রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়াড়ির সঙ্গে সাক্ষাতে উদ্ধব ঠাকরে।—ছবি এএফপি।
কার্যত নজিরবিহীন! ‘মুখ্যমন্ত্রীহীন’ মহারাষ্ট্রে আজ শপথ নিলেন নবনির্বাচিত বিধায়কেরা।
৮০ ঘণ্টা মুখ্যমন্ত্রিত্বের পরে গত কালই ইস্তফা দিয়েছেন বিজেপির দেবেন্দ্র ফডণবীস। আপাতত তিনি কার্যনির্বাহী মুখ্যমন্ত্রী। কাল সন্ধ্যা ৬টা ৪০-এ শিবাজি পার্কে শপথ নেবেন উদ্ধব ঠাকরে। উপমুখ্যমন্ত্রী হবেন এনসিপির জয়ন্ত পাটিল। স্পিকার পদ পাবে কংগ্রেস। সেই দৌড়ে রয়েছেন পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ। সূত্রের খবর, মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে ঠিক হবে স্পিকার নির্বাচনের দিন।
এ দিকে, বাকি মন্ত্রিসভার চেহারা কী হবে, তা ঠিক করতে আজ ওয়াই বি চহ্বাণ সেন্টারে বৈঠকে বসেন উদ্ধব, এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার ও কংগ্রেসের আহমেদ পটেল এবং কে সি বেণুগোপাল। তিন দলের সম্মতিতে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি। যেখানে কৃষকদের ঋণ মাফ ও ভূমিপুত্রদের চাকরিতে সংরক্ষণের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, শিবসেনা ১৫টি ও বাকি দু’দল ১৩টি করে দফতর পেতে পারে। যদিও অন্য একটি সূত্রের মতে, যে হেতু শিবসেনা ও এনসিপি প্রায় সমসংখ্যক আসন পেয়েছে, তাই দু’দলকে ১৫টি করে দফতর দেওয়া হবে। কংগ্রেস পাবে ১৩টি দফতর।
গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক পাওয়ার দৌড়ে রয়েছেন উদ্ধব-পুত্র আদিত্য। বিদ্রোহ করে যিনি তিন দলের জোট সরকার গড়ার সম্ভাবনা প্রায় শেষ করে দিয়েছিলেন, সেই অজিত পওয়ার আজ ফের শরদ শিবিরে। সূত্রের খবর, ভাইপোকে ক্ষমা করে দিয়েছেন কাকা শরদ। তাই অজিতও মন্ত্রিত্বের দৌড়ে রয়েছেন বলেই দাবি করেছেন এনসিপি সূত্র। যদিও দলের অন্য অংশের মতে, ভাইপোকে ক্ষমা করলেও আপাতত তাঁকে কিছু দিতে নারাজ শরদ।
শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। মোদীকে ফোন করেছিলেন উদ্ধব নিজে। মোদী তাঁকে অভিনন্দন জানান। শাহ অবশ্য আজই জোট সরকারকে আক্রমণ করে বলেছেন, ‘‘মূলত কংগ্রেস ও এনসিপি যে-ভাবে শিবসেনাকে মুখ্যমন্ত্রী পদের লোভ দেখিয়ে সমর্থন কিনেছে, তা ঘোড়া কেনাবেচা ছাড়া কিছু নয়।’’
শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য আজ সনিয়া গাঁধীকে ফোন করেন শরদ। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি চূড়ান্ত সম্মতি না-দেওয়ায় পুত্র আদিত্যকে রাতেই দিল্লি পাঠান উদ্ধব, সনিয়া ও মনমোহন সিংহকে আমন্ত্রণ জানাতে। উদ্ধব চান কালকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকুন সনিয়া। কারণ কর্নাটকের মতো তাঁর শপথ মঞ্চকেও বিরোধীদের শক্তি প্রদর্শনের ক্ষেত্র হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন শিবসেনা প্রধান।
সেই কারণে আমন্ত্রিতদের তালিকায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দিল্লি ও সব কংগ্রেস-শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিন, অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু প্রমুখকে রাখা হয়েছে। তবে মমতার কাছে সরকারি ভাবে আমন্ত্রণ আসার খবর এ দিন রাত পর্যন্ত নবান্ন সূত্রে মেলেনি। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রের মতে, আমন্ত্রণ এলেও এত অল্প সময়ের মধ্যে তাঁর পক্ষে হয়তো মুম্বই যাওয়া সম্ভব হবে না।
তবে মুম্বইকে বেঙ্গালুরু করে তোলার ব্যাপারে সনিয়ার সমস্যা তিনটি। প্রথমত, কর্নাটকে নেপথ্য কান্ডারি ছিলেন সনিয়া। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সেই ভূমিকা নিয়েছেন শরদ। দ্বিতীয়ত, কর্নাটকে কংগ্রেস ও জেডিএস দুই দলের অন্তঃকলহে জোট সরকার ভেঙে গিয়েছে। মহারাষ্ট্রেও তার পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তৃতীয়ত, শিবসেনার সঙ্গে হাত মেলানো নিয়ে আপত্তি ছিল দলের একাংশের। বিজেপিকে আটকাতে সেই আপত্তি উপেক্ষা করলেও উদ্ধবের সঙ্গে সনিয়া-রাহুলের এক মঞ্চে থাকা উচিত কি না, তা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে পূর্ণমাত্রায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy