বড়োভূমিতে হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনায় সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অসমে বঙ্গভাষী মানুষের প্রাণহানির ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করে আজ ‘ফেসবুকে’ মমতা লিখেছেন ‘দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদের দাবিদার-সহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের মন্তব্যও এতে ইন্ধন জোগাচ্ছে। ভাষা ব্যবহারে তাঁদের সংযত হওয়া উচিত। নিরপরাধ মানুষের জীবন জড়িয়ে রয়েছে, এমন কিছুতে রাজনীতির আগুন যেন ছড়ানো না-হয়।’ একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘অতীতে অসমের দুর্গত মানুষের দিকে পশ্চিমবঙ্গ সাহায্যের হাত এগিয়ে দিয়েছিল। তাঁদের আশ্রয়ের ব্যবস্থাও করা হয়। মানবিকতার জন্য এ বারও ওই সব মানুষের জন্য পশ্চিমবঙ্গের দরজা খোলা রয়েছে।’ এ নিয়ে কেন্দ্রীয় এবং অসম সরকার নীরব রয়েছে বলেও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। কাঠগড়ায় তুলেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, সংখ্যালঘু কমিশনকেও।
বড়োভূমিতে হিংসা ছড়ানোর জন্য মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তথা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুও। তাঁর বক্তব্য, “মোদী ওখানে গিয়ে উস্কানিমূলক বক্তৃতা দেন।”
উল্লেখ্য, বড়োভূমিতে গোষ্ঠী সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সমালোচনায় সরব হয়েছে বিজেপি। পাল্টা আক্রমণে কংগ্রেস এ জন্য নরেন্দ্র মোদীর মেরুকরণের রাজনীতির দিকে আঙুল তুলেছে। এমনই পরিস্থিতিতে আজ বড়োভূমির পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সনিয়া গাঁধী।
এ দিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় বড়োভূমিতে নতুন কোনও প্রাণহানির খবর মেলেনি। আজ সকালে বাক্সার সরভোগে বেকি নদীতে এক মহিলার দেহ ভেসে ওঠে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছল ৩৪-এ। মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ শালবাড়ি এলাকায় না-গেলে সেখানে পড়ে থাকা ১৮টি দেহ সৎকার করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, এখনও প্রায় ৩৫ জন নিখোঁজ। সুরাহা চেয়ে লাঠি-দা নিয়ে তাঁরা গোবর্ধন থানা ঘেরাও করেন। পরিস্থিতি সামলাতে শূন্যে গুলি চালায় পুলিশ। রাজ্যের চারটি জেলায় নৈশ-কার্ফু বলবৎ করা হয়।
বাক্সা, কোকরাঝাড়, চিরাং-এ গুজব ছড়ানো বন্ধ করতে সক্রিয় হয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। অন্য দিকে, মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে আরও পুলিশ ফাঁড়ি, নজরদারি চৌকি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গ্রামে-গ্রামে শান্তি কমিটি তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। সংবাদমাধ্যমকেও সংযত এবং সঠিক তথ্য পরিবেশনের অনুরোধ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী গগৈ। বিরোধীদের দাবি মেনে দায়িত্ব ছাড়বেন না বলে জানিয়ে তিনি বলেছেন, “নিরীহ রাজ্যবাসীর প্রাণহানির নৈতিক দায় আমি এড়াতে পারি না।” বড়োভূমিতে হত্যাকাণ্ড নিয়ে মামলা রুজু করেছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। রাজ্য সরকারকে এ নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
রাজ্যের বন ও পরিবেশমন্ত্রী রকিবুল হুসেন এ দিন কোকরাঝাড়ের বালাপাড়ায় যান। গ্রামবাসীরা তাঁর কাছে আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্রের দাবি জানান। মন্ত্রী এ নিয়ে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় এনডিএফবি জঙ্গিদের সঙ্গে দু’বার সংঘর্ষ হয় নিরাপত্তাবাহিনীর। আজ সকালে শোণিতপুর-অরুণাচল সীমানায় রাঙাপাড়া রাংইডাংবাড়ি এলাকায় সেনা কনভয়ের উপরে গ্রেনেড ছোড়ে বড়ো জঙ্গিরা। জওয়ানদের পাল্টা গুলিতে তিন জঙ্গির মৃত্যু হয়। উদ্ধার হয় গ্রেনেড-পিস্তল। এলাকা জুড়ে তল্লাশি চলছে।
বড়োভূমিতে গণহত্যার প্রতিবাদে আজ হাইলাকান্দি জেলায় বন্ধ পালন করা হয়। সোমবার বন্ধ হবে কাছাড়ে। করিমগঞ্জে বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করা হয়। এ দিকে, কাছাড়ের ধলাই থানার কালাখাল গ্রাম থেকে চার রিয়াং জঙ্গিকে ধরেছে নিরাপত্তা বাহিনী। ওই এলাকা থেকে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy