নন্দিনীর সঙ্গে রাহুল। নন্দিনীর কাহিনি তিনি নেটমাধ্যমে শেয়ার করেছেন। ছবি: সংগৃহীত।
অ্যাপ ট্যাক্সি বুক করে রাস্তার ধারে অপেক্ষা করছিলেন রাহুল শশী। কিছু ক্ষণ পরেই তাঁর সামনে সেই ট্যাক্সি এসে দাঁড়াল। চালকের আসনে বসে এক জন মহিলা। রাহুল প্রথমে ঠিক বুঝতে পারেননি তাঁর বুক করা ট্যাক্সিই হাজির। এবং সেই চ্যাক্সির চালক এক জন মহিলা!
‘স্যর আসুন।’ মহিলা কণ্ঠ শুনে ট্যাক্সির ভিতর নজর ঘোরাতেই রাহুল দেখলেন, মহিলা একা নন, আরও এক জন ‘সওয়ারি’ সামনের আসনে রয়েছে। সেই সওয়ারি এক শিশুকন্যা। নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে। রাহুল বলেন, “ট্যাক্সিতে উঠে নিজের কৌতূহল চাপতে পারিনি। জিজ্ঞাসাই করে ফেললাম, ম্যাম, ও কি আপনার মেয়ে?”
গাড়ি চালাতে চালাতে সহাস্যে মহিলাচালক বললেন, “হ্যাঁ, স্যর। এখন ওর স্কুলে ছুটি চলছে। তাই ওকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়েছি। আমার গাড়ি চালানোও হচ্ছে, আবার মেয়েকে দেখাও হচ্ছে।” এই কথা শুনে রাহুলের কৌতূহল আরও বেড়ে গিয়েছিল। মহিলার সম্পর্কে জানতে উৎসুক হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
নেটমাধ্যমে রাহুলের শেয়ার করা এই ঘটনা থেকে জানা গিয়েছে, ওই মহিলাচালকের নাম নন্দিনী। বেঙ্গালুরুতে অ্যাপক্যাব চালান। দিনে ১২ ঘণ্টা কাজ করেন। তবে সময়ে পেলে আরও বেশ কিছু ক্ষণ কাজ করতেও তাঁর আপত্তি নেই। রাহুলকে নন্দিনী জানান, খাবার সরবরাহ করার একটি ব্যবসা ছিল তাঁর। সমস্ত সঞ্চয় দিয়ে সেই ব্যবসা শুরু করেছিলেন বছর কয়েক আগে। কিন্তু কোভিডের কারণে সেই ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে প্রায় পথে বসার মতো অবস্থা হয়েছিল তাঁর। কিন্তু পেট তো চালাতে হবে! তাই বাধ্য হয়েই অ্যাপ ট্যাক্সি চালানো শুরু করেন। এই কাজ করে যে টাকা আয় করছেন, তা দিয়েই আবার পুরনো ব্যবসাকে চালু করতে চান নন্দিনী।
নন্দিনীর জীবনকাহিনি এবং সংগ্রাম অনুপ্রাণিত করে রাহুলকে। নন্দিনীর অনুমতি নিয়ে সেই কাহিনি নেটমাধ্যমে শেয়ার করেছেন তিনি। যা ইতিমধ্যেই ভাইরাল। রাহুল বেঙ্গালুরুর বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি সংস্থার সিইও। তাঁর কথায়, “নন্দিনীর এই কাহিনি সত্যিই প্রেরণাদায়ক। যেখানে ব্যর্থ হয়ে অনেকেই হাল ছেড়ে দেন, সেখানে নন্দিনী একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠলেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy