধর করেছে, দোকানের জিনিসপত্র বাইরে রাস্তায় ছুড়ে ফেলা হয়েছে। আমি পুলিশ সুপার সাহেবকে অভিযোগ জানিয়েছি। তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন। ডিজিপি স্যর প্লিজ আমাকে সাহায্য করুন। ওরা হামলা করছে, আমার পরিবারকে চাকু দেখিয়ে ভয় পাওয়ানো হচ্ছে। আমার স্ত্রীকে অর্ধনগ্ন করে নৃশংস ভাবে মারধর করা হয়েছে।’’ এই ভিডিয়োর সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
যদিও কান্ধাভাসালের পুলিশ ওই জওয়ানের অভিযোগকে অতিরঞ্জিত বলে দাবি করে। পুলিশ সূত্রে বলা হয়, বিষয়টি ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে পরিবেশন করা হচ্ছে। তেমন গুরুতর কিছুই হয়নি। পুলিশ সূত্রে খবর, গোলমালের সূত্রপাত দোকানের দখলদারি ঘিরে। রেনুগাম্বাল মন্দিরের জমিতে একটি দোকান রয়েছে। জনৈক কুমারের কাছ থেকে সেই দোকানটি প্রভাকরণের শ্বশুরমশাই সেলভামূর্তি পাঁচ বছরের লিজে নিয়েছিলেন সাড়ে ৯ লক্ষ টাকার বিনিময়ে। কুমারের মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে রামু দোকানটি ফেরত চান। সেলভামূর্তিকে রামু জানান, এ জন্য যে অর্থ লিজ বাবদ তাঁরা পেয়েছিলেন, তা ফিরিয়ে দেবেন। এ নিয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি দু’তরফের মধ্যে লিখিত চুক্তিও হয়। কিন্তু রামুর অভিযোগ, সেলভামূর্তি শেষ মুহূর্তে মন বদলান এবং টাকা ফেরত নিতে অস্বীকার করেন। জানিয়ে দেন, দোকান তিনিই চালাবেন।
অভিযোগ, গত ১০ জুন যখন রামু টাকা ফিরিয়ে দিতে এই দোকানে গিয়েছিলেন তখন তাঁকে মারধর করা হয়। এর পরেই রামুর পরিচিত লোকজন এসে দোকানে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। মারধর করা হয় দোকান সামলানো সেলভামূর্তির মেয়ে কীর্তি অর্থাৎ প্রভাকরণের স্ত্রীকে। রামুর যদিও দাবি, কীর্তির গায়ে হাত পড়েনি। সে দিন বিকেলে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় কীর্তিকে। দাবি করা হয়, মারধরে তিনি গুরুতর ভাবে আহত হয়েছেন। যদিও প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, মারধরের অভিযোগ মোটেই ঠিক নয়। কান্ধাভাসাল পুলিশ দু’তরফের বিরুদ্ধেই মামলা রুজু করেছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই লেগে গিয়েছে রাজনীতির রং। তামিলনাড়ু বিজেপির সভাপতি কে আন্নামালাই ঘোষণা করে দিয়েছেন, তাঁর দল সব রকম ভাবে সেনা জওয়ানের পাশে রয়েছে। তিনি ফোনে সেনা জওয়ানের সঙ্গেও কথা বলেন এবং সমস্ত রকম সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy