শিশু খুনে ধৃত দুই অভিযুক্ত। ছবি: টুইটার থেকে
মাত্র ৫০০০ টাকার জন্য আড়াই বছরের শিশুকে নৃশংস খুন! আলিগড়ের এই ঘটনায় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে তৈরি হচ্ছে জনমত। দেশ জুড়ে নিন্দা, ঘৃণার ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। রাজনৈতিক নেতা থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টরা এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন টুইটার-ফেসবুকে। অন্য দিকে গাফিলতির অভিযোগে পাঁচ পুলিশ কর্মী-অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তবে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে তদন্ত করে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।
গত রবিবার আলিগড়ের তপ্পল এলাকায় একটি চাষের জমিতে কুকুরের আনাগোনা এবং দুর্গন্ধ পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। পুলিশ গিয়ে আড়াই বছরের ওই শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে। তার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা এলাকা। তিন চার দিন আগে নিখোঁজ ডায়েরি করা হলেও পুলিশ সেটিকে কার্যত গুরুত্বই দেয়নি বলে অভিযোগ। দোষীদের শাস্তির দাবিতে প্রায় প্রতিদিনই প্রতিবাদ-অবরোধ-বিক্ষোভ করছেন বাসিন্দারা।
একই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়াতেও নিন্দার ঝড়। টুইটারে ওই শিশুর নামে একটি হ্যাশটাগ চালু হতেই দেশ জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে নানা মহল থেকে। গত ২৪ ঘণ্টায় রিটুইট, কমেন্ট পড়েছে প্রায় ১৭ হাজার। বর্বরোচিত ও নৃশংস হত্যার ঘটনায় দোষীদের কঠোরতম শাস্তির পক্ষে সওয়াল করেছেন অধিকাংশ টুইটার ব্যবহারকারী।
টুইটের তালিকায় রয়েছেন রাহুল গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী থেকে শুরু করে অভিষেক বচ্চনের মতো রাজনীতিক ও বিশিষ্টরা। কংগ্রেস সভাপতি লিখেছেন, ‘‘আলিগড়ের ছোট্ট শিশুকে বর্বরোচিত খুনের ঘটনায় আমি মর্মাহত। এক রত্তি শিশুর সঙ্গে কেউ এই রকম নৃশংস আচরণ করতে পারে? এই ভয়ঙ্কর খুনের ঘটনায় দোষীদের অবশ্যই শাস্তি পাওয়া উচিত। দ্রুত অপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করা উচিত পুলিশের।’’ এই ঘটনাকে ‘অবর্ণনীয়’ ও ‘পাশবিক’ আখ্যা দিয়ে প্রিয়ঙ্কার টুইট, ওই শিশুর বাবা-মার যন্ত্রণা কল্পনাও করতে পারছি না।’’
আরও পডু়ন: ৫০০০ টাকা ধার না মেটানোর ‘শাস্তি’, আড়াই বছরের শিশুকে চোখ খুবলে, গলা টিপে খুন!
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাত জারি, মোদীর ডাকা নীতি আয়োগ বৈঠকে যাচ্ছেন না মমতা
প্রায় একই রকম প্রতিক্রিয়া শিবসেনা নেত্রী প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীর। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনিও। বলিউড তারকা অভিষেক বচ্চন টুইটারে লিখেছেন, ‘‘বিরক্ত ও ক্রুদ্ধ। এক জন মানুষ কী ভাবে এই নারকীয় কাণ্ড ঘটাতে পারে? বাকরুদ্ধ।’’
নিখোঁজ ডায়েরির পর তদন্তে গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ উঠলেও খুনের ঘটনা সামনে আসার পর সক্রিয় হয়েছে পুলিশও। পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, খুনের আগে ধর্ষণ এবং চোখ খুবলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পর আলিগড় পুলিশের দাবি, ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি। চোখ তুলে নেওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিয়েছেন পুলিশকর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, যেহেতু দেহটি পচে গলে গিয়েছিল, তাই মনে হয়েছে চোখ উপড়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্টে তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবে একটি হাত এবং একটি পা যে দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল, ময়নাতদন্তে সেটা স্পষ্ট।
ঘটনার গুরুত্ব বুঝে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের পাশাপাশি ন্যাশনাল সিকিওরিটি অ্যাক্ট (এনএসএ) বা জাতীয় সুরক্ষা আইনের ধারাও মামলায় যুক্ত করেছে পুলিশ। এই আইনে অভিযুক্তদের এক বছর পর্যন্ত হাজতে রাখা যায়। অন্যান্য মামলার ক্ষেত্রে যে সময়সীমা ৯০ দিন। আলিগড়ের বরিষ্ঠ পুলিশ আধিকারিক আকাশ কুলহরি বলেন, এনএসএ ধারার পাশাপাশি ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে বিচারের জন্যও দ্রুত তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy