চাঁদমারির সভায় বক্তৃতা আসুর উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্যের। নিজস্ব চিত্র
নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বেলাগাম হিংসাত্মক বিক্ষোভে রাশ টানল অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আসু)। আর তার পরেই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করল অসমের পরিস্থিতি।
আসুর উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য আজ বিক্ষোভকারীদের সংযত থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার আবেদন জানান। গুয়াহাটির চাঁদমারিতে আসুর অনশন মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, আজই নাগরিকত্ব আইনকে চ্যালেঞ্জ করে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জমা দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘গত দু’দিন সন্ধ্যায় এই আন্দোলন অনভিপ্রেত চেহারা নিয়েছে। তা খুবই দুঃখজনক। অনাকাঙ্ক্ষিত হিংসার জেরে প্রাণ গিয়েছে দশম শ্রেণির এক ছাত্র-সহ চার জনের। তাই আপাতত আন্দোলন হবে শুধুই দিনে।’’ রবিবার শিল্পী সমাজের গণ প্রতিবাদ হবে। সোম থেকে বুধবার জেলায় জেলায় চলবে সত্যাগ্রহ।
পুলিশের মারে জখম বিজেন্দ্র পাংগিং নামে এক জন আজ মারা গিয়েছেন। গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ২৫ জন। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আটক করা হয়েছে কৃষক মুক্তি নেতা ধৈর্য কোঁয়ককে। এ দিন বিকেলে ডিব্রুগড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে গাড়ি পোড়ে, গুলিও চলে।
আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কোর্টে মহুয়া
তবে এটুকু বাদ দিয়ে নতুন করে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেনি। যদিও গুয়াহাটি, বঙাইগাঁও, মরিগাঁও, শোণিতপুর, ডিব্রুগড়ে সেনা ও আসাম রাইফেলসের আটটি কলাম মোতায়েন রয়েছে। বলবৎ রয়েছে কার্ফু। চলছে সেনা টহলও। তারই মধ্যে গুয়াহাটির বাজারে বাজারে ভিড় জমিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। ফের গোলমাল হতে পারে এই আশঙ্কায় চাল, ডাল, তেল, নুন কিনে রাখেন তাঁরা। লম্বা লাইন পড়ে ডিমের দোকানগুলিতে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসগুলিতে খাবারের টান পড়েছে। দেখা দিয়েছে জ্বালানি সঙ্কট। অক্সিজেন সিলিন্ডারের অভাব হাসপাতালগুলিতে।
কার্ফু উপেক্ষা করে এ দিন সকাল থেকে মানুষের ঢল নামে চাঁদমারির মাঠেও। আসেন শিল্পী, বিশিষ্টজনেরা। বিজেপি বিধায়ক তথা প্রাক্তন অগপ মন্ত্রী জগদীশ ভুঁইয়া চাঁদমারিতে বলেন, ‘‘অসম আন্দোলনের সবাই বিশ্বাসঘাতক নই।’’ গত রাতে চাবুয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর পৈতৃক বাড়ি আক্রমণ, বিভিন্ন সরকারি দফতর পোড়ানো ও গুলি চালনার পরে আজ স্থানীয় বিজেপি সদস্যেরা গণইস্তফা দিয়েছেন।
নতুন আইনকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করার কথা ঘোষণা করেছে কংগ্রেস, এআইইউডিএফ, শিল্পী সমাজ, অসম সাহিত্য সভা, উত্তর-পূর্ব খিলঞ্জিয়া মঞ্চ। এনআরসি মামলার মূল আবেদনকারী আসাম পাবলিক ওয়ার্কস বলেছে, বিলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চে ইতিমধ্যেই আবেদন জানিয়েছে তারা। কংগ্রেস এবং এআইইউডিএফ বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি জানিয়েছে।
আলফা-প্রধান পরেশ বরুয়া ছাত্র সমাজের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আন্দোলন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে, শান্তিপূর্ণ ভাবে করা উচিত। হিংস্র পথ নিলে সরকারের সুবিধেই হবে।’’ অন্য দিকে, প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রঞ্জিত দাস বলেন, ‘‘হাঁস-মুরগি বেচতে বাইরে থেকে আসা মানুষরা আন্দোলনের নামে গুয়াহাটিতে ভাঙচুর চালিয়েছে।’’ ডিজিপি ভাষ্করজ্যোতি মহন্তও বলেন, ‘‘আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিশে হিংসা, লুটপাট চালিয়েছে সমাজবিরোধীরা। তাদের খুঁজে বার করতে বিশেষ তদন্ত দল গড়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy