অমিত শাহ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অমিত-পুত্র জয় শাহ (ডান দিক থেকে)। -ফাইল চিত্র।
আগের বছরে যে সংস্থার ব্যবসা হয়েছিল ৫০ হাজার টাকার মতো, সেই সংস্থাই কিনা তার পরের বছরে ব্যবসা করে ফেলল ৮০ কোটি টাকার! এক বছরে ব্যবসা ফুলে ফেঁপে উঠল ১৬ হাজার গুণ! অনলাইন মিডিয়া ‘দ্য ওয়্যার’-এর দাবি, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের পুত্র জয় শাহের কোম্পানি টেম্পল এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবসা নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী আর অমিত শাহ বিজেপি সভাপতি হওয়ার পর এই ভাবেই বেড়েছে। বিজেপি অবশ্য গোটা অভিযোগটাকেই ‘মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। ‘দ্য ওয়্যার’-এর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করতে চলেছেন অমিতপুত্র, জানিয়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুন- নিজের জন্মস্থানে গিয়ে আবেগে ভাসলেন প্রধানমন্ত্রী
আরও পড়ুন- নোবেল পেতে পারেন রঘুরাম রাজন? সংস্থার তালিকা ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে
‘দ্য ওয়্যার’-এর দাবি, কেন্দ্রীয় সংস্থা রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজকে দেওয়া টেম্পল এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেডের তথ্য অনুযায়ী ২০১৩ আর ২০১৪-র মার্চে শেষ হওয়া দুই আর্থিক বছরে তাদের ব্যবসায় ক্ষতি দেখানো হয়েছিল যথাক্রমে ৬ হাজার ২৩০ এবং ১ হাজার ৭২৪ টাকা। সংস্থাটি প্রথম লাভের মুখ দেখে ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে। ওই বছর সংস্থাটির লাভের পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার ৭২৮ টাকা। ওই বছর মোট ব্যবসা হয়েছিল ৫০ হাজার টাকার। তার পরেই ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে ধূমকেতুর মতো উত্থান হয় কোম্পানিটির। ওই বছর জয় শাহের কোম্পানির বাৎসরিক টার্নওভারের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় ৮০ কোটি টাকায়।
আরও পড়ুন- আলোখেকো গ্রহের হদিশ মিলল এই প্রথম
ওই খবর অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ার পর রবিবার দিল্লিতে এআইসিসির সদর দফতরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল বলেছেন, ‘‘ক্ষমতার পালাবদলের পর মনে হচ্ছে কারও কারও কপাল খুলে গিয়েছে! কেন্দ্রীয় সংস্থা রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজের দেওয়া তথ্য বলছে, অমিত-পুত্র জয় শাহের সংস্থা ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে প্রথম লাভের মুখ দেখার পরের বছরেই তার ব্যবসা ১৬ হাজার গুণ বাড়িয়ে ফেলেছে!’’
কী ভাবে সেই হঠাৎ পটপরিবর্তন হয়েছে, তথ্য পরিসংখ্যান দিয়ে এ দিন তা তুলে ধরার চেষ্টা করেন সিব্বল।
সিব্বলের কথায়, ‘‘ওই সময়ে অনেকের কাছ থেকে ঋণও পেতে শুরু করে সংস্থাটি। কেআইএফএস ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের মালিক রাজেশ খান্ডওয়ালা জয় শাহের সংস্থাটিকে ১৫ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা ঋণ দেন। আর তার পরেই ২০১৬-র অক্টোবরে জয় শাহের সংস্থাটির ব্যবসায়িক কাজকর্ম হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায়। কারণ দেখানো হয়, ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে।’’
সিব্বল গোটা ঘটনার তদন্তের দাবি জানান। সিব্বলের কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রীজি কি এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেবেন? নাকি ইডি-কে দিয়ে তদন্ত করাবেন এই ঘটনার। সিবিআই বা ইডিকে কি অপরাধীদের গ্রেফতার করতে বলবেন প্রধানমন্ত্রী? এটা যদি বিরোধী পক্ষের ঘটনা হত, তা হলে তো সঙ্গে সঙ্গে ইডিকে দিয়ে গ্রেফতার করানো হত।’’
বিজেপির তরফে অবশ্য ওই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, অমিতপুত্র জয় শাহ ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করছেন ‘দ্য ওয়্যার’-এর বিরুদ্ধে। বিজেপির তরফে সাংবাদিক সম্মেলন করে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেছেন, ‘‘এ সব একেবারেই মিথ্যা অভিযোগ। ব্যবসার জন্য যে কেউ ঋণ নিতেই পারেন। নিয়ম মেনেই সেই ঋণ নেওয়া হয়েছে। ঋণ মেটানোর শর্তও মেনে চলা হয়েছে। তাই এর মধ্যে কোনও বেআইনি ব্যাপার নেই।’’
বিজেপির আইটি সেলের সর্বভারতীয় প্রধান অমিত মালব্যও জয় শাহের সমর্থনে একের পর এক টুইট করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy