গোরক্ষকদের তাণ্ডবের এই ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর ফিরে এসেছে দাদরি-কাণ্ডের স্মৃতি।
গাছের সঙ্গে বেঁধে দুই যুবককে এলোপাথাড়ি লাঠির বাড়ি মারছে এক দল যুবক। শোনা যাচ্ছে হুঙ্কার— ‘জয় শ্রীরাম’। এক মহিলাকে মাটিতে ফেলে মাথায় চপ্পলের ঘা মারা হচ্ছে। তিন জন বাঁচার জন্য অনুনয় করলেও ভ্রুক্ষেপ নেই গলায় গেরুয়া গামছা জড়ানো দলটির। উল্টে প্রহৃতদের তারা শাসাচ্ছে, ‘জয় শ্রীরাম’ বলতেই হবে! অভিযোগ, কংগ্রেস শাসিত মধ্যপ্রদেশের সিওনীতে গোমাংস রাখার অভিযোগে রিকশা থেকে টেনে নামিয়ে মারধর করা হয় ওই তিন জনকে। প্রহৃতেরা মুসলিম।
গোরক্ষকদের তাণ্ডবের এই ভিডিয়ো গতরাতে ভাইরাল হওয়ার পর ফিরে এসেছে দাদরি-কাণ্ডের স্মৃতি। ২০১৫-য় উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে গোরক্ষকদের মারে প্রাণ হারান মহম্মদ আখলাক। সিওনীর এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘ভিডিয়োটি চার দিনের পুরনো। এই ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোমাংস বিক্রি বা সঙ্গে রাখা নিষিদ্ধ মধ্যপ্রদেশে। তাই গ্রেফতার করা হয়েছে প্রহৃত তিন জনকেও।’’
ভোটের ফলপ্রকাশের দিন, গত পরশু ফেসবুকে ভিডিয়োটি পোস্ট করেছিল এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত শুভম সিংহ। সে নিজেকে ‘রাম সেনা’র সদস্য বলেও পরিচয় দিয়েছে। ফেসবুক প্রোফাইলে মালেগাঁও বিস্ফোরণে অভিযুক্ত, ভোপালের বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা ঠাকুরের সঙ্গে নিজের ছবি এপ্রিলে ‘আপলোড’ করেছিল শুভম।
পুলিশের বয়ান অনুযায়ী, ২২ মে ওই মহিলা-সহ তিন জন রিকশয় যাচ্ছিলেন। সঙ্গে গোমাংস রাখার অভিযোগে তাঁদের থামায় এক দল যুবক। তার পর জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। শুরু হয় লাগামছাড়া মারধর। অন্যতম অভিযুক্ত শুভম ভিডিয়োটি আপলোড করার পরের দিন এক মহিলা পুলিশে অভিযোগ জানান। তার ভিত্তিতে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। স্থানীয় পুলিশ আধিকারিক গোপাল খাণ্ডেল জানিয়েছেন, আক্রান্তদের কাছ থেকে ১৪০ কেজি মাংস পাওয়া গিয়েছে। মাংসের নমুনা ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য হায়দরাবাদে পাঠানো হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একটি রিকশা ও স্কুটার। ওই পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘অভিযুক্তেরা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত কি না, আমাদের এখনও জানা নেই।’’
ভিডিয়োটি ভাইরাল হওয়ার পর সে রাজ্যে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার আবেদন জানিয়েছেন কাশ্মীরের দুই নেতানেত্রী মেহবুবা মুফতি এবং ওমর আবদুল্লা। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা আজ টুইট করেছেন, ‘‘নিরপরাধ মুসলিমদের উপরে গোরক্ষকদের তাণ্ডবের ছবিতে আতঙ্কিত।’’ কমল নাথ সরকারের কাছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর বলেছেন, ‘‘এ তো সবে শুরু। ভবিষ্যতে আরও কী হয়, দেখতে থাকুন।’’
প্রসঙ্গত, মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলেও লোকসভা নির্বাচনে গেরুয়া ঝড়ে তারা উড়ে গিয়েছে। আর ক্ষমতায় আসার পর গোহত্যার অভিযোগে তিন জনের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে মামলা করে বিতর্কে জড়িয়েছিল কমল নাথ সরকারও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy