Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

সংসদে ঘুমের দল-ভেদ নেই

আজ তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন লিখেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী দেশের অর্থনীতি নিয়ে সংসদে বলেছেন। কিন্তু তাঁর মন্ত্রিসভার সতীর্থও সেই বক্তৃতা শুনতে আগ্রহী নন। তিনি ঘুমন্ত। তা হলে কী করে আশা করা যায়, বিরোধীরা আগ্রহী হবেন?’’

ঘুমোচ্ছেন সদানন্দ গৌড়া।—ছবি পিটিআই

ঘুমোচ্ছেন সদানন্দ গৌড়া।—ছবি পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:০৬
Share: Save:

গত কাল রাজ্যসভায় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বক্তৃতার সময় ঘুমোতে দেখা গিয়েছে সরকারেরই তিন জন মন্ত্রীকে। সেই মহেন্দ্রনাথ পাণ্ডে, সদানন্দ গৌড়া এবং অনুরাগ ঠাকুরের ঝিমুনির ছবি প্রকাশ্যে আসার পর আজ সংসদে চর্চার বিষয় ছিল নিদ্রাই! বিরোধীদের একাংশের তির্যক মন্তব্য, এতটাই নিষ্প্রাণ বক্তৃতা দিয়েছেন নির্মলা যে ঘুম আসাটাই ছিল স্বাভাবিক! আবার কিছুটা চিন্তার সঙ্গে এই আলোচনাও হচ্ছে যে, পঞ্চাশ পার করার পর শরীরে বাড়তি মেদ জমে গিয়ে স্লিপ অ্যাপনিয়ার প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে মানুষের মধ্যে। সাংসদরাও তার ব্যতিক্রম নন।

আজ তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন লিখেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী দেশের অর্থনীতি নিয়ে সংসদে বলেছেন। কিন্তু তাঁর মন্ত্রিসভার সতীর্থও সেই বক্তৃতা শুনতে আগ্রহী নন। তিনি ঘুমন্ত। তা হলে কী করে আশা করা যায়, বিরোধীরা আগ্রহী হবেন?’’ কিন্তু সাম্প্রতিক অতীত ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, শুধু বিজেপির মন্ত্রীদের দিকে আঙুল তুলে লাভ নেই। ডেরেক জানিয়েছেন, তিনি নিজেও ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’র শিকার ছিলেন। মাস্ক ব্যবহার করে পনেরো বছর আগে এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে এসেছেন।

সংসদে ঘুমোনোর ব্যাপারে বাস্তবিকই দল-মতের ভেদ নেই। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়াকে সাংসদ হিসেবে শেষ কয়েক বছর অধিবেশন কক্ষে জেগে থাকতেই দেখা যেত কম! সন্তোষমোহন দেবও ঘুমোতেন বক্তৃতা চলাকালীন। হালফিলে লোকসভা অধিবেশনে রাহুল গাঁধীর ঘুমিয়ে পড়া নিয়ে প্রবল বিতর্ক হয়ে গিয়েছে। চলতি অধিবেশনেই রাজ্যসভায় রীতিমতো নাক ডেকে ঘুমোতে দেখা গিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হর্ষবর্ধনকে।

অসময়ে এই ঘুমিয়ে পড়ার পিছনে বিবিধ শারীরিক এবং মানসিক কারণ কাজ করে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। একঘেয়ে আলোচনা একটানা চলার ফলে মানসিক ক্লান্তিজনিত ঘুম, রক্তে শর্করা বা উচ্চরক্তচাপজনিত ঘুম, পৃথুলতার কারণে ঘুম— এক এক জনের ক্ষেত্রে এক এক রকম। কল্যাণীর জেএনএম হসপিটালের কলেজ অব মেডিসিন-এর মনস্তত্ত্ব বিভাগের প্রধান কৌস্তভ চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, ‘‘সাংসদ বা রাজনীতিবিদদের যেহেতু অবসরের কোনও সময়সীমা নেই, তাই স্বাভাবিক ভাবেই অনেকেরই বয়স বেশি হয়ে যায়। তাঁদের মেদ জমে এবং রক্তচাপ-ডায়াবিটিস ইত্যাদি সমস্যাও থাকে। এই অসুস্থতাগুলি থেকে মস্তিষ্কে খুবই ছোট ছোট (মাইক্রো) স্ট্রোক হয়। সে ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক অল্পে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তা ছাড়া মেদের কারণে মুখ এবং শ্বাসনালী সংলগ্ন মাংসপেশি ঢিলে হয়ে গিয়েও তৈরি হয় ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’। মাথায় অক্সিজেন জোগান বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ঘুম ভাল হয় না। দিনে যখন তখন ঘুমিয়ে পড়ার প্রবণতা তৈরি হয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Sleep Parliament MP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy