সাংবাদিকদের জন্য বিশেষ নির্দেশিকা জারি করার পথে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
গ্যাংস্টার থেকে নেতা হওয়া আতিক আহমেদ এবং তাঁর ভাই আশরফকে শনিবার রাতে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে পুলিশি ঘেরাটোপের মধ্যে গুলি করে খুন করেন তিন দুষ্কৃতী। সেই সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন আতিক। পুলিশ সূত্রে দাবি, সাংবাদিকের ছদ্মবেশেই আতিকের একেবারে কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন আততায়ীরা। সে কথা মাথায় রেখে এ বার সাংবাদিকদের জন্য গাইডলাইন প্রকাশের পথে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
যে কোনও ঘটনায় একেবারে সামনের সারিতে থাকেন সাংবাদিকরা। এ বার অপরাধ করতে সেই সাংবাদিকদের পেশাকেই ঢাল করার অভিযোগ আতিকের খুনিদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে খবর, রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ প্রয়াগরাজের একটি সরকারি হাসপাতালে আনা হয় আতিক এবং আশরফকে। পুলিশের জিপ থেকে নেমে হাঁটতে হাঁটতে আতিকরা যাচ্ছিলেন হাসপাতালের দিকে। আতিককে তখন কার্যত ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা। আতিকের মুখের সামনে তখন একাধিক বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের বুম (যে মাইক্রোফোনে কথা বললে তা ক্যামেরায় রেকর্ড করা যায়)।
সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকরা জানাচ্ছেন, তাঁদের বুমের সঙ্গেই ছিল আরও একটি বুম, ‘এনসিআর নিউজ’-এর। গুলি চালনার ঘটনার পর অকুস্থলেই ওই বুম এবং ব্যাটারি ছাড়া ভিডিয়ো ক্যামেরা উদ্ধার হয়। যদিও এই নামের কোনও চ্যানেলের কথা তাঁরা অনেক ভেবেও মনে করতে পারলেন না। এনসিআরের অর্থ কি ‘ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়ন’ বা জাতীয় রাজধানী ক্ষেত্র? তা যদি হয়, তাহলে প্রশ্ন ওঠে, দিল্লি এলাকা থেকে কেন প্রয়াগরাজে আসবে কোনও স্থানীয় সংবাদমাধ্যম!
সাধারণত, কোনও বিপদসঙ্কুল জায়গায় খবর করতে গেলে সাংবাদিকদের পৃথক জ্যাকেট দেওয়া হয়। যাতে স্পষ্ট অক্ষরে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের পরিচয় লেখা থাকে। গোটা বিশ্বে এটাই দস্তুর। কিন্তু প্রয়াগরাজের মতো জনবহুল শহরে রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় তেমন কিছু করার কথা মাথায় আসেনি পুলিশ প্রশাসনের। সম্ভবত প্রশাসন আঁচ করতে পারেনি এমন কোনও ঘটনা আদৌ ঘটতে পারে। কিন্তু শনিবার রাতের ঘটনা ঘুম ভাঙিয়েছে অমিত শাহের মন্ত্রকের। সূত্রের খবর, সাংবাদিকদের কী কী করতে হবে তা জানিয়ে একটি পৃথক ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’ (এসওপি) প্রকাশ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, অমিত শাহের মন্ত্রক এ বিষয়ে একটি নির্দেশিকা এবং একটি এসওপি জারি করবে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই তা চূড়ান্ত করে ফেলা হবে। একটি সূত্রের দাবি, সংশ্লিষ্ট সমস্ত পদাধিকারীদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা বসতে চলেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেখানে খবর করার সময় সাংবাদিকদের কিছু বিশেষ নিয়ম মেনে চলার কথা বলা হবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই ভাবনাকে সদর্থক ভাবেই নিচ্ছেন সাংবাদিকদের একাংশ। পাশাপাশি প্রশ্নও উঠছে, সাংবাদিকদের মধ্যে কেউ ছদ্মবেশে লুকিয়ে থাকলে তা ধরার দায়িত্ব কি পুলিশের নয়? তা হলে কি পুলিশের দায় লাঘব করে তা দায়িত্ব হিসাবে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে সাংবাদিকদের উপর?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy