থমথমে কাশ্মীর। ফাইল চিত্র।
স্বাধীনতা দিবসও কি ‘বন্দি’ দশায় কাটাবে কাশ্মীর! কেন্দ্রীয় সরকার যখন কাশ্মীরের পরিস্থিতি ‘শান্ত’ বলে তুলে ধরতে চাইছে, তখন কাশ্মীর থেকে ঘুরে আসা সমাজ-কর্মী ও রাজনৈতিক কর্মীদের একটি দল বলছে, কাশ্মীর এখন কার্যত জেলখানা। নাগরিকরাই সেখানে বন্দি।
এই প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য, অর্থনীতিবিদ জঁ দ্রেজ-এর দাবি, সরকারের তরফে যা বলা হচ্ছে, আসলে কাশ্মীরে পুলিশ, সেনা, আধাসেনার সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি। দ্রেজ বলেন, ‘‘এক-এক জন কাশ্মীরির জন্য মাথা পিছু চার জন করে আধাসেনা রয়েছে। কাশ্মীরে এমন কোনও গলি নেই, যেখানে আধাসেনা নেই।’’
দ্রেজ ছাড়াও এই প্রতিনিধিদলে ছিলেন সিপিআই (এম-এল) নেত্রী কবিতা কৃষ্ণণ, সিপিএম নেত্রী মাইমুনা মোল্লা, সমাজকর্মী বিমলভাই। সেখানকার পরিস্থিতি তুলে ধরতে আজ দিল্লি প্রেস ক্লাবে ১০ মিনিটের একটি ভিডিয়ো তৈরি করে এনেছিলেন তাঁরা। কিন্তু ‘কাশ্মীর কেজড্’ নামক সেই ফিল্ম দেখানোর অনুমতি মেলেনি। দ্রেজ বলেন, ‘‘প্রেস ক্লাব আমাদের ১০ মিনিটের ফিল্ম দেখানোর অনুমতি দেয়নি।’’ প্রেস ক্লাবের তরফে যদিও দাবি, তাঁরা কাউকে কিছু বারণ করেননি। তা হলে ছবি দেখানো গেল না কেন? কবিতা বলেন, প্রেস ক্লাব কর্তৃপক্ষ সরকারি ভাবে জানিয়েছিলেন, প্রোজেক্টর ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু ঘরোয়া ভাবে জানিয়েছেন, তাঁদের উপরেও যথেষ্ট নজরদারি আর চাপ রয়েছে। তাই ছবি না দেখালেই ভাল।
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ হওয়ায় কাশ্মীরের অধিকাংশ মানুষই খুশি। কিন্তু প্রতিনিধিদলের সদস্য কবিতা কৃষ্ণণের মতে, গোটা কাশ্মীরে মাত্র একজনকেই পেয়েছি যিনি খুশি। তিনি বিজেপি-র জম্মু-কাশ্মীরের মুখপাত্র অশ্বিনী কুমার চুরঙ্গু। এগারো-বারো বছর বয়সি ছেলেদেরও পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে বলে জানান কবিতা। দ্রেজ-এর অভিযোগ, বিজেপির ওই নেতা তাঁর দিকে আঙুল তুলে ‘হুঁশিয়ারি’ দিয়েছেন, ‘‘আমরা আপনাদের মতো অ্যান্টি-ন্যাশনালদের এখানে কাজ করতে দেব না।’’ মাইমুনার মতে, ৩৭০ অনুচ্ছেদ ছিল মঙ্গলসূত্রের মতো। সেটাই জলে ফেলে দিলে সম্পর্ক কেমন থাকে! কবিতার দাবি, কাশ্মীরের মানুষ মনে করছেন ৩৭০ রদ হওয়ার ফলে কাশ্মীরের সঙ্গে ভারতের সেতুবন্ধনটাই ছিন্ন হয়ে গেল।
কাশ্মীর থেকে ঘুরে আসা এই প্রতিনিধিদলের কথা শুনতে আজ দিল্লিতে বসবাসকারী কাশ্মীরি, দিল্লিতে পড়তে আসা উপত্যকার ছাত্রছাত্রীরাও ভিড় করেছিলেন। ইদ কেটে গিয়েছে। আগামিকাল স্বাধীনতা দিবস। কিন্তু কারও সঙ্গে পরিবারের কোনও যোগাযোগ নেই। ১৫ অগস্ট কী ভাবে পালন করবেন?
প্রশ্ন শুনে সদ্য গ্র্যাজুয়েট হওয়া ফায়েক ফয়জানের উত্তর, ‘‘কিছু ভাবতে পারছি না। বাড়িতে সবাই কেমন রয়েছে, খোঁজ পাচ্ছি না। দিল্লি থেকে কেউ শ্রীনগর গেলে তাঁদের সঙ্গেও আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।’’ ইউপিএসসি-র প্রস্তুতি নিতে আসা জুবের রশিদের প্রশ্ন, ‘‘১৫ অগস্টের আগে নাকি ল্যান্ডলাইন চালু হবে শুনছি। আপনারা কিছু জানেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy