গুরমুখ সিংহ। ছবি— টুইটার।
প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজধানীর বুকে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে তাতে ১২২ জনকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। এর মধ্যে রয়েছেন ৬ জন প্রবীণ নাগরিকও। এই প্রবীণ কৃষকদের গ্রেফতার করা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। প্রবীণদের মধ্যে সবথেকে বেশি বয়স পঞ্জাবের শামাসপুর গ্রামের গুরমুখ সিংহ। এ ছাড়াও সেই তালিকায় রয়েছেন পঞ্জাবের খানৌরি কালান গ্রামের জিৎ সিংহ (৭০), মানসা জেলার যোগিন্দর সিংহ (৬৩), দিল্লির ধানসা গ্রামের বাসিন্দা ৬৩ বছরের ধর্মপাল। বাকি দু’জন হরিয়ানার বাসিন্দা।
এ নিয়ে দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র ইশ সিংঘল বলেছেন, ‘‘এখনও অবধি ৪৪টি মামলা দায়ের হয়েছে এবং ১২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ ৫৪ জন কৃষক নেতাকে নোটিস দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এই সমস্ত মামলার বিস্তারিত দিল্লি পুলিশের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবেন বলে জানিয়েছেনও তিনি।
২৯ জানুয়ারি মুখার্জি নগর থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছিল গুরমুখকে। তার পর ছেড়ে দিলেও তাঁ পরিবারর লোকের আতঙ্ক এখনও কাটছে না। গুরমুখের বাড়ি পঞ্জাবের ফতেগড় সাহিব জেলার শামাসপুর গ্রামে। সেখানে তাঁর দেড় একর জমি রয়েছে। সেখানে ধান ও গম চাষ করেন তিনি। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সুবেদার হিসাবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন গুরমুখ। ৩ দশক আগে সেই কাজ থেকে অবসর নেন।
গুরমুখের ব্যাপারে তাঁর গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান হরপিন্দর সিংহ বলেছেন, ‘‘প্রথম দিন থেকেই কৃষি আইনের বিরুদ্ধে ছিলেন তিনি। চাইছিলেন, আইন প্রত্যাহার করা হোক। তিন দশক আগে সেনাবাহিনীর সুবেদার পদ থেকে অবসর নেন তিনি। শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন যাপনের পাশাপাশি রোজ দু’বার গুরুদ্বার যান তিনি।’’ ওই গ্রামের প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সৎনাম সিংহ বলেছেন, ‘‘অত বয়স সত্ত্বেও গুরমুখকে গ্রেফতার করায় আমরা বিস্মিত।’’ গুরমুখের বড় ছেলে যশবীর সিংহ ইটালিতে থাকেন। তাঁর স্ত্রী-পুত্র থাকেন গুরমুখের কাছে। ছোট ছেলে কুলবীর সিংহ থাকেন তাঁর বাড়ি থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে খামানোতে।
গুরমুখের গ্রেফতারির পর তাঁর গ্রামের পঞ্চায়েতের তরফে মঙ্গলবার একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। গ্রামের প্রত্যেককে অন্তত এক বার করে দিল্লির প্রতিবাদস্থলে যেতে হবে। যে যাবে না, তাকে সামাজিকভাবে বয়কট করা হবে। এই প্রস্তাবে গ্রামবাসীরা রাজি হন বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েতের সদস্য হরমন সিংহ। তিনি বলেছেন, ‘‘আন্দোলনে যোগ দেওয়া নিয়ে প্রস্তাবে রাজি গ্রামবাসীরা। গুরমুখের পাশে দাঁড়াতে বুধবার পঞ্চায়েতের একটি দল সহ কিছু প্রবীণ সদস্য দিল্লির দিকে রওনা দেবেন। আমরা ওঁকে সাহায্য করতে চাই। বাড়ি ফিরিয়ে আনতে চাই।’’ তাঁদের গ্রামের ২০ জন ইতিমধ্যেই সিঙ্ঘু সীমানায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন হরমন। বুধবার গ্রাম থেকে ২৫ জনের একটি দল যাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, গ্রেফতারি থেকে রেহাই মিললেও প্রতিবাদে অটল গুরমুখ এখনও আন্দোলনস্থলেই রয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy