Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

জঙ্গিমুক্ত পাঠানকোট, মোদীকে ফোন শরিফের

সাড়ে চুরাশি ঘণ্টার ‘অপারেশন’ শেষ। মুক্ত পাঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটি। শনিবার ভোর পৌনে চারটেয় শুরু হওয়া জঙ্গি-দমন অভিযানে দাঁড়ি পড়ল আজ বিকেল সওয়া চারটেয়। পাঠানকোটেই খবরটা জানালেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকর।

যুদ্ধজয়। মঙ্গলবার পাঠানকোটে অভিযান শেষে জওয়ানরা। ছবি: পিটিআই।

যুদ্ধজয়। মঙ্গলবার পাঠানকোটে অভিযান শেষে জওয়ানরা। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:০৯
Share: Save:

সাড়ে চুরাশি ঘণ্টার ‘অপারেশন’ শেষ। মুক্ত পাঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটি। শনিবার ভোর পৌনে চারটেয় শুরু হওয়া জঙ্গি-দমন অভিযানে দাঁড়ি পড়ল আজ বিকেল সওয়া চারটেয়।

পাঠানকোটেই খবরটা জানালেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। জানালেন, ছয় জঙ্গি মারা পড়লেও তল্লাশি চলছে। এবং মেনে নিলেন, গলদ ছিল সুরক্ষায়। পর্রীকরের কথায়, ‘‘বায়ুসেনা ঘাঁটির সুরক্ষা ব্যবস্থায় ত্রুটির সুযোগ নিয়েছে জঙ্গিরা। দায় কার, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সব ক’টি সেনা ছাউনির সুরক্ষা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করা হবে।’’

পর্রীকরের সাংবাদিক বৈঠকের ঘণ্টাখানেক আগে আরও একটা ঘটনা ঘটেছে। নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। আশ্বাস দিয়েছেন, পাঠানকোট হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে তাঁর সরকার। সাম্প্রতিক অতীতে দুই প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতার নজির একাধিক। তবু কোনও জঙ্গি-হামলার পর সাহায্যের বার্তা দিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী ফোন করছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে— এমন নজির স্মরণকালে নেই!

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের একাংশ অবশ্য সংশয়ী। তাঁদের বক্তব্য, ২৬/১১-র অন্যতম চক্রী জাকিউর রহমান লকভির কণ্ঠস্বরের নমুনা বারবার ইসলামাবাদের কাছে চেয়েও পায়নি দিল্লি। আজও সাংবাদিক বৈঠকে পর্রীকর বলেছেন, এই হামলায় হাত রয়েছে পাকিস্তানের। তা ছাড়া গোয়েন্দারা আগেই জেনেছেন, হামলার আগে গুরুদাসপুরের এসপি সালবিন্দর সিংহের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে সেটি থেকে পাকিস্তানে চার বার ফোন করেছিল জঙ্গিরা। ওই ফোন ঠিক কাদের কাছে গিয়েছিল, তা জানতে পাকিস্তানের সাহায্য চাইবে বলে ঠিক করেছে দিল্লি। এসপি-র মোবাইলের কল-লিস্টও তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু আদৌ কতটা সাহায্য মিলবে, অনেকেই তা নিয়ে নিশ্চিত নন।

ঠিক যে ভাবে এখনও নিশ্চিত বলা হচ্ছে না যে, আর কোনও জঙ্গি বেঁচে নেই। ১১০০ একর এলাকা পুরোদস্তুর তল্লাশির পরেই সম্ভবত সেই ঘোষণা হবে। সেনা সূত্র বলছে, সরাসরি গুলির লড়াই চলেছে মাত্র ৩৬ ঘণ্টা। বাকি সময়টা মূলত তল্লাশিই হয়েছে। তবে যে ভাবে জঙ্গিদের মাত্র ‘আড়াইশো-বাই-আড়াইশো মিটার’ এলাকায় কোণঠাসা করে রাখা গিয়েছিল, তার প্রশংসা করেছেন পর্রীকর। তাঁর কথায়, ‘‘ওই ঘাঁটিতে বায়ুসেনা-পরিবারের প্রায় তিন হাজার লোক থাকেন। তা ছাড়া ছ’টা দেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিতে আসা সেনারাও ছিলেন। তাই ধীরেসুস্থে অভিযান চালানো হয়েছে। নিহত দু’জন জঙ্গির চেহারা চেনার অবস্থায় নেই। সেগুলির ডিএনএ পরীক্ষা হবে।’’

ইতিমধ্যেই পাঠানকোট তদন্তের ভার নিয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। আগামিকাল সেখানে যাচ্ছেন সংস্থার ডিজি শরদ কুমার। এসপি সলবিন্দরকেও জেরার কথা ভাবছেন তাঁরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তার দাবি, এসপি-র মোবাইল থেকে জঙ্গিরা পাকিস্তানে তাদের পাণ্ডার সঙ্গে তিন বার কথা বলেছিল। এক বার এক জঙ্গি কথা বলেছিল তার মায়ের সঙ্গে। ওই কর্তার কথায়, ‘‘ধরে নেওয়া যায়, পাকিস্তানের ওই পাণ্ডা তার সিমকার্ড পাল্টে ফেলেছে। কিন্তু ওই মহিলার পরিচয় এখনও হয়তো জানা সম্ভব। তাতে অনেক জট খুলবে।’’

আজ দু’বার পিছিয়ে যায় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠক। দফায় দফায় শোনা যায় বিস্ফোরণের শব্দ। পরে সেনার তরফে বলা হয়, জঙ্গিদের অব্যবহৃত বিস্ফোরকগুলি ফাটিয়ে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হচ্ছিল। পর্রীকরও বলেন, ‘‘আরও এক জঙ্গির দেহে গ্রেনেড বেঁধে ফাঁদ পাতা ছিল। ইতিমধ্যেই এক জন কম্যান্ডো গ্রেনেড নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে মারা গিয়েছেন। তাই ঝুঁকি নেওয়া হয়নি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy