—ফাইল চিত্র।
রোজকার মতো পেগাসাস, কৃষি আইন-সহ নানা বিষয়ে বিরোধীদের তুমুল বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে তখন। আর তারই মধ্যে কোনও আলোচনা ছাড়া লোকসভায় ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে গেল সাধারণ বিমা ব্যবসা (জাতীয়করণ) আইনের সংশোধনী বিল। যেখানে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থায় সরকারের হাতে বাধ্যতামূলক ভাবে অন্তত ৫১% অংশীদারি রাখার শর্ত তুলে নিয়ে বেসরকারিকরণের পথ তৈরি করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন অবশ্য বিল নিয়ে আলোচনা হতে না-পারার জন্য বিরোধীদের হট্টগোলের দোহাই দিয়েছেন। আর বিল পাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এ দিনের মতো মুলতুবি করে দেওয়া হয়েছে অধিবেশন।
এ দিনই খবর, রাষ্ট্রায়ত্ত দু’টি ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের জন্য বিল পাশ করানোর বিষয়টি আপাতত বছর খানেকের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সূত্রের দাবি, আইনগত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট এক সূত্র বলছে, বিমা-ব্যাঙ্ক দু’টি ক্ষেত্র নিয়ে একসঙ্গে বিরোধিতা সামলানোর ঝুঁকি নিতে চাইছে না সরকার।
এ দিন সংসদে নির্মলা বিল পাশ করনোর সময় বিরোধী দলের নেতা কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী তোপ দাগেন, বিরোধীদের সংসদে প্রতিবাদ করার অধিকার কেড়ে নিয়ে এই সরকার একের পর এক চালু আইনকে ভেঙে গুড়িয়ে দিচ্ছে। তাঁরা সব ক্ষেত্রেই আলোচনা চান। কিন্তু তা শুরু করতে হবে পেগাসাস দিয়ে। বিমা বিলের প্রতিবাদ করে তাঁর দাবি, ‘‘আমার সমস্ত শক্তি দিয়ে দেশ এবং সাধারণ মানুষের স্বার্থ বিরোধী এই সংশোধনী বিলটির বিরোধিতা করছি।’’
নির্মলার অবশ্য যুক্তি, বিরোধী সদস্যেরা যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তার জবাব দিতে চাইছিলেন তিনি। কিন্তু পারলেন না সংসদ কক্ষে বিশৃঙ্খলার জন্য। অধীরের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে উল্টে তিনি বিরোধীদেরই কাঠগড়ায় তোলেন সংসদ কক্ষে হট্টগোল করে আলোচনা এগোতে না-দেওয়ার জন্য। দাবি করেন, বিরোধীরা বিল নিয়ে কথা এড়াতে চাইছেন। কারণ ভয় পাচ্ছেন সত্যিটা বেরিয়ে আসবে। কোন সত্যি সেই ইঙ্গিত অবশ্য মেলেনি।
সম্প্রতি বিমার সংশোধনী বিলটির বিরেধিতা করে এবং বিষয়টি ফের ভেবে দেখার অনুরোধ জানিয়ে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রও নির্মলাকে চিঠি দিয়েছেন। বিমা সংস্থা বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে ক্ষোভে ফেটে পড়তে দেখা যাচ্ছে বিমা শিল্পের কর্মী এবং বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নগুলিকে। মোদী সরকারের অবশ্য এতে তেমন হেলদোল নেই। বাজেটে দু’টি ব্যাঙ্ক এবং একটি সাধারণ বিমা সংস্থা বেসরকারিকরণের কথা বললেও এবং সেই অনুযায়ী তুন বিলে প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত থাকলেও নির্মলা বলছেন, বেসরকারিকরণ সরকারের লক্ষ্য নয়। তাঁরা চান, রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থাগুলিকে পুঁজি পাওয়ার রাস্তা করে দিয়ে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামার যোগ্য করে তোলা।
সরকারি সূত্রের দাবি, এই অবস্থায় দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বিক্রির বিষয়টি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ, আইনি পরামর্শ নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, ব্যাঙ্ক নিয়ে এগোলেও যে প্রতিরোধ আসবে বিলক্ষণ জানে সরকার। ফলে বিমা ও ব্যাঙ্ক দু’টি নিয়ে বিরোধিতার ঝড় একসঙ্গে সামলানোর ঝুঁকি নিতে সাহস পাচ্ছে না তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy