Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Farm Bill 2020

‘মনের কথায়’ আশ্বাস মোদীর, অনড় কৃষকেরা

আজ রেডিয়োয় মোদী দাবি করেছেন, দেশের কৃষি এবং কৃষি সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২০ ০৫:২২
Share: Save:

কেন্দ্রের আনা সংশোধিত কৃষি আইনের বিরোধিতায় আন্দোলন আছড়ে পড়ছে রাজধানীর বুকে। গোটা দেশ বিক্ষোভে উত্তাল। এই আবহে ‘কৃষিকল্যাণ’ নিয়ে তাঁর রেডিয়ো অনুষ্ঠান ‘মন কি বাত’-এ সরব হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সরকারের আনা নতুন আইনে দেশের কৃষকদের দীর্ঘদিনের শৃঙ্খলমোচন ঘটেছে।’’ এই আইনের জেরে কৃষকদের সমস্ত অভাব-অভিযোগের এক মাসের মধ্যে নিরসন হয়ে যাবে বলেও প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় মন্তব্য করেছেন।

এর পরেই টুইট করে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তোপ দেগেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। তিনি বলেছেন, “কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। মোদী সরকার আয় তো অনেক গুণই বাড়িয়েছে, কিন্তু সেটা অম্বানী-আদানিদের। যে কালা কৃষি আইনকে এখনও পর্যন্ত ‘ঠিক’ বলে চলেছে সরকার, তার ফলে কি সমস্ত কৃষকের সমস্যার সমাধান হবে?” ‘মন কি বাত’-কে কটাক্ষ করে রাহুলের মন্তব্য, ‘‘এ বার ‘কিসান কি বাত’ হবে।’’

আজ রেডিয়োয় মোদী দাবি করেছেন, দেশের কৃষি এবং কৃষি সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সংস্কার দেশের কৃষকদের কাছে নতুন দরজা খুলে দিয়েছে। সমস্ত রাজনৈতিক দল কখনও না কখনও যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে কৃষকরা যে সমস্ত দাবি করে আসছেন, সেগুলি এত দিনে পূরণ করা হল।

আরও পড়ুন: শাহের শর্ত নাকচ, দিল্লি অবরুদ্ধ করার হুঙ্কার চাষিদের

তাঁর কথায়, ‘‘দীর্ঘ আলাপ- আলোচনার পরে সম্প্রতি সংসদে সংশোধিত কৃষি আইন পাশ হয়েছে। এই সংশোধনের ফলে কৃষকরা শুধু শিকলমুক্তই হননি, নতুন অধিকার ও নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা এসে পৌঁছেছে তাঁদের হাতে।’’ মোদীর কথায়, ‘‘কৃষি আইনের যে দিকটি গুরুত্বপূর্ণ সেটি হল, কৃষকের কোনও অভিযোগ থাকলে এক মাসের মধ্যে তার সমাধান করার নির্দেশ দেওয়া থাকছে মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেটদের। আমাদের কৃষক ভাইরা এই আইনের ফলে বলশালী হবেন। তাঁদের কোনও বকেয়া থাকলে সেটাও এক মাসের মধ্যে হাতে পেয়ে যাবেন।’’

এই আইন সম্পর্কে ‘ঠিক এবং পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান’ থাকা জরুরি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কৃষি আইন নিয়ে চলতি বিতর্কের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘‘গুজব এবং ভুল তথ্য সরিয়ে আইন সম্পর্কে প্রকৃত দৃষ্টিভঙ্গি থাকলে প্রতিটি কৃষক অনেক বেশি শক্তিশালী হবেন।’’ আইন সম্পর্কে নির্ভুল জ্ঞান থাকলে কী ভাবে উপকৃত হওয়া যায়, তার একাধিক উদাহরণ আজ দিয়েছেন তিনি। মহারাষ্ট্রের ধুলের বাসিন্দা, জিতেন্দ্র ভাইজি নামে এক কৃষকের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘৩ লক্ষ ৩২ হাজার টাকায় ভুট্টা বিক্রির রফা হয়েছিল এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। জিতেন্দ্র সেই বাবদ অগ্রিম ২৫ হাজার টাকাও হাতে পেয়েছিলেন। কিন্তু বাকি টাকা আটকে যায়। চার মাস অপেক্ষার পরে নয়া কৃষি আইন ব্যবহার করে সুরাহা পান তিনি। আইন সম্পর্কে বিশদ জ্ঞানই শেষমেশ কাজে আসে তাঁর।’’

আরও পড়ুন: কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে জরুরি বৈঠকে শাহ, রাজনাথরা, আন্দোলনকারীরা অনড়

প্রধানমন্ত্রীর বার্তা সত্ত্বেও অবশ্য দিল্লিতে কৃষকদের বিক্ষোভ স্তিমিত হওয়ার কোনও লক্ষণ এখনও নেই। কৃষক সংগঠনগুলি কেন্দ্রের শর্তে আলোচনায় বসতে রাজি হয়নি। কৃষি আইনের পক্ষে মোদীর যুক্তিও খারিজ করে দিয়েছেন তাঁরা। কৃষক সংগঠনের নেতা সুরজিৎ সিংহ ফুল বলেন, ‘‘মোদী সরকার দাবি করছে, ‘এক দেশ, এক মান্ডি হল। চাষিরা যেখানে খুশি ফসল বিক্রি করতে পারবেন।’ সে তো আগেও ছিল। নতুন কী হল? এখন বরং এক দেশে দুই মান্ডি চালু হল। এক মান্ডিতে এপিএমসি আইন চলবে, ফসলের ন্যূনতম দাম থাকবে। আর এক মান্ডিতে কোনও নিয়মকানুন থাকবে না। কোনও লাইসেন্স ছাড়াই যে কেউ ফসল কিনতে পারবে। সরকার কর্পোরেটদের কথায় এ সব কাজ করছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy