—ফাইল চিত্র।
সামনে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন। করোনা মোকাবিলা থেকে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সব কিছু নিয়েই প্রশ্নের মুখে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। দলের মধ্যে থেকেও উঠছে বিদ্রোহী স্বর। এই পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ফের সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমে ধরপাকড় শুরু করায়, বিরোধীরা ‘পুলওয়ামা’ কৌশলের পুনরাবৃত্তি খুঁজে পাচ্ছেন। তার মধ্যে এসপি নেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের একটি ‘প্রতিক্রিয়া’ নিয়ে বিজেপি যে ভাবে প্রচার শুরু করেছে, তাতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযানের পিছনে রাজনৈতিক কৌশলটি আরও সামনে এসেছে।
যোগী আদিত্যনাথ সম্প্রতি দিল্লি এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে যান। তিনি ফিরে যাওয়ার পরই নতুন আক্রমণাত্মক বিজেপিকে দেখা যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশে। প্রথম পর্যায়ে রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি হয়েছিল। কিন্তু পরের দুই পর্যায়ে বিরোধীদের আর মাঠে খুঁজে পাওয়া যায়নি। নির্বাচনে মনোনয়ন পেশ থেকে প্রচার, এমনকি ভোটের দিনেও লাগামছাড়া মারধর-সন্ত্রাসে প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে উত্তরপ্রদেশে ‘ত্রিপুরা-কৌশল’ প্রয়োগ করে প্রায় সব আসনই ছিনিয়ে নেয় বিজেপি।
এই ‘সাফল্য’-এর ঢাক পেটানোর পরেই পুলিশের বিশেষ সন্ত্রাস-বিরোধী বাহিনী রবিবার অভিযানে নেমে লখনউ থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করে জানিয়েছে, আল কায়দার সমর্থক আনসার গজওয়াতুল হিন্দ সংগঠনের সদস্য এরা, ১৫ অগস্টের আগে ট্রেন বা বাজারে বিস্ফোরণের ফন্দি আঁটছিল। এদের ডেরা থেকে বিস্ফোরক বানানোর কিছু সরঞ্জামও মিলেছে। পুলিশ আজ জানিয়েছে, এই ঘটনার পরে উত্তরপ্রদেশের সব বড় শহরে সতর্কতা জারি হয়েছে। সাধারণ মানুষকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বাহরাইচ জেলার মাহসি কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক সুরেশ্বর সিংহ ঘোষণা করেছেন, তাঁকে খুন করার হুমকি দিচ্ছে কে বা কারা। ইন্টারনেটে এই হুমকি আসছে বলে পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন। এর মধ্যেই সোমবার আবার কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ মেরঠ থেকে এক জনকে গ্রেফতার করে জানিয়েছে, সে খলিস্তানি সংগঠনকে আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করত। সব মিলিয়ে, ভোটের মুখে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইকে সামনে এনে সাজো সাজো রব তুলে দিয়েছে যোগী প্রশাসন। বিজেপির আইটি সেল তার প্রচারও শুরু করেছে, সঙ্গে অন্য কৌশলও। যেমন অখিলেশের ভিডিয়ো।
রবিবার দুই জঙ্গি গ্রেফতার হওয়ার খবরের সঙ্গেই অখিলেশের প্রতিক্রিয়া বলে একটি ভিডিয়ো প্রচার করা হচ্ছে, যাতে এসপি নেতা বলছেন— ‘আমি উত্তরপ্রদেশ পুলিশ, বিশেষ করে বিজেপি সরকারকে বিশ্বাস করতে পারছি না।’ অজস্র মিথ্যা তথ্য প্রচারে অভিযুক্ত বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় সামাজিক মাধ্যমে মন্তব্য করেছেন, ‘অখিলেশ প্রথমে ভ্যাকসিনকে ভরসা করেননি। এখন বলছেন, রাজ্য পুলিশের জঙ্গি-বিরোধী অভিযানে তাঁর বিশ্বাস নেই। যদি তিনি রাষ্ট্র বা রাজ্যের প্রশাসনকেও বিশ্বাস না-করেন, তা হলে মুখ্যমন্ত্রী হতে চান কী ভাবে? ঘরে বসে থাকুন!’ অন্য বিজেপি নেতারাও একই লাইনে টুইট করেন। কিন্তু, এসপি-র নেতারা দেখাচ্ছেন, অখিলেশ এই মন্তব্য করেছেন রবিবার সকালে অন্য প্রসঙ্গে, পুলিশ যখন জঙ্গি ধরার কথা ঘোষণাও করেনি। বিজেপি দু’টিকে মিশিয়ে অসত্য প্রচারে নেমেছে।
কিন্তু জঙ্গি-বিরোধী এই অভিযোনের উদ্দেশ্য নিয়ে যে তাঁদের সন্দেহ রয়েছে, বিরোধীরা তা বলছেন। তাঁদের দাবি, এর আড়ালে সরকারের পাঁচ বছরের সব ব্যর্থতা ঢাকা দিতে নেমেছে বিজেপি। মায়াবতীও এ দিন টুইটে বলেছেন, সন্ত্রাসবাদী ধরা পড়ার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভয়ঙ্কর ঘটনা! কিন্তু তার সময় নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ভোট এলেই কেন এই অভিযান শুরু হয়?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy