আমদাবাদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে শুরু হয়েছে কোর কমিটির বৈঠক। ফাইল চিত্র।
রাজ্যে ভোট ঘোষণা হতেই প্রার্থী বাছাইয়ে নেমে পড়লেন বিজেপি নেতৃত্ব। সূত্রের মতে, প্রাথমিক তালিকা চূড়ান্ত করতে গত কাল আমদাবাদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে শুরু হয়েছে কোর কমিটির বৈঠক। যা চলবে তিন দিন ধরে। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস বিজেপির আগেই ৪৩টি কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। রাজ্যে নতুন শক্তি হিসেবে উঠে আসতে চাওয়া আম আদমি পার্টিও প্রার্থী তালিকা নিয়ে বৈঠকে বসেছে।
অমিত শাহ ছাড়া বিজেপির প্রার্থী বাছাইয়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পুরুষোত্তম রূপালা, মনসুখ মাণ্ডবিয়ারা। গত কাল ১৩টি জেলার ৪৭টি আসন নিয়ে আলোচনার পরে আজ সৌরাষ্ট্র এলাকার ১৫টি জেলার ৫৮টি আসন নিয়ে বৈঠক হয়। গুজরাতের ৪৮ শতাংশ ভোটার ওবিসি সম্প্রদায়ের। তাই অর্ধেকের বেশি আসনে ওবিসি প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে দলের।
গত ২৭ বছর ধরে গুজরাতে ক্ষমতায় বিজেপি। আট বছর কেন্দ্রে ক্ষমতায় দল। স্বভাবতই প্রতিষ্ঠানবিরোধিতায় হাওয়া রয়েছে রাজ্য জুড়ে। যা বুঝে ভোট ঘোষণার আগে একের পর এক প্রকল্প ঘোষণা ও উদ্বোধন করে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা চালিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সব প্রকল্প উদ্বোধন ও শিলান্যাসের পরেই গুজরাতে ভোটের দিন ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। বিরোধীরা প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার হাওয়ায় ফায়দা তুলতে চাইলেও রাজ্যে বিজেপির সুবিধাজনক অবস্থার কথা অস্বীকার করছে না কোনও পক্ষই। এ দিনই এবিপি নিউজ-সি ভোটারের জনমত সমীক্ষায় সেই মনোভাবেরই প্রতিফলন পাওয়া গিয়েছে। ওই সমীক্ষা অনুযায়ী, ১৮২ আসনের গুজরাত বিধানসভায় বিজেপি ১৩১ থেকে ১৩৯টি আসন জিতে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে চলেছে। কংগ্রেস পেতে পারে ৩১ থেকে ৩৯টি আসন। আর অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি ও নির্দলেরা মিলিত ভাবে ১২ থেকে ১৭টি আসন পেতে পারে। এই সব সমীক্ষার ফল সব সময় যে মেলে, তা নয়। কিন্তু এতে জনমানসের মনোভাবের একটা প্রতিফলন পাওয়া যায়।
জয় নিয়ে নিশ্চিন্ত হলেও বিজেপি কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ। পুরনো প্রার্থীদের বড় অংশকেই বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। যে সব নেতার বিরুদ্ধে মৌরসিপাট্টার অভিযোগ উঠেছে, তাদেরও বসিয়ে দেওয়া হবে। দলীয় সূত্রের মতে, কমপক্ষে ত্রিশ শতাংশ আসনে এ বার প্রার্থী বদলের কথা ভাবছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
প্রাথমিক ভাবে গুজরাত বিজেপি যে প্রার্থীতালিকা তৈরি করছে, তাতে বিধানসভা পিছু তিন জন প্রার্থীর নাম বিবেচনায় রাখা হয়েছে। সূত্রের মতে, রাজ্যে ১৮২টি আসনে লড়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করে প্রায় চার হাজার নাম জমা পড়েছে। তার মধ্যে মূলত তিনটি শর্তের ভিত্তিতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের বেছে নেওয়ার কাজ চালু রয়েছে। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘এ বারে সেই সব প্রার্থীদের নাম বিবেচনায় রাখা হচ্ছে, যাঁদের বিরুদ্ধে পরিবারবাদের কোনও অভিযোগ নেই। দ্বিতীয়ত, প্রার্থীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান। মূলত মধ্য ও নিম্নবিত্ত স্তর থেকে উঠে আসা নেতাদের প্রাধান্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। তৃতীয়ত, যাঁরা তৃণমূল স্তর থেকে বিশেষ করে ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন, এমন নেতাদের প্রাধান্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ রাজ্যের ১৮২টি কেন্দ্রের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হয়ে গেলে তা কেন্দ্রীয় নির্বাচনী কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সূত্রের মতে, শেষ ধাপে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে চূড়ান্ত তালিকায় সবুজ সঙ্কেত দেবে কেন্দ্রীয় নির্বাচনী কমিটি। বিজেপি সূত্রের দাবি, সব কিছু প্রত্যাশিত গতিতে চললে আগামী সপ্তাহের গোড়ায় গুজরাতের প্রথম তালিকা সামনে আসবে।
প্রস্তুতি চলছে বিরোধী শিবিরেও। আজই আপ জানিয়েছে, গুজরাত নির্বাচনে তাদের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন দ্বারকার বাসিন্দা তথা ওবিসি নেতা ইসুদান গডভি। গুজরাতের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে আজ দ্বিতীয় বৈঠকে বসেন কংগ্রেসের নতুন সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। প্রথম পর্যায়ে ৪৩টি কেন্দ্রে প্রার্থীর নামও ঘোষণা করেছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy