Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Recession

Recession: অতিমারির ফলে কাজের বাজারে মন্দা, বেশি ভুগছেন মহিলারা, স্পষ্ট কেন্দ্রের ​সমীক্ষায়

ক্ষমতায় আসার আগে বছরে দু’কোটি কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেই সময়ে এনডিএ-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:২৯
Share: Save:

অতিমারির আগে কিংবা পরে, কাজের বাজারের হাল নিয়ে মোদী সরকারকে ক্রমাগত বিঁধে আসছে বিরোধীরা। সেই আক্রমণের ভিত্তি যে কতটা গভীর, তা আরও এক বার তা স্পষ্ট হল খোদ কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের রিপোর্টে। সোমবার শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব যে সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন, তাতে জানানো হয়েছে, গত এপ্রিল-জুনে সারা দেশে নির্মাণ, উৎপাদন, তথ্যপ্রযুক্তি-সহ ন’টি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে (কৃষি বাদে) কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন ৩.০৮ কোটি মানুষ। ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষের আর্থিক সুমারিতে ওই সমস্ত ক্ষেত্রে ২.৩৭ কোটি কাজের কথা বলা হয়েছিল। অর্থাৎ, সাত বছরে ওই ক্ষেত্রগুলিতে কাজ বেড়েছে মোট ২৯% (সবিস্তার সারণিতে)। বছরের হিসাবে মোটামুটি ৪%। সংখ্যার নিরিখে মাত্র ৭১ লক্ষ।

ক্ষমতায় আসার আগে বছরে দু’কোটি কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেই সময়ে এনডিএ-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বিরোধীদের বরাবরের অভিযোগ, তিনি ক্ষমতায় আসার পরে কাজের বাজার তো চাঙ্গা হয়ইনি, উল্টে আরও ঝিমিয়ে পড়েছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের (এনএসও) ফাঁস হয়ে যাওয়া রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছিল, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে সারা দেশে বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ৬.১%। যা সাড়ে চার দশকের সর্বোচ্চ। সেই সময়ে মোদী সরকার ওই রিপোর্টটি অসম্পূর্ণ বলে দাবি করেছিল। কিন্তু নির্বাচনের পরে সরকারি ভাবে তা প্রকাশ হওয়ার পরে জানা যায়, বেকারত্বের পরিসংখ্যানের বিষয়টি সত্যি। তার পরেও এনএসও-র যে সমস্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, তাতে কাজের মলিন অবস্থাই স্পষ্ট হয়েছে। যদিও নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে ওই রিপোর্ট আর নিয়মিত প্রকাশ হয়নি। তবে কর্মসংস্থানের পরিস্থিতি কতটা খারাপ তা একাধিক বার ফুটে উঠেছে বেসরকারি পরামর্শদাতা সংস্থা সিএমআইই-র পরিসংখ্যানে। বস্তুত, তাদের অগস্টের রিপোর্টেই জানানো হয়েছে, গত মাসে সারা দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৮.৩২%। শহরে ৯.৭৮% এবং গ্রামাঞ্চলে ৭.৬৪%। যা কিনা ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের অবস্থার চেয়েও ভয়ঙ্কর। এ বারে কেন্দ্রের পরিসংখ্যানে আরও এক বার স্পষ্ট, প্রত্যেক বছর কর্মপ্রার্থীরা যে ভাবে কাজের বাজারে পা রাখছেন, নতুন কাজ তৈরির হার সেই তুলনায় কিছুই নয়। বিশেষ করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে মহিলাদের অংশগ্রহণের হার কমে যাওয়া। রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই হার ২৯%। যা ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে ৩১% ছিল। অর্থাৎ, সরকারের যুক্তিকে মেনে নিলেও বলতে হয়, অতিমারির বিরূপ প্রভাব মহিলা কর্মীদের উপরে পড়েছে বেশি।

কেন্দ্রের অবশ্য দাবি, যে সময়ে সমীক্ষা চালানো হয়েছে তখন ছিল লকডাউন (২৫ মার্চ থেকে ৩০ জুন)। ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রের কর্মসংস্থানে ধাক্কা লাগাটাই স্বাভাবিক। যে সমস্ত সংস্থায় সমীক্ষা চালানো হয়েছে, তাদের ২৭ শতাংশের উপরে অতিমারির প্রভাব পড়েছে। তবে আশার দিক, ৮১% কর্মী এর মধ্যেও পুরো বেতন পেয়েছেন। আবার তথ্যপ্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, পরিবহণ, আর্থিক পরিষেবার মতো কয়েকটি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। যদিও ওয়াকিবহাল মহলের পাল্টা বক্তব্য, অতিমারির আগে কাজের অবস্থা যদি সত্যিই চাঙ্গা হত, তা হলেও অতিমারির পরের ছবি এতটা হতাশাজনক হওয়ার কথা নয়। উল্টে বাণিজ্য এবং হোটেল-রেস্তরাঁর মতো ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান সরাসরি কমে গিয়েছে।

অতীতে প্রত্যেক বছর প্রকাশিত হত আর্থিক সুমারি। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের আমলে এর রূপকার ছিলেন পরিসংখ্যানবিদ এস পি মুখোপাধ্যায়। ২০১৩-১৪ সালে ষষ্ঠ আর্থিক সুমারি হয়েছিল। পরে অবশ্য সেই কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি কাজের অবস্থা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের পরিস্থিতি বুঝতে সর্বভারতীয় স্তরে মোট পাঁচটি সমীক্ষা শুরু করেছে শ্রম মন্ত্রক। সেই সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির শীর্ষেও রয়েছেন প্রবীণ ওই পরিসংখ্যানবিদ। ভিত্তিবর্ষ ধরা হয়েছে ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষকে। এ দিন রিপোর্ট প্রকাশের আগে শ্রমমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে দেখা করে টুইটারে সেই ছবি দেন। জানান, এই ধরনের পরিসংখ্যান হাতে থাকলে বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচি এবং প্রকল্প দেশের প্রতিটি কোণে পৌঁছে দেওয়া সহজ হবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন আকারের প্রায় ১২,০০০ প্রতিষ্ঠানে সমীক্ষা চালিয়ে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Recession
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy