আবগারি দুর্নীতি মামলায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টি (আপ) প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে গ্রেফতার করতে পারে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। মঙ্গলবার এই অভিযোগ করেছেন দিল্লির মন্ত্রী তথা আপ নেত্রী অতিশী। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে রাজনৈতিক লড়াইয়ে বিজেপি পেরে উঠছে না। অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভয় পাচ্ছেন। তাই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে কাজ লাগিয়ে আমাদের নেতাদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জেলে ঢোকানো হচ্ছে।’’
আগামী বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দিল্লির আবগারী দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইডির সদর দফতরে তলব করা হয়েছে কেজরীকে। অতিশীর আশঙ্কা সেই দিনই তাঁকে গ্রেফতার করা হতে পারে। আবগারি দুর্নীতি মামলায় দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া এবং আপ সাংসদ সঞ্জয় সিংহকে আগেই গ্রেফতার করেছে ইডি। ফলে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি সমন পাঠানোর পরে কেজরীওয়ালের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে তৈরি হয়েছে জল্পনা।
আরও পড়ুন:
কেজরীওয়ালের পরে নরেন্দ্র মোদী সরকার কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেএমএম প্রধান হেমন্ত সোরেন, বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদের পুত্র তেজস্বী যাদব এবং কেরলের মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা পিনারাই বিজয়ন, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে সভাপতি এমকে স্ট্যালিনকেও ‘নিশানা’ করবে বলে দাবি করেন অতিশী। তিনি বলেন, ‘‘দিল্লির মতোই ওই রাজ্যগুলিতেও ধারাবাহিক ভাবে ভোটে হারছে বিজেপি। তাই একই কৌশল নেবে ওরা।’’
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, ওই মামলায় আদালতে জমা দেওয়া দ্বিতীয় চার্জশিটে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর নাম উল্লেখ করেছিল ইডি। যা দেখে সরকারি মহলের একাংশের ধারণা, ক্রমশ ‘বৃত্ত’ ছোট করে আনছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। গত ১৬ এপ্রিল আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরীওয়ালকে প্রায় সাড়ে ন’ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল আর এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। পরে এই মামলায় বেআইনি আর্থিক লেনদেনের খোঁজ পেতে সমান্তরাল তদন্ত শুরু করে ইডি। প্রসঙ্গত, আপ সরকারের আমলে আবগারি নীতি বদলে ফেলে কয়েকটি সংস্থাকে বেআইনি ভাবে সুযোগ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন:
গত বছরই বিতর্কিত এই আবগারি নীতি বাতিল করার কথা ঘোষণা করেছিল দিল্লির আপ সরকার। তার আগেই এ নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনা। এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত হিসাবে নাম আছে তৎকালীন দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী সিসৌদিয়া এবং সাংসদ সঞ্জয়ের । এই মামলায় গত ফেব্রুয়ারিতে সিসৌদিয়া এবং চলতি মাসে সঞ্জয়কে গ্রেফতার করা হয়। আপ অবশ্য শুরু থেকেই একে বিজেপির ষড়যন্ত্র হিসাবে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। আপের দাবি, বিরোধীদের দমন করতে এ রকম মনগড়া সব অভিযোগ নিয়ে নেতৃত্বকে হেনস্থা করার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।