যমুনা দেবী (বাঁ দিকে)। অভিযুক্ত ভাড়াটে প্রকাশ প্রজাপত। (ডান দিকে)
ঘুম থেকে উঠে দিদাকে দেখতে না পেয়ে নাতনি ভেবেছিলেন হয়তো কাছেপিঠেই আছে। কিন্তু দিদা তো হাঁটতে পারে না! তা হলে গেল কোথায়? বাড়ির পিছনের দিকে যেতেই ভয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিলেন নাতনি মমতা মীণা। ভয়ে শুকিয়ে যাওয়া গলা থেকে কোনও রকমে আওয়াজ বার করে মাকে ডেকেছিলেন তিনি।
এক সংবাদ সংস্থাকে মমতা জানান, বাড়ির পিছনে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন তাঁর দিদা যমুনা দেবী। দু’টি পায়ের গোড়ালি কাটা ছিল। পায়ে থাকা রুপোর কড়া উধাও। গলার নলি কাটা। যমুনা দেবী ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলেন। দিদাকে ওই অবস্থায় দেখেই হাড় হিম হয়ে গিয়েছিল তাঁর। রাজস্থানের জয়পুরের বাসিন্দা যমুনা দেবী। বয়স ১০৮। শয্যাশায়ী। ঠিক মতো কথাও বলতে পারতেন না। ইশারাতেই বোঝানোর চেষ্টা করতেন। যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে মঙ্গলবার হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
৯ অক্টোবর। ভোর সাড়ে ৫টা। শয্যাশায়ী যমুনা দেবীর ঘরে ঢুকেছিলেন তাঁরই পুরনো ভাড়াটে প্রকাশ প্রজাপত। যমুনা দেবীকে টানতে টানতে বাইরে শৌচাগারের কাছে নিয়ে আসেন প্রকাশ। তাঁর পা থেকে রুপোর কড়া খোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু খুলতে না পেরে যমুনাদেবীর দু’টি পায়ের গোড়ালিই কেটে দেন। তার পর যমুনাদেবীর গলায় কোপ বসান। মারা গিয়েছেন ভেবে যমুনা দেবীকে ওখানে ফেলেই রুপোর কড়া নিয়ে চম্পট দেন প্রকাশ।
দিদাকে ওই অবস্থায় দেখে মা, মামাদের ডেকেছিলেন মমতা। তার পর পুলিশেও খবর দেন। যমুনা দেবীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁর ওই হাল দেখে চিকিৎসকরাও আঁতকে উঠেছিলেন। যমুনা দেবী তাঁর কষ্টটাও ঠিক মতো প্রকাশ করতে পারছিলেন না। শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলেন। দু’দিন সেই যন্ত্রণার সঙ্গে লড়াইয়ের পর মৃত্যু হয় তাঁর।
তদন্তে নেমে প্রকাশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরায় পুলিশের কাছে তিনি স্বীকার করেন যে, বছরখানেক আগে একটি দুর্ঘটনায় পা ভেঙে যাওয়ায় চিকিৎসা করাতে ৪ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এত টাকা জোগাতে গিয়ে প্রচুর দেনা হয়ে গিয়েছিল। সেই দেনা শোধ করতে লুটের পরিকল্পনা করেন। আর পুরনো ভাড়াটে হিসাবে যমুনা দেবীর বাড়ির সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য জানতেন। শুধু তাই নয়, যমুনা দেবীর পায়ে মোটা রুপোর কড়া, হাতে রুপোর বালার বিষয়টিও তাঁর মাথায় ছিল। ফলে শয্যাশায়ী যমুনা দেবীকে সহজেই শিকার বানানোর ছক কষেছিলেন প্রকাশ। আর সেই পরিকল্পনামাফিক যমুনা দেবীর বাড়িতে হানা দিয়ে তাঁর পা থেকে রুপোর কড়া খোলার চেষ্টা করেন। প্রকাশ ভাল ভাবেই জানতেন, যমুনা দেবীর চিৎকার করার মতো ক্ষমতাও নেই, ফলে ওই কড়া খুলে নেওয়ার কাজ আরও সহজ হবে। কিন্তু কড়া খুলতে গিয়েই বিপত্তি বাধে। বেশ কয়েক বার পা ধরে টানাটানি করার পর যখন কড়া খোলেনি, তখনই গোড়ালিতে কোপ বসান প্রকাশ। গোড়ালি আলাদা হয়ে যেতেই সেই কড়া খুলে নেন। ঠিক একই ভাবে দ্বিতীয় পা চপার দিয়ে কেটে আলাদা করে দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy