যন্তর মন্তরে চিকিৎসকদের প্রতিবাদ। ছবি: সংগৃহীত।
আর জি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে যন্তর মন্তরে বহির্বিভাগ খুলে রোগী দেখলেন এমসের আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা।
গত ক’দিনের মতো আজও রাজধানীর অধিকাংশ হাসপাতালে কর্মবিরতি জারি ছিল। ফলে বহু রোগী হাসপাতালে এসে ফিরে যান। তবে আর জি করের ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ জানালেও যন্তর মন্তরে প্রতীকী ওপিডি খুলে চিকিৎসা করেন এমসের চিকিৎসকেরা। আজ চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় সুরক্ষা আইনের দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে ইউনাইটেড ডক্টরস ফ্রন্ট অ্যাসোসিয়েশন (ইউডিএফএ)। যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুক্তি, চিকিৎসক নিগ্রহের বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ২৬টি রাজ্যে ইতিমধ্যেই আইন রয়েছে। তাই এই বিষয়ে আলাদা করে আইন আনার পক্ষপাতী নয় কেন্দ্রীয় সরকার।
এমসের সার্বিক নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে আজ দু’টি কমিটি গড়া হয়েছে। প্রথম কমিটিতে ১৫ জন সদস্যের মধ্যে এমসের চিকিৎসক, ফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (এফএআইএমএ) সদস্য ছাড়াও নার্স সংগঠনের প্রতিনিধিরা থাকবেন। ওই কমিটি মূলত এমসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি দেখবে। দ্বিতীয় কমিটি গড়া হয়েছে বিভিন্ন বিভাগের ডিনদের নিয়ে। যারা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সামগ্রিক রিপোর্ট দেবেন।
চিকিৎসকদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে গতকাল জাতীয় টাস্ক ফোর্স গঠন করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় আন্দোলনরত চিকিৎসকদের দ্রুত কাজে যোগ দিতে অনুরোধ করেছেন। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য এফএআইএমএ-র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাতীয় টাস্ক ফোর্সের উচিত বেশি সংখ্যক চিকিৎসকের অভিজ্ঞতা শোনা। মহিলা চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতা যাতে বেশি করে শোনা হয়— সেই দাবিও করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক আজ জানিয়েছে, জাতীয় টাস্ক ফোর্সকে বিচার্য বিষয় হিসেবে বেশ কয়েকটি দিককে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। তার মধ্যে নিরাপত্তার প্রশ্নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুর সবচেয়ে বেশি হয়— এমন ওয়ার্ড, যেমন জরুরি বিভাগ ও আইসিইউ-এ বেশি করে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েনের প্রয়োজন রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তার প্রশ্নে প্রতিটি হাসপাতালে প্রবেশের সময়ে ব্যক্তি ও ব্যক্তির সঙ্গে রাখা ব্যাগের স্ক্রিনিং বাধ্যতামূলক করা যায় কি না, যাঁরা হাসপাতালে প্রবেশ করছেন, তাঁরা নেশাগ্রস্ত কি না— সেই বিষয়গুলি দেখতে বলা হয়েছে। ভিড়কে সামলানোর জন্য রক্ষীদের প্রশিক্ষণের প্রসঙ্গও রয়েছে বিচার্য বিষয়ে। এ ছাড়া, প্রতিটি হাসপাতালে সুস্থ কাজের পরিবেশ গড়ে তোলার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। পরিকাঠামোগত দিক থেকে পুরুষ চিকিৎসক ও পুরুষ নার্স এবং মহিলা চিকিৎসক ও মহিলা নার্সের জন্য আলাদা-আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। সেখানে পানীয় জলের ব্যবস্থা ও নিরাপত্তাজনিত কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা দেখতে বলা হয়েছে। গোটা হাসপাতালকে সিসিটিভি দিয়ে মুড়ে দেওয়া, প্রতিটি কোণায় যথেষ্ট আলোর ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। চিকিৎসকদের হস্টেল থেকে হাসপাতালে রাতে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা সম্ভব কি না, সেই দিকটিতে নজর দিতে বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, এমপ্লয়ি সেফটি কমিটি গঠন, পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy