দিল্লিতে বক্তব্য পেশ করছেন অমিত শাহ। ছবি পিটিআই।
ছিল সরকারি অনুষ্ঠান। তাই হয়ে উঠল রাজনৈতিক প্রচারের মঞ্চ। যে মঞ্চ থেকে দিল্লি নির্বাচনের প্রচারে নামলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
আজ ‘ইস্ট দিল্লি হাব’-এর শিলান্যাস অনুষ্ঠানে পূর্ব দিল্লির করকরডুমা গিয়েছিলেন অমিত। অনুষ্ঠানটি ছিল দিল্লি ডেভলপমেন্ট অথরিটির অধীনে প্রথম স্মার্ট শহর সংক্রান্ত। বক্তব্য রাখতে গিয়ে নয়া নাগরিকত্ব আইন ঘিরে আন্দোলনের বিষয়টি তোলেন তিনি। দিল্লিতে হওয়া ওই বিক্ষোভে হিংসা ছড়ানোর জন্য ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’-কে দায়ী করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এখানেই না থেমে সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে শাহ বলেন, ‘‘কংগ্রেসের মদতেই ওই গ্যাং দিল্লিতে হিংসা ছড়িয়েছে।’’ বছর ঘুরলেই ভোট দিল্লিতে। তাই মঞ্চ থেকে রাজনৈতিক প্রচার চালাতে পিছপা হননি শাহ। বলেন, ‘‘দিল্লিবাসীর উচিত কংগ্রেসকে শাস্তি দেওয়া। তাদের হারানো।’’ শাহের নিশানায় ছিলেন আর এক প্রতিপক্ষ অরবিন্দ কেজরীবালও। যা দেখেশুনে বিরোধী নেতারা বলছেন, সরকারি অনুষ্ঠান না রাজনৈতিক প্রচারের মঞ্চ— সেটাই গুলিয়ে যাচ্ছে। এ দিন তাঁর প্রথম টাউন হল সমাবেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবাল-ও। আপ সরকার কী কী কাজ করেছে, তুলে ধরেন তার খতিয়ান।
নয়া নাগরিকত্ব আইন ঘিরে দিল্লিতে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে মোদী সরকারকে। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তে ওই আইনের প্রতিবাদে পথে নেমেছেন ধর্ম-নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ। বিজেপি নেতৃত্ব ঘরোয়া মহলে স্বীকার করে নিয়েছেন, বিক্ষোভ যে এত প্রবল আকার নেবে, তা তাঁদের ধারণা ছিল না। বিশেষ করে দিল্লিতে। শুরুতে দল ভেবেছিল, মুসলিম সমাজ রাস্তায় নেমে অসন্তোষ দেখালে দিল্লিতে নির্বাচনের আগে হিন্দু ভোটের মেরুকরণ হবে। ভোটের বাক্সে ফায়দা হবে বিজেপির। কিন্তু বিক্ষোভ যে এত মারাত্মক ও সর্বগ্রাসী আকার নেবে তা ধারণা ছিল না খোদ দিল্লি পুলিশের। বিক্ষোভকারীদের থামাতে লাঠি-গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে।
গতকাল যুব সমাজকে গুজবে কান না-দেওয়া ও হিংসা না-ছড়ানোর আর্জি জানান প্রধানমন্ত্রী। আর আজ ওই গুজব ছড়িয়ে যুব সমাজকে বিভ্রান্ত করার জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করলেন অমিত শাহ। বললেন, ‘‘নয়া নাগরিকত্ব বিল যখন সংসদে আসে, তখন কেউ কোনও কথা বলেননি। এখন সংসদ শেষ হতেই তারা (বিরোধীরা) লোক ক্ষেপাতে শুরু করেছে।’’ এর আগে রবিবার রামলীলা ময়দানের জনসভা থেকে নরেন্দ্র মোদী দিল্লির গন্ডগোলের পিছনে কংগ্রেস ও শহুরে নকশালদের দায়ী করেছিলেন। আজ সেই সুরেই অমিত শাহ বলেন, ‘‘যাবতীয় গন্ডগোলের পিছনে রয়েছে কংগ্রেস ও টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং। দিল্লির গন্ডগোলের জন্য কংগ্রেসই দায়ী।’’ ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’ শব্দবন্ধটি প্রথম সামনে আসে বছর কয়েক আগে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিক্ষোভের সময়ে। বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবারের অভিযোগ ছিল সেই সময়ে সংসদ হামলাকারী আফজল গুরুর সমর্থনে সভার আয়োজন করেছিল ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’ বা যারা দেশকে ভাগ করতে সক্রিয় রয়েছে এমন শক্তি। সে সময়ে রাহুল গাঁধী এ ধরনের একটি সভায় যাওয়ার পর থেকেই ওই ‘গ্যাং’-এর সঙ্গে কংগ্রেসের সরাসরি যোগ রয়েছে বলে সরব হন বিজেপি নেতৃত্ব।
আজ সেই সূত্র ধরেই কংগ্রেস ও ‘গ্যাং’-কে এক যোগে আক্রমণ শানানোর পরিকল্পনা নেন অমিত শাহ। তাঁর আবেদন, ‘‘আমি বলতে চাই সময়ে এসে গিয়েছে এখন দিল্লিবাসীর উচিত গ্যাং-এর পিছনে থাকা কংগ্রেসকে শাস্তি দেওয়ার।’’
একই সঙ্গে আজ মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবালকেও আক্রমণ শানিয়ে অমিত বলেন, ‘‘অরবিন্দ কেজরীবাল পণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হলে গাড়ি-বাংলো-নিরাপত্তা কিছুই নেবেন না। কিন্তু সব নিয়েছেন। উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে দিল্লির। গত পাঁচ বছরে আশি শতাংশ জনমুখী পরিকল্পনা রূপায়ণে ব্যর্থ হয়েছে কেজরীবাল সরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy