কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুলেছে তামিলনাড়ু। জাতীয় শিক্ষানীতি সে রাজ্যে গ্রহণ করা হয়নি। হিন্দি আগ্রাসনের এই বিতর্কের মাঝেই তামিলনাড়ুতে গিয়ে সেখানকার মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। স্বীকার করলেন, তিনি তামিল ভাষায় কথা বলতে পারেন না। শাহ বলেন, ‘‘তামিল বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ভাষা। আমি এই ভাষায় কথা বলতে পারি না। তার জন্য তামিলনাড়ুর মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’’
কোয়েম্বত্তূরে বিজেপির একটি জেলা দফতর উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন শাহ। সেই অনুষ্ঠানের পরেই জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দেন। তামিলনাড়ুতে ক্ষমতাসীন ডিএমকে-র বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগেছেন তিনি। জানিয়েছেন, ২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পর তামিলনাড়ুতে এনডিএ সরকার গঠিত হবে বলে তিনি আশাবাদী।
আরও পড়ুন:
কেন্দ্রের তিন ভাষা নীতিকে গ্রহণ করেনি তামিলনাড়ু, যা নিয়ে বিতর্ক ক্রমে বাড়ছে। এই প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের সুরেই সুর মিলিয়েছে বিরোধী এডিএমকে এবং কমল হাসনের এমএনএম। অভিযোগ, তিন ভাষা নীতির বিরোধিতা করে জাতীয় শিক্ষা নীতি বলবৎ না-করায় শিক্ষা অভিযান খাতে দু’হাজার কোটি টাকার কেন্দ্রীয় বরাদ্দ থেকে তামিলনাড়ুকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও চিঠি লিখেছেন স্ট্যালিন।
তিন ভাষা নীতিতে বলা হয়েছে, ছাত্রছাত্রীরা তিনটি ভাষা বাধ্যতামূলক ভাবে শিখবে— ইংরেজি, হিন্দি এবং স্থানীয় ভাষা। তামিলনাড়ু-সহ দক্ষিণ ভারতের অধিংকাশ রাজ্যেই দু’টি ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক— ইংরেজি এবং আঞ্চলিক ভাষা। তিন ভাষা নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে হিন্দি শিক্ষার বিষয়ে জোর করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের বক্তব্য তিন ভাষা নীতিকে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার নীতি হিসাবে দেখা ঠিক নয়। ভাষা নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।
কোয়েম্বত্তূরের সভা থেকেও ডিএমকে-কে তুলোধনা করেছেন শাহ। তিনি এই দলটিকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ বলে উল্লেখ করেছেন। ২০২৬ সালে তামিলনাড়ুতে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। অনেকের মতে, তার আগে এই ভাষা বিতর্ক বড় ভূমিকা নিতে চলেছে তামিল রাজনীতিতে। শাহ বলেন, ‘‘২০২৪ বিজেপির জন্য ঐতিহাসিক বছর। মোদীজি তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, হরিয়ানায় আমরা জিতেছি। মানুষ বিজেপিকে ভরসা করছে। তামিলনাড়ুর মানুষ ২০২৬ সালে রাষ্ট্রদ্রোহী ডিএমকে-কে ছুড়ে ফেলে দেবেন।’’
তামিলনাড়ুর জনপ্রিয় অভিনেতা তথা টিভিকে দলের নেতা বিজয় হিন্দি ভাষাকে কেন্দ্র করে বিজেপি এবং ডিএমকে-র লড়াইকে ‘কেজি স্কুলের বাচ্চাদের লড়াই’ বলে উল্লেখ করেছেন। যা নিয়ে তামিলনাড়ুর শাসকদলের বক্তব্য, বিজেপিকে ভয় পেয়ে এই অবস্থান নিচ্ছেন বিজয়।