ফাইল চিত্র।
কৃষক-স্বার্থ বলি দিয়ে স্রেফ ভোটের রাজনীতিতে ফায়দা তুলতে কেন্দ্রীয় সরকার তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিল বলে অভিযোগ আনলেন অনিল জে ঘনওয়ত। ওই তিন আইন পর্যালোচনা করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্ট যে তিন সদস্যের কমিটি গড়েছিল, শ্বেতকারী সংগঠনের প্রধান ঘনওয়ত ছিলেন তাঁর অন্যতম সদস্য। তাঁর আক্ষেপ, “কৃষক স্বার্থকে নয়, উত্তরপ্রদেশ-পঞ্জাবে ভোটে জিততে রাজনীতিকে প্রাধান্য দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এটা তাঁর সবচেয়ে বড় পশ্চাদপসরণ। কৃষক-কল্যণের বদলে রাজনীতিকেই বেছে নিলেন তিনি। এখন তো মনে হচ্ছে, সরকার আমাদের রিপোর্টটি পড়েই দেখেনি।”
ঘনওয়তের মতে, আইন তিনটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে আগামী দিনে কৃষি ব্যবস্থায় সংস্কারের পথ বন্ধ হয়ে গেল। তাঁদের কমিটির রিপোর্টে কি ছিল, তা সংবাদমাধ্যম, সরকার ও কৃষকদের অবশ্যই জানা প্রয়োজন। সে জন্য ওই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনার বিষয়ে আগামী সপ্তাহে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।
ঘনওয়তের দাবি, তিন মাস ধরে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সুপ্রিম কোর্ট গঠিত কমিটি যে রিপোর্ট তৈরি করেছিল, তা ছিল কৃষকদের স্বার্থে। আইন তিনটিতে বেশ কিছু সংশোধনের সুপারিশ রেখেছিল কমিটি। সেগুলি বাস্তবায়িত হলে কৃষকরা উপকৃত হতেন। কিন্তু আইন প্রত্যাহারের ফলে সে সব এখনকার মতো জলে গেল।
গত ১৯ মার্চ পেশ হওয়া ওই রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্ট এখনও প্রকাশ করেনি। গত ১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখে রিপোর্টটি প্রকাশের অনুরোধ জানিয়েছিলেন ঘনওয়ত। চিঠিতে যুক্তি দিয়েছিলেন, রিপোর্ট প্রকাশ্যে এলে, তার সুপারিশগুলি কৃষক আন্দোলন নিয়ে অচলাবস্থা কাটানোর পথ খুলে দেবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিন সদস্যের কমিটি রিপোর্টটি প্রকাশ করা নিয়ে আলোচনায় বসবে আগামী সোমবার। সেখানে নেওয়া সিদ্ধান্ত পছন্দ না হলে, আগামী সপ্তাহে ঘনওয়ত নিজেই রিপোর্টটি প্রকাশ করে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
ঘনওয়তের কথায়, “আইন তিনটি প্রত্যাহার করে নিলে ওই রিপোর্টের কোনও অর্থই থাকছে না।... সুপ্রিম কোর্ট তা প্রকাশ না করলে, আমিই সেটা করব। কারণ ওটা আস্তাকুঁড়ে ফেলে দেওয়ার জিনিস নয়। এটা হওয়াও উচিত নয়।” শ্বেতকারী সংগঠনের প্রধান ঘনওয়তের যুক্তি, “কমিটিতে যে তিন জন ছিলাম, তার মধ্যে বাকি দু’জনের কৃষির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁরা ছিলেন শিক্ষাবিদ ও পেশাজীবী। কিন্তু আমি কৃষকদের নেতা। কৃষকদের কথা আমাকে ভাবতেই হবে।”
কমিটির আর এক সদস্য ছিলেন কৃষি কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা কৃষি-অর্থনীতিবিদ অশোক গুলাটি। তিনি বলেছেন, “রিপোর্টটি প্রকাশ করা বা না-করাটা সুপ্রিম কোর্টের এক্তিয়ারে পড়ে। সরকার আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে ওই রিপোর্টের কাজ ফুরিয়েছে।”
যদিও রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনার পক্ষে ঘনওয়তের যুক্তি, কমিটি কৃষক স্বার্থে কী কী সুপারিশ করেছিল সে কথা কৃষকদের, সংবাদমাধ্যম ও সরকারের জানা দরকার। কারণ, ভবিষ্যতে নতুন কৃষি আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে এগুলি বিশেষ কাজে আসবে। এই সূত্রে শ্বেতকারী সংগঠনের প্রধান উল্লেখ করেন, এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার রাজনৈতিক কারণে মোদী সরকারের আনা কৃষি আইন তিনটির বিরোধিতা করছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রে কৃষিমন্ত্রী থাকাকালে তিনি নিজেই কৃষিতে অনুরূপ কিছু সংস্কার আনার চেষ্টা করেছিলেন। কৃষক সংগঠন হিসেবে ঘনওয়তরা মানুষকে এ সব নিয়ে আরও সচেতন করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy