হনুমান গড়ী। ছবি: পিটিআই।
ময়ূর বিহার ফেজ-টু মার্কেটের সেলুন মালিক রঞ্জিত কুমারের মন খারাপ। ব্যবসার হাল খারাপ। লোকে চুল কাটতে আসছে, কিন্তু দাড়ি কাটছে না। অন্য রূপচর্চার পিছনে খরচ করা তো দূরের কথা। দোকানের ভাড়া গুণতে না পেরে রঞ্জিত অন্য বাজারে সরে যাচ্ছেন।
দু’দিন আগে যে অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরির নির্দেশ এল, তাতে খুশি নন? রঞ্জিতের জবাব, ‘‘একটাই ভাল হয়েছে, এই বিবাদ শেষ হল। কিন্তু তা দিয়ে তো পেট চলবে না।’’
আগামী বছরের শুরুতেই দিল্লিতে বিধানসভা ভোট। বিজেপি শিবিরে হিসেব কষা চলছে, অযোধ্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় ও রামমন্দির তৈরির প্রস্তুতির প্রভাব দিল্লির ভোটে পড়বে কি না? কিন্তু আম আদমি পার্টি ও দিল্লি কংগ্রেসের নেতারা মনে করছেন, দিল্লির ভোট হবে রাজধানীর মানুষের রুজিরুটি, প্রতিদিনের জীবনের সমস্যা নিয়ে। তাতে অযোধ্যার রায়ের প্রভাব পড়বে না।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল সম্প্রতি দাবি করেছেন, ‘‘দিল্লির ভোট হবে এখানকার স্কুল, হাসপাতাল, বিদ্যুৎ, জল, নিকাশি, দূষণের মতো বিষয় নিয়ে। দেশের গণতন্ত্রের জন্য এটা ভাল লক্ষণ। সরকারের প্রতি ভরসা আম আদমি পার্টির পক্ষে সমর্থনের ঢেউ তুলছে।’’ উত্তরাখণ্ড থেকে পেট চালাতে দিল্লিতে আসা রঞ্জিতের মত, ‘‘দিল্লি সরকার গরিব মানুষের জন্য অনেক কাজ করেছে। তার ফায়দা পাবেই।’’
দিল্লির আগেই ৩০ নভেম্বর থেকে ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনের পাঁচ দফার ভোটগ্রহণ শুরু হচ্ছে। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতা হেমন্ত সরেনের দাবি, লোকসভা ভোটের বদলে বিধানসভা ভোটে স্থানীয় সমস্যা অনেক বড় ভূমিকা নেয়। ঝাড়খণ্ডের মানুষ চাকরি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত।
বিজেপি নেতারাও ঝাড়খণ্ডে অযোধ্যা রায়ের বিরাট প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন না। কিন্তু দিল্লির বিধানসভা ভোট বিজেপির কাছে সম্মানের লড়াই। দিল্লি থেকেই মোদী সরকার চলছে। অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ পুলিশ দিল্লির আইন-শৃঙ্খলা দেখছে। অথচ দিল্লি সরকার আম আদমি পার্টির। এটা বিজেপি নেতাদের পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন।
২০১৪-র লোকসভা ভোটে মোদী সরকার ক্ষমতায় ফেরার পরে বিজেপি দিল্লিতেই প্রথম ধাক্কা খেয়েছিল। ২০১৫-র বিধানসভা ভোটে ৭০টি বিধানসভা আসনের ৬৭টি-ই আপ জিতে নেয়। কিন্তু ২০১৯-র লোকসভা ভোটের নিরিখে সেই আপ মাত্র ৪৭টি বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়েছিল। কংগ্রেসও আপ-এর থেকে এগিয়ে গিয়েছে। কেজরীবালও জানেন, সাবধানের মার নেই। ভাল কাজ করলেও তিনি নিজেকে হিন্দু-বিরোধী বলে দেখাতে চাইছেন না। তাই অন্যান্য দল যখন অযোধ্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ‘সম্মান’ জানিয়েছে, তখন আম আদমি পার্টি সকলকে ছাপিয়ে এই রায়কে ‘স্বাগত’ জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy