অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
যেন তাঁর নাম ওঠারই কথা ছিল। অবধারিত ভাবে উঠলও।
রাজ্যের স্কুলগুলির ২৫ হাজারের বেশি শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারীর নিয়োগ বাতিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মামলায় উঠে এল কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম। বিচারপতি হিসেবে তাঁর কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুললেন চাকরিহারাদের আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা এই মামলায় অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাজকর্ম বিচার করতে বসেননি।
হাই কোর্টের বিচারপতি থাকাকালীন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ই প্রথম দুর্নীতির অভিযোগে চাকরি বাতিলের নির্দেশ শুরু করেছিলেন। ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগেও তিনি চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন। গত নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চকে এই মামলার শুনানির নির্দেশ দিয়েছিল। সেই সময়ে চাকুরিরত শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের যে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছিল, আজ সুপ্রিম কোর্ট সেই সুরক্ষাকবচই বহাল রেখেছে। তার মধ্যেই চাকরিহারাদের হয়ে আইনজীবী দুষ্যন্ত দাভে প্রাক্তন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিচার বিভাগীয় আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এখন তমলুক লোকসভায় বিজেপি প্রার্থী। দাভে বলেন, “বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় শুনানি চলার সময়ে সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেছিলেন, তিনি নিযুক্ত শিক্ষকদের চাকরি বাতিল করবেন। তাঁর রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথাও বলছিলেন। যে কোনও দল তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে বলেও মন্তব্য করেছিলেন।” দাভে এই সাক্ষাৎকার সুপ্রিম কোর্টে পড়ে শোনাতে চান বলেও জানান। তিনি বলেন, ‘‘বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিচার বিভাগীয় কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাঁর নির্দেশের ভিত্তিতেই এই গোটা মামলার ফল হয়েছে। এত জনের চাকরি গিয়েছে।’’
প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘আমরা এখানে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাজকর্ম বিচার করতে বসিনি। হাই কোর্টের বিচারপতিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে কোনও লাভ হবে না।’’ সেই খবর পেয়ে অভিজিৎ বলেছেন, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেস দু’গালে দু’টো থাবড়া খেয়েছে। আজকে সুপ্রিম কোর্টে তারা প্রধান বিচারপতির কোনও প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি। আমার নাম করে বলতে গিয়েছিল যে, জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায় বলে এক জন ছিলেন, যিনি এখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। সপাটে তাদের মুখের উপরে প্রধান বিচারপতি বলে দিয়েছেন, এটা কাদা ছোড়াছুড়ির জায়গা নয়।’’
সুপ্রিম কোর্টে দুই তরফের আইনজীবীদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি নিয়ে আজ প্রধান বিচারপতিও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। প্রায় চার ঘণ্টা শুনানির শেষবেলায় এক দিকে চাকরিহারাদের ও রাজ্য সরকারের আইনজীবী, অন্য দিকে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মামলাকারীদের আইনজীবীদের বিবাদে প্রধান বিচারপতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাই কোর্টের রায়ে কোনও স্থগিতাদেশ দেওয়া হবে না। ফের জুলাই মাসে শুনানি হবে। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘কাদা ছোড়াছুড়ি চলছে। যতই সংবেদনশীল বিষয় হোক বা রাজনৈতিক বিবদমান বিষয় হোক, যতই মতাদর্শগত ফারাক থাক, দিনের শেষে সবাই আইনজীবী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy