মথুরার শ্রীকৃষ্ণ মন্দির এবং শাহি ইদগাহ মসজিদ। — ফাইল চিত্র।
বারাণসীর জ্ঞানবাপীর পরে এ বার মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদ চত্বরেও সমীক্ষার নির্দেশ দিল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। হিন্দু পক্ষের আইনজীবী হরিশঙ্কর জৈন, বিষ্ণুশঙ্কর জৈন, প্রভাস পাণ্ডে এবং দেবকী নন্দন মথুরার শাহি ইদগাহকে ‘শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি’ বলে চিহ্নিত করে সেখানে জমি মাপজোক এবং বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার দাবি তুলেছিলেন। যার বিরোধিতা করেছিল মুসলিম পক্ষ।
শুনানি শেষের পর গত ১৬ নভেম্বর রায় সংরক্ষিত রেখেছিল বিচারপতি ময়াঙ্ক কুমারের নেতৃত্বাধীন ইলাহাবাদ হাই কোর্টের বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার সেই রায় ঘোষিত হল। বিচারপতি ময়াঙ্ক নির্দেশ দিয়েছেন, এক জন কোর্ট কমিশনারের পর্যবেক্ষণে সমীক্ষার কাজ করতে হবে শাহি ইদগাহের বিতর্কিত ১৩.৩৭ একর জমিতে। কোর্ট কমিশনায় নিয়োগ সংক্রান্ত শুনানি হবে আগামী ১৮ ডিসেম্বর।
গত ২৯ অগস্ট হিন্দু পক্ষের আবেদন মেনে ইলাহাবাদ হাই কোর্ট মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদে ভিডিয়ো সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল। বিচারপতি পীযূষ অগ্রবাল সেই সমীক্ষা তত্ত্বাবধানের জন্য এক আইনজীবীকে কোর্ট কমিশনার এবং দু’জনকে সহকারী কোর্ট কমিশনার নিযুক্ত করেছিলেন। আগামী চার মাসের মধ্যে সমীক্ষার রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেন তিনি। কিন্তু উচ্চতর বেঞ্চ তাতে স্থগিতাদেশ দেয়।
মথুরার প্রাচীন কাটরা স্তূপ (যা কাটরা কেশবদাস নামে পরিচিত) এলাকায় শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান কমপ্লেক্সের পাশেই রয়েছে শাহি ইদগাহ মসজিদ। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, ইদগাহের ওই জমিতে কৃষ্ণের জন্মস্থানে ছিল প্রাচীন কেশবদাস মন্দির। কাশীর ‘আসল বিশ্বনাথ মন্দিরের’ মতোই মথুরার মন্দিরটিও ধ্বংস করেছিলেন মুঘল সম্রাট অওরঙ্গজেব। অভিযোগ, অওরঙ্গজেবের নির্দেশে ১৬৬৯ থেকে ১৬৭০ সালে তৈরি করা হয়েছিল মসজিদটি। কাটরা কেশবদাস মন্দিরের ১৩.৩৭ একর জমিতে। সেই জমির মালিকানা নিয়ে বিবাদের জেরেই সমীক্ষার নির্দেশ।
হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের মতো মথুরা শাহি ইদগাহেও রয়েছে ‘হিন্দুত্বের প্রমাণ’। সেগুলির সমীক্ষা এবং ভিডিয়োগ্রাফির দাবি ঘিরে একটি মামলা ইলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারাধীন। সেই মামলায় রায় ঘোষণার আগেই ইদগাহ থেকে ‘হিন্দুত্বের প্রমাণ’ নষ্ট করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে অবিলম্বে পুরো চত্বরটি সিল করার দাবিতে এর পর নতুন করে মামলা দায়ের করা হয়েছিল মথুরা আদালতে।
তার আগে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া)-এর অধীনে সেখানে সমীক্ষা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল মথুরা আদালত। কিন্তু সেই নির্দেশকে ১৯৯১ সালের ধর্মীয় উপাসনাস্থল (বিশেষ ব্যবস্থা) আইনে চ্যালেঞ্জ জানানো হয় ইলাহাবাদ হাই কোর্টে। ১৯৯১ সালের ওই আইনে বলা হয়েছিল, ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্টের পর দেশে যে ধর্মীয় স্থান যে অবস্থায় ছিল, সে ভাবেই তা থাকবে। কিন্তু মুসলিম পক্ষের সেই যুক্তিতে সায় দিল না ইলাহাবাদ হাই কোর্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy