দিল্লিতে ভুটানের রাজা জিগমে খেসর নামগিয়েল ওয়াংচুকের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠক। ছবি: পিটিআই।
ডোকলাম নিয়ে চিনের সঙ্গে দ্বৈরথ ৬ বছর ছাড়িয়ে গিয়েছে। কিন্তু এই প্রথম সমস্যার সমাধানে বেজিংয়ের অংশগ্রহণ চেয়েছে ভুটান! যা নিয়ে নয়াদিল্লির অস্বস্তি বেড়েছে বলেই কূটনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার দিল্লিতে ভুটানের রাজা জিগমে খেসর নামগিয়েল ওয়াংচুকের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে ডোকলাম বিতর্কের প্রসঙ্গ এসেছে বলে বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে।
সোমবার বিকেলে ৩ দিনের ভারত সফরে নয়াদিল্লি এসে পৌঁছন ভুটানের রাজা। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাতে যান বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সন্ধ্যায় দু’জনের বৈঠকও হয়। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে ভুটানরাজের বৈঠকে দুই দেশের জাতীয় স্বার্থ এবং দ্বিপাক্ষিক সমঝোতার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে বিদেশ সচিব বিনয়মোহন কোয়াত্রা জানিয়েছেন। যদিও বৈঠকে সরাসরি ডোকলাম এবং চিনের প্রসঙ্গের কথা বলেননি তিনি।
চিন এবং ভারত সীমান্ত লাগোয়া ডোকলামে ভুটানের জমিতে ঢুকে চিনা ফৌজ ঘাঁটি গেড়ে সামরিক নির্মাণের কাজ চালাচ্ছে বলে সম্প্রতি অভিযোগ তুলেছিল ভারতীয় সেনা। কয়েকটি উপগ্রহচিত্রেও তা দেখা গিয়েছিল। কিন্তু নয়াদিল্লির সেই অভিযোগকে কার্যত অস্বীকার করে এর আগে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং বলেন ‘‘সংবাদমাধ্যমে যা-ই প্রকাশিত হয়ে থাকুক, ভুটানি এলাকায় চিন কোনও নির্মাণকার্য চালাচ্ছে না। আমাদের এলাকায় অনুপ্রবেশ ঘটেনি। আন্তর্জাতিক সীমান্তে কোন এলাকা আমাদের, তা আমরা জানি।’’ সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘ডোকলাম সমস্যায় তিনটি পক্ষ রয়েছে। কোনও দেশই ছোট বা বড় নয়। তিন দেশের মতই সমান গুরুত্বপূর্ণ।’’
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, শেরিংয়ের এই বক্তব্যের সুর ২০১৯ সালে তাঁর দেওয়া সাক্ষাৎকারের থেকে পুরোপুরি আলাদা। সে সময় শেরিং স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, কোনও দেশেরই ত্রিদেশীয় সীমান্তের কাছে একতরফা কোনও পদক্ষেপ করা উচিত নয়। সে সময় তিনি চিনের দিকেই ইঙ্গিত করেছিলেন। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সাল থেকে ডোকলামে উত্তেজনা রয়েছে। সে সময় ভারতীয় এবং চিনা সেনার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকা নিয়ে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। পরে দু’তরফের সেনা কিছুটা পিছোলেও বছর কয়েক আগে ‘ফিরে এসেছে’ চিনা ফৌজ।
ডোকলাম এলাকায় ত্রিদেশীয় সীমান্ত বর্তমানে রয়েছে বাটাং লা নামে একটি এলাকায়। এই এলাকার উত্তরে চিনের চুম্বি উপত্যকা। দক্ষিণ এবং পূর্বে ভুটান। পশ্চিমে রয়েছে ভারতের সিকিম। বেজিংয়ের দাবি, প্রকৃত ত্রিদেশীয় সীমান্ত হওয়া উচিত বাটাং লা থেকে ৭ কিলোমিটার দক্ষিণে মাউন্ট জিপমোচি শৃঙ্গ ও ঝাম্পেরি শৈলশিরার কাছে। এই দাবি মানতে রাজি নয় ভারত। ঝাম্পেরি শৈলশিরা থেকে সরাসরি নজর রাখা যায় ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির সঙ্গে সংযোগকারী শিলিগুড়ি করিডরের উপরে। ফলে কৌশলগত ভাবে ওই এলাকা ভারতীয় সেনার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy