(বাঁ দিকে) নৌপ্রধান দীনেশ ত্রিপাঠী এবং সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী (ডান দিকে)। ছবিঃ পিটিআই।
বন্ধুত্ব শুরুর দিনক্ষণ ঠাহর করা মোটেই সহজ কথা নয়। দুই সহপাঠী একসঙ্গে চলতে চলতে কখন বন্ধু হয়ে ওঠে তার হিসেবে রাখে না কেউ-ই। ঠিক যেমন উপেন্দ্র এবং দীনেশ। এই দু’জন কৈশোরে সখ্যের যে নিবিড় আলিঙ্গনে আবদ্ধ হয়েছিলেন, তা আজও অশিথিল। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইতিহাসে এই প্রথম— দুই সহপাঠী সেনাবাহিনীর দুই শাখার শীর্ষে। বর্তমানে নৌসেনা প্রধান চিফ অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠী এবং জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী ভারতীয় স্থলসেনার প্রধান। তিনি আজই সেনাপ্রধানের দায়িত্বভারগ্রহণ করেছেন।
গত শতকের সত্তরের দশকের প্রথম দিকে উপেন্দ্র এবং দীনেশ মধ্যপ্রদেশের রেওয়ার সৈনিক স্কুলের ছাত্র ছিলেন। পঞ্চম শ্রেণি থেকে এ-লেভেল পর্যন্ত একই সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন তাঁরা। স্কুলজীবনেই দু’জনের বন্ধুত্বের সূত্রপাত। স্কুলে তাঁদের রোল নম্বরও ছিল কাছাকাছি। জেনারেল দ্বিবেদীর রোল নম্বর ছিল ৯৩১ আর ৯৩৮ ছিল চিফ অ্যাডমিরাল ত্রিপাঠীর রোল নম্বর।
পড়াশোনার পাঠ শেষ করে চাকরি জীবনেও দুই বন্ধু বেছে নিয়েছিলেন সেনাবাহিনীকে। তবে উপেন্দ্র গেলেন স্থল বাহিনীতে, আর নৌবাহিনীতে দীনেশ। কিন্তু বন্ধুত্বে ছেদ পড়েনি কখনওই। বরং একই পেশায় থাকার কারণে বন্ধুত্ব আরও নিবিড় থেকে নিবিড়তর হয়েছে। উপেন্দ্র এবং দীনেশকে খুব ভাল করে চেনেন এক সেনা অফিসারের মতে, সামরিক বাহিনীর শীর্ষ স্তরে দুই প্রধানের এমন বন্ধুত্ব সেনাবাহিনীর কাজের সম্পর্ক এবং সমন্বয়কে আরও মজবুত করবে।
স্কুলজীবনে দুই বন্ধুর রোল নম্বর যেমন কাছাকাছি ছিল, দীনেশ এবং উপেন্দ্রের দুই বাহিনীর শীর্ষে মনোনয়নও কাছাকাছি সময়ে। মাত্র দু’মাসের ব্যবধানে দুই বন্ধু দুই বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হলেন। গত ১ মে নৌবাহিনীর সর্বোচ্চ পদে আসীন হয়েছিলেন চিফ অ্যাডমিরাল ত্রিপাঠী, আর আজ দায়িত্ব নিলেন জেনারেল দ্বিবেদী। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র ভারতভূষণ বাবু সামাজিক মাধ্যম এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন, ‘ভারতীয় সেনাবাহিনীতে প্রথমবার, নৌসেনা এবং সেনার প্রধান একই স্কুলের সহপাঠী। রেওয়ার সৈনিক স্কুল বিরল সম্মানের অধিকারী, কারণ ৫০ বছর আগে তারা সেই দুই অসাধারণ ছাত্রকে বিদ্যাদান করেছে, যাঁরা নিজেদের বিভাগে নেতৃত্ব দিতে চলেছেন’।
জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী দেশের ৩০তম সেনাপ্রধান। আজ সেনাপ্রধান হিসাবে মনোজ পাণ্ডের মেয়াদ শেষের পরে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। উপেন্দ্র এত দিন ভারতীয় সেনার উপপ্রধান পদে ছিলেন। জম্মু ও কাশ্মীর এবং চিন সীমান্তে কাজের বিশেষ অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। সেনাবাহিনীর সঙ্গে দীর্ঘ চার দশক ধরে যুক্ত তিনি। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে চিন সীমান্ত সংক্রান্ত সমস্যা সামলেছেন উপেন্দ্র। চিনের সঙ্গে সমঝোতার আলোচনায় অন্যতম ছিলেন তিনি। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সেনার উপপ্রধানের দায়িত্ব নিয়েছিলেন উপেন্দ্র। তার আগে তিনি ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত নর্দার্ন কমান্ডের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ইন চিফ ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy