Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

কাশ্মীরে এ বার সংঘর্ষে জড়াল সেনা ও পুলিশ

গান্ধেরবাল জেলার গুন্দ এলাকার চেকপোস্টে রাতে পাহারা দিচ্ছিলেন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের কর্মীরা। সে সময়ে কয়েকটি ব্যক্তিগত গাড়িতে সাদা পোশাকে ২৪ নম্বর রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের জওয়ানেরা ওই চেকপোস্টে এসে পৌঁছন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীনগর ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৭ ০৪:৪৪
Share: Save:

জঙ্গি সমস্যায় জেরবার কাশ্মীরে এ বার নিজেদের মধ্যেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল সেনা এবং জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। সেনার রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের জওয়ানদের মারে আহত হয়েছেন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ছ’জন কর্মী। পাল্টা পদক্ষেপে এক ক্যাপ্টেন-সহ হামলাকারী সেনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে প্রশাসন। অমরনাথ যাত্রা চলাকালীন দুই বাহিনীর এই মারামারির ঘটনায় আখেরে কেন্দ্রেরই মুখ পুড়েছে বলে মনে করছে প্রশাসনের একাংশ। কারণ, উপত্যকায় বাহিনগুলির মধ্যে সমন্বয়ের প্রশ্নে যে কত বড় ফাঁক রয়েছে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে ওই ঘটনা। প্রশ্ন উঠেছে সেনার মনোভাব নিয়েও।

ঘটনার সূত্রপাত গতকাল রাতে। গান্ধেরবাল জেলার গুন্দ এলাকার চেকপোস্টে রাতে পাহারা দিচ্ছিলেন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের কর্মীরা। সে সময়ে কয়েকটি ব্যক্তিগত গাড়িতে সাদা পোশাকে ২৪ নম্বর রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের জওয়ানেরা ওই চেকপোস্টে এসে পৌঁছন। অমরনাথ থেকে ফেরার পথে বাসযাত্রীদের উপরে হামলার পর থেকে উপত্যকায় রাতে যানবাহন চলাচলে কড়াকড়ি শুরু করেছে প্রশাসন। স্বভাবতই সাধারণ পোশাকে থাকা ওই ব্যক্তিদের দেখে সন্দেহ হয় পাহারাদার পুলিশদের। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জওয়ানদের গাড়ি থামান পুলিশকর্মীরা। অভিযোগ, কেন তাদের আটকানো হয়েছে এই যুক্তিতে গাড়ি থেকে নেমে পুলিশকর্মীদের উপরে চড়াও হন জওয়ানেরা। স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে পুলিশকর্মীরা সে যাত্রায় বেঁচে যান। কিন্তু কিছু ক্ষণ পরে স্থানীয় শিবির থেকে আরও সেনা নিয়ে এসে একেবারে সোজা গুন্দ থানায় হামলা চালান জওয়ানেরা। ভাঙচুর চালানো হয়। মারধর করা হয় পুলিশকর্মীদের। জওয়ানদের মারে আহত ছয় পুলিশকর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। ওই ঘটনায় এক ক্যাপ্টেন ও তাঁর জওয়ানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় ওই থানাতেই।

আরও পড়ুন: ভারতীয় সেনার এত কম গোলাবারুদ? ক্যাগ রিপোর্ট ঘিরে উদ্বেগ

জঙ্গি দমন থেকে অমরনাথ যাত্রীদের সুরক্ষা দেওয়া, সব ক্ষেত্রেই হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করে থাকে রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। কেন্দ্রের একাংশের মতে, দুই বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের এই হাল হলে তার প্রভাব জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রে পড়তে বাধ্য। বিশেষ করে যেখানে স্থানীয় পুলিশের তথ্যের উপর নির্ভর করেই জঙ্গি দমনে নেমে থাকে সেনা।

তাছাড়া ওই সময়ে সেনাদের গাড়ি যে ওই রাস্তা দিয়ে যাবে সে বিষয়ে কারও কাছে কেন তথ্য ছিল না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের দাবি, সেনারা কখন কোথায় যাবে সেই বিষয়ে পুলিশকে কোনও আগাম খবর দেন না।

সমালোচনা শুরু হয়েছে সেনার বেপরোয়া মনোভাব নিয়েও। এ ক্ষেত্রে পুলিশকর্মীরা কোনও অন্যায় কাজ করেননি। নিয়মমাফিক অচেনা গাড়ি আটকেছিলেন। ওই গাড়িতে সেনার বদলে জঙ্গিও থাকতে পারত। নিয়ম মেনে কাজ করা সত্ত্বেও এই হেনস্থায় পুলিশের মধ্যে প্রবল ক্ষোভ ছড়িয়েছে। দ্রুত দুই বাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের বৈঠক করে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। আজ সেনা সূত্রে বলা হয়েছে, গতকাল রাতে সাদা পোশাকে থাকা রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের কিছু জওয়ানের সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের কিছু কর্মী বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। ঝামেলায় কেউ আহত হননি। দুই বাহিনীর শীর্ষ অফিসারদের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মিটে যায়। বিরোধীরা অবশ্য প্রশ্ন তুলতে ছাড়েননি। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার প্রশ্ন, ‘‘কেন এ ভাবে পুলিশের উপরে হামলা করা হল প্রশাসনের তা নিয়ে মুখ খোলা উচিত।’’

এ দিকে কাশ্মীরে ফের সংঘর্ষবিরতি ভাঙল পাকিস্তান। সেনা জানিয়েছে, শুক্রবার গভীর রাতে রাজৌরির নৌশেরা সেক্টরে হামলা চালায় পাক সেনা। জবাব দেয় ভারতীয় সেনাও। সংঘর্ষে এক জন জওয়ান আহত হন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy