ছবি রয়টার্স।
ওষুধ খেলে সুস্থ হচ্ছেন মাত্র অর্ধেক রোগী। দশ শতাংশ রোগী পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার কারণে ছেড়ে দিচ্ছেন ওষুধ খাওয়া। মাইগ্রেনের রোগীদের তাই সুস্থ হতে ওষুধের সঙ্গে যোগাভ্যাস করারও পরামর্শ দিচ্ছে এমসের ‘সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটিভ মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ’ (সিআইএমআর)। যোগাভ্যাসের মাধ্যমে মাইগ্রেনের রোগীদের সুস্থ করে তোলা নিয়ে সম্প্রতি একটি পরীক্ষা চালায় তারা। সম্প্রতি সেই পরীক্ষার কথা প্রকাশিত হয়েছে ‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব নিউরোলজি’ সংস্থার জার্নাল ‘নিউরোলজি’-তে।
এমসের নিউরোলজি বিভাগের চিকিৎসক রোহিত ভাটিয়া ও আনন্দ কুমার ও সিআইএমআরের অধ্যাপক গৌতম শর্মার নেতৃত্বে ওই পরীক্ষাটি হয়। হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের ওপিডি থেকে ১১৪ জন মাইগ্রেন রোগীকে দু’টি দলে ভাগ করা হয়। প্রথম দলটিকে শুধু ওষুধ দেওয়া হয়। দ্বিতীয় দলটিকে ওষুধ দেওয়ার পাশাপাশিই শেখানো হয় যোগব্যায়াম।
যার মধ্যে ছিল শ্বাস নেওয়ার নানাবিধ কৌশল ও মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার বিভিন্ন আসন। অধ্যাপক গৌতম শর্মা বলেন, ‘‘ডি-স্ট্রেস হওয়ার বিভিন্ন আসন শেখানো হয়। যা শরীর ও বিশেষ করে মস্তিষ্কের পেশির টেনশন কমিয়ে থাকে। ব্যায়ামের ফলে এন্ডোপিন নামে একটি রাসায়নিক ক্ষরণ হয়, যা মনকে আনন্দে রাখে। মানসিক চাপ কমায় মাইগ্রেনের ব্যথা কম হয়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।’’
প্রথম এক মাস যোগ-শিক্ষকের কাছে সপ্তাহে তিন দিন করে প্রশিক্ষণ। তার পরের দু’মাস সপ্তাহে পাঁচ দিন এক ঘণ্টা করে বাড়িতে অনুশীলন। এ ভাবেই যোগাভ্যাস করেছিলেন দ্বিতীয় দলের রোগীরা। তিন মাসের শেষে দেখা যায়, শুধুমাত্র ওষুধ-নির্ভর দলের চেয়ে এই দলের রোগীদের অনেক কম মাইগ্রেনের ব্যথা হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, যোগচর্চা করার দলটির রোগীদের প্রথম মাসে গড়ে ৯.১ বার মাইগ্রেনের ব্যথা চাগাড় দিলেও অন্তিম মাসে তা ৪৮ শতাংশ কমে ৪.৭ বারে নেমে এসেছে। আর ওষুধ-নির্ভর দলের রোগীদের প্রথম মাসে ৭.৭ বার ব্যথা হলেও শেষ মাসে তা মাত্র ১২ শতাংশ কমে ৬.৮ বারে নেমেছে। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, মাইগ্রেনের অনেক রোগীর দীর্ঘদিন ধরে রোজ ওষুধ তো চলেই, সেই সঙ্গে আচমকা যন্ত্রণা হলে তা কমাতে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধও মুড়ি-মুড়কির মতো খেতে থাকেন তাঁরা। এমসের পরীক্ষাটিতে দেখা গিয়েছে, ব্যথার ওষুধ খাওয়া ৪৭ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে যোগাভ্যাস করা দলটি। ফলে ওই রোগীদের ওষুধ খরচ অনেকটাই কমে গিয়েছে। সেখানে অন্য দলটি ব্যথার ওষুধ খাওয়া কমিয়েছে মাত্র ১২ শতাংশ।
এমসের মিডিয়া কোঅর্ডিনেটর বিশ্বনাথ আচারিয়া জানান, মাইগ্রেনের চিকিৎসায় যোগাসানের প্রভাব সংক্রান্ত সব থেকে বড় মাপের পরীক্ষা ছিল এটি। ওই পরীক্ষা থেকে স্পষ্ট, দ্বিতীয় দলের ওষুধ-নির্ভরতা অনেক কমে এসেছে। কম ওষুধের ফলে শরীরে কমেছে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, দীর্ঘ দিন যোগচর্চা চালিয়ে গেলে ভবিষ্যতে ওষুধের প্রয়োজন না-ও পড়তে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy