ফাইল চিত্র।
গত কাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পরে আজ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে দেখা করলেন পঞ্জাবের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ। সূত্রের মতে, পঞ্জাবের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি, সীমান্ত সুরক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। রাজনীতির অনেকে মনে করছেন, সীমান্তবর্তী রাজ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশের নিরাপত্তার জন্য চিন্তার বিষয় এই যুক্তিতে পঞ্জাবে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার কথা ভাবছেন বিজেপি নেতৃত্ব। এই জল্পনার সূত্রে কংগ্রেসের প্রশ্ন, লাদাখের পরে চিনা সেনা উত্তরাখণ্ডে প্রবেশ করেছে। বাস্তব এই সমস্যা নিয়ে সরকার চুপ। অথচ, পঞ্জাবের কারণে ভারতের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এই কল্পিত পরিস্থিতির কথা ভেবে বিজেপির চিন্তার শেষ নেই।
আজ সকালে ডোভালের বাড়িতে বৈঠক সেরে অমরেন্দ্র জানান, সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সূত্রের মতে, তিনি বেশ কিছু নথিও ডোভালকে দিয়েছেন। যাঁর কারণে তাঁকে ইস্তফা দিতে হল, সেই নভজ্যোত সিংহ সিধুর সঙ্গে পাক প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সুসম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে ডোভালকে বিস্তারিত জানান অমরেন্দ্র। সিধুর সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, পাক সেনাপ্রধান জাভেদ বাজওয়ার সুসম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলে দীর্ঘ সময় ধরেই সরব অমরেন্দ্র। তাঁর দাবি, সিধু মুখ্যমন্ত্রী হলে পাকিস্তান সিধুকে সামনে রেখে পঞ্জাবে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বাড়াবে। সূত্রের মতে, অমরেন্দ্র ডোভালকে জানিয়েছেন, তিনি সরে যাওয়ার পরে পঞ্জাবে দু্র্বল নেতৃত্ব ক্ষমতায় এসেছে। এর সুযোগ নিয়ে ভারত-বিরোধী শক্তিগুলি সক্রিয় হতে শুরু করেছে।
বিজেপি সূত্রের মতে, অন্য কাউকে মুখ্যমন্ত্রী পদে মেনে নিতে পারছেন না অমরেন্দ্র। তাই রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষে সরব তিনি। দেশের নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে এই যুক্তিতে পঞ্জাবে রাষ্টপতি শাসন জারির পক্ষে গত কাল তিনি শাহের কাছে সওয়াল করেছেন। চরণজিৎ সিংহ চন্নী সরকার পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা উস্কে দিতে আজ সাংবাদিকদের বলেছেন, “আস্থা ভোটে সরকার গরিষ্ঠতা হারালে স্পিকার সিদ্ধান্ত নেবেন।” তার জেরে পঞ্জাবে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হলে বিজেপির কিছু হারানোর নেই। বছর ঘুরলেই পঞ্জাবে নির্বাচন। কৃষি আইনকে কেন্দ্র করে পঞ্জাবের মানুষ বিজেপির উপরে এতটাই ক্ষুব্ধ যে সেখানে জেতার আশা করছেন না কোনও বিজেপি নেতা।
কংগ্রেস ও শিবসেনার মতো দলগুলির আশঙ্কা, পঞ্জাবে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার ফিকির খুঁজছে বিজেপি। অমরেন্দ্রকে দিয়ে তার জমি তৈরি করতে চাইছেন শাহেরা। পঞ্জাবের নিরাপত্তা, সিধু ও পাক শীর্ষ নেতৃত্বের সুসম্পর্ক নিয়ে বিজেপি নেতারা সরব রয়েছেন। শিবসেনা সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীর প্রশ্ন, এত দিন সব ঠিকঠাক থাকলেও, হঠাৎ সবাই পঞ্জাব নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে। সেখানে নির্বাচিত সরকার থাকলেও দেশের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অথচ, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে যখন নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দিয়ে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণে সরকার গড়া হয়, তখন কিন্তু জাতীয় সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে না। কংগ্রেসও পঞ্জাবে আগামী দিন কী হবে, তা না ভেবে উত্তরাখণ্ডের চিন সীমান্তের পরিস্থিতির দিকে কেন্দ্রকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জ্জুন খড়্গে বলেন, “রিপোর্ট অনুযায়ী অন্তত একশো জন চিনা সেনা দিন কয়েক আগে উত্তরাখণ্ডে পাঁচ কিলোমিটার ঢুকে এসেছিল। মোদী সরকারের নীরবতার কারণে আমাদের সার্বভৌমত্ব কত দিন এ ভাবে বিপদের মুখে পড়বে? আবার কি প্রধানমন্ত্রী বলবেন, কেউ প্রবেশ করেনি?” বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, তাদের আশা, লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় সব সমস্যা দ্রুত মেটাতে তৎপর হবে চিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy