Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

বিপন্ন ১৭ হাজার গাছ, নয়া তরজায় কেন্দ্র-আপ

দক্ষিণ দিল্লিতে সাতটি কলোনির পুনরুন্নয়নে সরকারি আবাসন হচ্ছে। তার জন্য প্রায় ১৭ হাজার গাছ কাটার প্রতিবাদে পথে নামলেন মানুষ। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে দিল্লির আপ সরকার ফের এক দফা বাগ্‌যুদ্ধে নামল কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে।

গাছ কাটা হলে পরিবেশ ও পাখিদের বাস্তুতন্ত্রে বিরূপ প্রভাব পড়বে— এই যুক্তিতে আজ পথে নামেন মানুষ। ছবি: পিটিআই।

গাছ কাটা হলে পরিবেশ ও পাখিদের বাস্তুতন্ত্রে বিরূপ প্রভাব পড়বে— এই যুক্তিতে আজ পথে নামেন মানুষ। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৮ ০৩:৩০
Share: Save:

দক্ষিণ দিল্লিতে সাতটি কলোনির পুনরুন্নয়নে সরকারি আবাসন হচ্ছে। তার জন্য প্রায় ১৭ হাজার গাছ কাটার প্রতিবাদে পথে নামলেন মানুষ। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে দিল্লির আপ সরকার ফের এক দফা বাগ্‌যুদ্ধে নামল কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। এই ক্ষেত্রেও তাদের নিশানায় উপরাজ্যপাল অনিল বৈজল। গাছ কাটার সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ চেয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ফলে প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।

গত বছর দক্ষিণ দিল্লির সরোজিনী নগর, নৌরাজি নগর, নেতাজি নগরের মতো এলাকাগুলিতে সরকারি কর্মীদের জন্য আবাসন তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। দায়িত্ব পায় সরকারি সংস্থা এনবিসিসি। সম্প্রতি একাধিক জায়গায় তারা গাছ কাটা শুরু করেছে। একেই দূষণের নিরিখে দিল্লি একেবারে উপরের সারিতে। তার মধ্যে এত গাছ কাটা হলে পরিবেশ ও পাখিদের বাস্তুতন্ত্রে বিরূপ প্রভাব পড়বে— এই যুক্তিতে আজ পথে নামেন মানুষ। পাশে দাঁড়ায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি। সবুজ রক্ষায় গাছকে জড়িয়ে ধরেন অনেকে। যেমনটি হয়েছিল ১৯৭০-এর দশকে, সুন্দরলাল বহুগুণার নেতৃত্বে চিপকো আন্দোলনে।

কে দিয়েছে এত গাছ কাটার অনুমতি— এই নিয়েই বেধেছে জোর তরজা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হর্ষ বর্ধনের দাবি, এলাকাটি অরণ্যাঞ্চল নয়। ফলে সেখানে গাছ কাটা নিয়ে কেন্দ্রের বন দফতরের কোনও ভূমিকা নেই। ছাড়পত্র দিয়েছিল অরবিন্দ কেজরীবালের সরকারই। টুইটে উল্টো দাবি আপ বিধায়ক সৌরভ ভরদ্বাজের। তাঁর বক্তব্য, ছাড়পত্র দিয়েছিল হর্ষ বর্ধনের মন্ত্রকই। সংশ্লিষ্ট ফাইলে আপত্তি জানিয়ে নোটও দেন দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী। কেন্দ্রের প্রকল্পটির বিরোধিতা তাঁরা করছেন না। তবে দূষণের দিকটি মাথায় রেখে তাঁরা মনে করেন, এত গাছ কেটে ফেলাটা ভাল হচ্ছে না। বৈজলকে নিশানায় রেখে সৌরভ উল্লেখ করেছেন, সর্বোচ্চ ২০টি গাছ কাটার অনুমতি দিতে পারেন দিল্লির পরিবেশ সচিব। সর্বোচ্চ এক হেক্টর এলাকায় গাছ কাটার ছাড়পত্র দিতে পারে দিল্লি সরকার। তার চেয়ে বেশি হলে উপরাজ্যপালই অনুমতি দেওয়ার অধিকারী। আপ ঠিক করেছে, উপরাজ্যপালের কাছেই তারা প্রকল্পটি সরানোর দাবি জানাবে। সৌরভের কথায়, ‘‘দক্ষিণ দিল্লির বদলে দ্বারকা, গুরুগ্রাম, নয়ডা, গ্রেটার নয়ডায় বাড়ি বানাক সরকার। তা হলেই গাছ কাটার সমস্যা এড়ানো যায়। কিন্তু সরকার আমলাদের দক্ষিণ দিল্লিতে আবাসন দিয়ে তাঁদের খুশি রাখতে চায়।’’

নির্মাণকারী সংস্থাটির অবশ্য দাবি, যতটা সম্ভব গাছ স্থানান্তরের চেষ্টা হচ্ছে। একেবারেই অসম্ভব হলে, তখন গাছ কাটা হচ্ছে। একটি গাছের বদলে ১০টি চারা— এই নিয়ম মেনে বৃক্ষরোপণও করা হচ্ছে। কিন্তু পরিবেশদের বক্তব্য, নতুন গাছ সবই লাগানো হচ্ছে যমুনার চরে। যেখানে গাছ কাটা হচ্ছে, সেখানে কোনও উপকার হবে না এতে। প্রশ্ন উঠেছে নতুন পোঁতা গাছের দেখাভাল নিয়েও।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy