দেশে তৈরি প্রথম করোনার টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগে অংশ নিচ্ছে দিল্লির এইমস। ছবি: টুইটার থেকে
ভারতে তৈরি প্রথম করোনার টিকা কোভ্যাক্সিন মানবদেহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমোদন আগেই পেয়েছে। এ বার তাতে অংশ নিচ্ছে দিল্লির এইমস হাসপাতাল। শনিবার হাসপাতালের এথিকস কমিটি এই টিকা প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক ১০০ জনের উপর প্রয়োগ করা হবে এই টিকা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই অনেকে টিকা নিতে চেয়ে আবেদন করেছেন। আগামিকাল সোমবার থেকেই শুরু হচ্ছে তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি (এনআইভি)-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে দেশীয় প্রযুক্তিতে করোনাভাইরাসের টিকা কোভ্যাক্সিন তৈরি করেছে হায়দরাবাদের ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা ভারত বায়োটেক। ইঁদুর ও খরগোশের উপর পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফল আশানুরূপ হওয়ার পর সেই টিকা মানবদেহে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)। প্রথম ধাপে মোট দেশের মোট ১২টি প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হয়েছে। টিকা প্রয়োগ করা হবে ৩৭৫ জনের উপর। আর প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ মিলিয়ে সেই সংখ্যা ১০০০।
এই ৩৭৫ জনের দিল্লির এইমস থেকেই স্বেচ্ছায় টিকা নিতে চান এমন ১০০ জনকে দেওয়া হবে। শনিবার এইমস-এর এথিকস কমিটি সেই অনুমোদন দিয়েছে। হাসপাতালের সেন্টার ফর কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক সঞ্জয় রাই বলেছেন, ‘‘দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি কোভ্যাক্সিন মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে হাসপাতালের এথিকস কমিটি। কোনও কো-মর্বিডিটি নেই এবং করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কোনও নজির নেই এমন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ১৮ বছরের বেশি এবং ৫৫ বছরের কম বয়সীরা এই টিকা নিতে পারবেন।’’
আরও পডু়ন: ২৪ ঘণ্টায় দেশে আক্রান্ত প্রায় ৩৯ হাজার, মহারাষ্ট্রে মোট সংক্রমণ তিন লক্ষ ছাড়াল
টিকা নিতে চাইলে কী করতে হবে, কী ভাবে আবেদন করতে হবে, সে বিষয়েও বিস্তারিত জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। Ctaiims.covid19@gmail.com —এই ইমেলে আবেদন করা যাবে। পাশাপাশি ৭৪২৮৮৪৭৪৯৯ এই নম্বরে ফোন বা এসএমএস করেও আবেদন জানাতে পারবেন টিকা নিতে ইচ্ছুকরা। হাসপাতালের ওয়েবসাইটেও এই সংক্রান্ত তথ্য আপলোড করা হয়েছে। সঞ্জয় রাই বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই অনেকে টিকা নিতে চেয়ে স্বেচ্ছায় আবেদন করেছেন। সোমবার থেকেই তাঁদের স্ক্রিনিং এবং টিকা নেওয়ার জন্য যাবতীয় স্বাস্থ্যপরীক্ষা শুরু করা হবে।’’
আরও পড়ুন: দিল্লিতে করোনার অশ্বমেধের ঘোড়া কি আটকে দিলেন অমিত শাহ?
দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি কোভ্যাক্সিন ছাড়াও কাডিলা হেল্থকেয়ারের তৈরি একটি টিকারও প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন দিয়েছ ডিসিজিআই। এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য দেশের যে ১২টি কেন্দ্র নির্ধারিত হয়েছে, তাদের ডিরেক্টরকে চিঠি দিয়ে এই পরীক্ষমূলক প্রয়োগের প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে করা হচ্ছে এবং সরকারের শীর্ষস্তরে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছ। তিনি আরও বলেন, যে হেতু বিশ্বের টিকা প্রস্তুতকারী দেশগুলির মধ্যে ভারত অগ্রগণ্য, তাই করোনার টিকার ক্ষেত্রেও দেশের নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে দ্রুত এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সম্পূর্ণ করা এবং পুরো প্রক্রিয়া শেষ করার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy