প্রশান্ত কিশোর ও এম কে স্ট্যালিন। —ফাইল চিত্র
বিহারে নীতীশ কুমার থেকে অন্ধ্রপ্রদেশে জগনমোহন রেড্ডি, কিংবা হালে পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁর সঙ্গে তাঁর চুক্তি হয়েছে, তাঁকে পৌঁছে দিয়েছেন অন্য উচ্চতায়। সেই সাফল্যের হাত ধরেই এ বার কি দক্ষিণে পাড়ি দিচ্ছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর? হাত ধরছেন দ্রাবিড় মুনেত্রা কাজাঘম (ডিএমকে)-এর? ডিএমকে সূত্রে খবর, দলের নেতাদের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি (আই প্যাক)-এর কথাবার্তা প্রায় চূড়ান্ত।
তামিলনাড়ুতে সম্প্রতি ভিকিরাভান্ডি এবং নানগুনেরি— দুটি কেন্দ্রের উপনির্বাচন হয়েছে। তাতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লড়াই করেও জয় আসেনি ডিএমকের। দু’টিতেই জিতেছে এডিএমকে। ২০২১ সালে তামিলনাড়ু বিধানসভার ভোট। বাকি আর বছর দেড়েক। তাই আগে থেকেই জমি তৈরি করতে আই প্যাক-এর সঙ্গে গাঁটছড়া বাধতে পারে ডিএমকে।
২০২১ সালে তামিলনাড়ুর নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রথম সে রাজ্যে ভোট হবে জয়ললিতা এবং করুণানিধির অনুপস্থিতিতে। দক্ষিণী সুপারস্টার কমল হাসান নিজের দল গড়েছেন মাক্কাল নিধি মাইয়াম (এমএনএম)। আরেক সুপারস্টার রজনীকান্তও খুব শীঘ্রই দল ঘোষণা করতে চলেছেন বলে খবর। আবার তামিল রাজনীতিতে এমনও গুঞ্জন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে হাত মেলাতে পারেন দুই সপারস্টার রজনীকান্ত ও কমাল হাসান। রাজ্যে ক্ষমতায় এডিএমকে। এই তিন শক্তির সঙ্গে টক্করে আরও পিছনের সারিতে চলে যেতে পারে ডিএমকে। সেই আশঙ্কা থেকেই আগেভাগে রণকৌশল তৈরির জন্যই পিকে-র সঙ্গে চুক্তি করতে পারেন এম কে স্টালিন।
আরও পড়ুন: মোদীর উচিত ‘ছোটভাই উদ্ধব’কে সহায়তা করা, সামনায় মন্তব্য শিবসেনার
জটিলতা শুধু একটি ক্ষেত্রেই রয়েছে। বর্তমানে কমল হাসানের দল এমএনএম-এর সঙ্গে কাজ করছেন প্রশান্ত কিশোর। চুক্তি রয়েছে ২০২০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। সেই চুক্তি বাড়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই আই প্যাক এবং এমএনএম সূত্রে খবর। কিন্তু এখনই চুক্তি করলে একই রাজ্যে দুই দলের সঙ্গে চুক্তি করা কার্যত অসম্ভব দুই পক্ষের ক্ষেত্রেই। তবে এমএনএম-এর সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেই আইপ্যাক-ডিএমকে চুক্তি চূড়ান্ত হতে পারে বলেই খবর।
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করে তাঁকে বারবার সাফল্য এনে দিয়েছেন পিকে। এমনকি, নীতীশের দলের রাজনৈতিক পদেও ছিলেন প্রশান্ত। কিন্তু নীতীশের সঙ্গে মতবিরোধের পর দল ছেড়ে দেন তিনি। এর পর গত লোকসভা ভোটের আগে অন্ধ্রপ্রদেশে জগনমোহন রেড্ডির সঙ্গে চুক্তি হয় তাঁর। অন্ধ্রপ্রদেশে আবার লোকসভা এবং বিধানসভা ভোট একসঙ্গে হয়েছিল। পিকের হাত ধরেই লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটে চন্দ্রবাবু নায়ডুর দল টিডিপি-কে কার্যত ধুয়ে মুছে সাফ করে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন জগন।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে রাজীবকে গ্রেফতারের আবেদন সিবিআইয়ের, পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে নোটিস জারি করল আদালত
গত লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক সাফল্য পায় বিজেপি। তৃণমূলের আসন কমে দাঁড়ায় ৩৪ থেকে ২২-এ। অন্য দিকে বিজেপি ২ থেকে আসন বাড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছে ১৮-তে। এই বিপর্যয় কাটাতেই ডাক পড়ে পিকের। বৃহস্পতিবারই তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়েছে। কালিয়াগঞ্জ এবং খড়গপুরে লোকসভা ভোটে বিপুল ব্যবধানে এগিয়ে থেকেও উপনির্বাচনে হার হয়েছে বিজেপির। করিমপুর কেন্দ্রেও ব্যবধান বেড়েছে। মাত্র ছ’মাসের মধ্যেই এ ভাবে হারানো জমি পুনরুদ্ধারের কারিগর পিকে এবং তাঁর সংস্থা আই প্যাক বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ডিএমকে-আইপ্যাক কথাবার্তা চলছিলই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সাফল্যের পরে ডিএমকে-র কাছে আরও কদর বেড়েছে পিকের।
ভুল সংশোধন: এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় ভুলবশত বলা হয়েছিল প্রশান্ত কিশোর চুক্তি করছেন কে পালানিস্বামীর সঙ্গে। কিন্তু তিনি চুক্তি করছেন এম কে স্ট্যালিনের সঙ্গে। এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy