Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

চাষের মাঠের খবর দেন ‘রিপোর্টার’ লক্ষ্মাম্মা

বছর তিরিশ আগে নিজেরাও চাষবাস করতেন হুমনাপুরের লক্ষ্মাম্মা বি, ইপ্পালাপল্লির মোল্লাম্মা ও সাঙ্গারেড্ডির চন্দ্রাম্মা মনিগারি।

ক্যামেরার পিছনে লক্ষ্মাম্মা

ক্যামেরার পিছনে লক্ষ্মাম্মা

সংবাদ সংস্থা
তেলঙ্গানা শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯ ০২:৪২
Share: Save:

আঁচলটা কোমরে শক্ত করে জড়িয়ে ভিডিয়ো ক্যামেরার লেন্সে চোখ রাখেন মধ্য পঞ্চাশের লক্ষ্মাম্মা। উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে তখন বাজরা চাষের খুঁটিনাটি বোঝাচ্ছেন এক বৃদ্ধ কৃষক। ক্যামেরা ঘুরিয়ে পাকা পেশাদারের মতো যা রেকর্ড করেন লক্ষ্মাম্মা ও তাঁর দুই সঙ্গী। তেলঙ্গানার এই তিন দলিত মহিলার ক্যামেরাবন্দি সে-সব খুঁটিনাটি তথ্যই পৌঁছে যাবে গ্রামে গ্রামে।

বছর তিরিশ আগে নিজেরাও চাষবাস করতেন হুমনাপুরের লক্ষ্মাম্মা বি, ইপ্পালাপল্লির মোল্লাম্মা ও সাঙ্গারেড্ডির চন্দ্রাম্মা মনিগারি। এখন ক্যামেরার পিছনে দাঁড়িয়ে চাষের খবরাখবর দেন এই তিন দলিত প্রৌঢ়া। তেলঙ্গানায় কৃষি নিয়ে কাজ করা একটি বেসরকারি সংস্থার রিপোর্টার ও ভিডিয়োগ্রাফার তাঁরা। সম্প্রতি সংস্থার একটি প্রকল্পে মলদ্বীপও গিয়েছিলেন লক্ষ্মাম্মা। ইতিমধ্যেই সংস্থার কাজে ১৫টি দেশ ঘুরেছেন তিনি।

কী ভাবে কাজ করেন লক্ষ্মাম্মারা? নাল্লামালা অরণ্যের ভিতরেই চেনচু জনজাতি গ্রামে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘এখানে চাষিদের মধ্যে বাজরা, ছোলা ও মটরশুটির বীজ বিতরণ করব। তার পর সেগুলি চাষের পদ্ধতি ভিডিয়ো করব।’’ তিনি জানিয়েছেন, নিরক্ষর বা অল্পশিক্ষিত চাষিরা এই ভিডিয়োগুলি দেখে চাষের পদ্ধতি শিখতে পারবেন। বীজ বোনা থেকে ফসল তোলা— গোটা প্রক্রিয়াটি শেখার জন্য এটা খুব ভাল একটা ব্যবস্থা। শুধু চাষের প্রক্রিয়াই নয়, সেই প্রাচীন সংক্রান্ত প্রথাও এবং উৎসব-অনুষ্ঠানও ক্যামেরাবন্দি করেন ওই তিন জন।

বর্তমানে ওই বেসরকারি সংস্থাটি রাজ্যের ৭৫টি গ্রামের মহিলা চাষিদের নিয়ে কাজ করছে। তাদের ‘সঙ্গম’ নামের সংগঠন রাষ্ট্রপুঞ্জের পুরস্কারও পেয়েছে এই বছর। এই সংগঠনের ছাতার তলায় থাকা কৃষকেরা কাজের ক্ষেত্রে তাঁদের পরস্পরের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন এবং তার থেকে মুক্তির পথ খোঁজেন একসঙ্গে। ২০০১ সালে ‘সঙ্গম’-এর মহিলা কৃষকেরা ওই বেসরকারি সংস্থার কাছে আর্জি জানান, তাঁরা তাঁদের কাজের ভিডিয়ো নিজেরাই রেকর্ড করতে চান। সেই থেকেই ক্যামেরার পিছনে লক্ষ্মাম্মারা।

মোল্লাম্মা বলেছেন, ‘‘আগে আমরাও দৈনিক মজুরিতে চাষের কাজ করতাম। কিন্তু এখন পেশাদার ভিডিয়োগ্রাফার ও রিপোর্টার। এতে সম্মান খানিকটা বেড়েছে তো বটেই। আমরা যা বলি সবাই তা শোনেন।’’ তিনি জানিয়েছেন, ক্যামেরার কাজ শিখতে কয়েক মাস লেগেছিল তাঁদের। এখন যদিও সবটাই আয়ত্তের মধ্যে। ওই বেসরকারি সংস্থার এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘আমরা মূলত কৃষিকাজ পদ্ধতি ও এই সংক্রান্ত নানা ঐতিহ্যবাহী প্রথার বিষয়ে জানাতে চাই। ফলে বীজ পোঁতা থেকে ফসল তোলা সবই রেকর্ড করেন ওঁরা। এই ভিডিয়োগুলি ইউটিউবে পাওয়া যায়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Telangana Agriculture Video
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy