Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

পার্শ্ব একাদশীর মাহাত্ম্য এবং ১৪২৬ সনের পার্শ্ব একাদশীর নির্ঘণ্ট ও সময়সূচি

যে পূণ্য এই ব্রতে লাভ হয়, তা বাজপেয় যজ্ঞেও লাভ হয় না। এই একাদশীতে শায়িত ভগবান অনন্ত শয্যায় পার্শ্ব পরিবর্তন করেন। বাম অঙ্গ থেকে দক্ষিণ অঙ্গে শয়ন করেন। তাই এই একাদশীকে পরিবর্তিনী একদশীও বলা হয়।

পার্থপ্রতিম আচার্য
শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০৫
Share: Save:

ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে যুধিষ্ঠির শ্রীকৃষ্ণ সংবাদ বর্ণিত আছে। একদা যুধিষ্ঠির ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে প্রশ্ন করলেন, হে কৃষ্ণ! এই ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষীয়া একাদশীর নাম কী? এই ব্রত পালনের ফল কী? শ্রীকৃষ্ণ বললেন, এই ব্রত পূণ্য ফল প্রদায়িনী, স্বর্গ ও মোক্ষদায়িনী। এর মাহাত্ম্য শ্রবণে সকল পাপ বিনষ্ট হয়। এই একাদশীকে পার্শ্ব একাদশী বলা হয়। আবার এই একাদশীকে জয়ন্তী একাদশীও বলা হয়। যিনি এই তিথিতে ভক্তিভরে শ্রীবামন ভগবানের পূজা করেন, তিনি ত্রিলোকে পূজা পান। যিনি, কমলনয়ন শ্রীবিষ্ণুর পূজা, কমল দ্বারা করেন, তিনি নিসন্দেহে ভগবানের সমীপে গমন করেন। যে পূণ্য এই ব্রতে লাভ হয়, তা বাজপেয় যজ্ঞেও লাভ হয় না। এই একাদশীতে শায়িত ভগবান অনন্ত শয্যায় পার্শ্ব পরিবর্তন করেন। বাম অঙ্গ থেকে দক্ষিণ অঙ্গে শয়ন করেন। তাই এই একাদশীকে পরিবর্তিনী একদশীও বলা হয়। যুধিষ্ঠির মহারাজ বললেন, হে জনার্দন। এই সকল কথা শুনে আমার বড় সন্দেহ হয়, আপনি কী রূপে শয়ন করেন আবার কী রূপেই বা পার্শ্ব পরিবর্তন করেন। চাতুর্মাস্য ব্রতকারীর কী বিধান, আপনার শয়নকালে লোকে তখন কী করে? আপনি বলি মহারাজকে কী জন্য নাগপাশে বেঁধেছিলেন? হে প্রভো! এই সকল বিষয় কৃপা পূর্বক আমাকে বলুন।

শ্রীকৃষ্ণ বললেন, হে রাজন! ত্রেতাযুগে বলি নামে এক অসুরকুলজাত আমার ভক্ত ছিল। সে প্রতি দিন শ্রদ্ধাভরে বিভিন্ন মন্ত্র দ্বারা আমার পূজা করত। ব্রাহ্মণগণ পূজা ও যাগযজ্ঞাদিতে সাহায্য করত। কিছু দিন পর দেবরাজ ইন্দ্রকে হারিয়ে দেবলোক জয় করে নিল। তখন ইন্দ্র ও অন্যান্য দেববৃন্দ স্বর্গরাজ্য হারা হয়ে আমার শরণাপন্ন হলেন। দেবমাতা অদিতীর পয়ঃব্রত পালনে আমি তাঁর পুত্ররূপে দেবকার্য সাধনের জন্য বামনরূপ ধরে ব্রহ্মচারীর বেশে তৎক্ষণাৎ বলির নিকট ভিক্ষা চাইলাম। সে আমায় পূজা করে আমার অভিরুচী ভিক্ষা দিতে চাইল। অগত্যা আমি তার নিকট ত্রিপাদ ভূমি আশা করলে সে আমায় দিতে সম্মত হল। তখন আমি এক পদ দ্বারা মর্ত্যভূমি, আর অন্য পদদ্বারা ঊর্ধ্বলোক নিয়েনি। তৃতীয় পদের জন্য স্থান চাইলে বলি তখন নিজের মাথা পেতে দিয়েছিল। তার নম্রতা ও শ্রদ্ধায় সন্তুষ্ট হয়ে আমি আশীর্বাদ করেছিলাম যে, হে বলি! আমি সব সময় তোমার নিকট থাকব।

আরও পড়ুন: ঠাকুরঘরে এই জিনিসগুলো রাখুন, আর দেখুন মা লক্ষ্মী কী ভাবে আপনার ওপর কৃপা করেন

ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষীয়া একাদশীর দিন আমার অর্থাৎ বামনদেবের শ্রীমূর্তি বলির আশ্রমে স্থাপিত হয়। আর দ্বিতীয় মূর্তি ক্ষীরসাগরে অনন্তশয্যায় শায়িত অবস্থায় স্থাপিত হয়েছে। তা হলে শয়ন থেকে উত্থান একাদশী এই চারমাসকাল চাতুর্মাস্য ব্রত নামে পরিচিত। এই সময় ভগবান অনন্ত শয্যায় শায়িত থাকেন। চাতুর্মাস্যকালে আমার আরাধনা ও প্রতিটা একাদশী পালন করতে হয়। এই একাদশী ব্রত পালনে ভববন্ধন ক্ষয় ও আমাতে ভক্তির উদয় হয়, অন্তে আমার ধাম প্রাপ্তি হয়। এই একাদশী ব্রত শ্রবণে জীবের সকল পাপ বিনষ্ট হয়।

এখন জেনে নেওয়া যাক ১৪২৬ সনের পার্শ্ব একাদশীর নির্ঘণ্ট ও সময়সূচি (বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত ও গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে):

বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে:

পার্শ্ব একাদশী আরম্ভ:

বাংলা তারিখ: ২২ ভাদ্র ১৪২৬, রবিবার।

ইং তারিখ: ০৮/০৯/২০১৯।

সময়: রাত্রি ১০টা ৪১ মিনিট থেকে।

পার্শ্ব একাদশী শেষ:

বাংলা তারিখ: ২৩ ভাদ্র ১৪২৬, সোমবার।

ইং তারিখ: ০৯/০৯/২০১৯।

সময়: রাত্রি ১২টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত।

পার্শ্ব একাদশীর উপবাস:

বাংলা তারিখ: ২৩ ভাদ্র ১৪২৬, সোমবার।

ইং তারিখ: ০৯/০৯/২০১৯।

সময়: রাত্রি ১২টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত।

গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে:

পার্শ্ব একাদশী আরম্ভ:

বাংলা তারিখ: ২১ ভাদ্র ১৪২৬, রবিবার।

ইং তারিখ: ০৮/০৯/২০১৯।

সময়: রাত্রি ১টা ২০ মিনিট থেকে।

পার্শ্ব একাদশী শেষ:

বাংলা তারিখ: ২২ ভাদ্র ১৪২৬, সোমবার।

ইং তারিখ: ০৯/০৯/২০১৯।

সময়: রাত্রি ২টো ৩ মিনিট পর্যন্ত।

পার্শ্ব একাদশীর উপবাস:

বাংলা তারিখ: ২২ ভাদ্র ১৪২৬, সোমবার।

ইং তারিখ: ০৯/০৯/২০১৯।

সময়: রাত্রি ২টো ৩ মিনিট পর্যন্ত।

অন্য বিষয়গুলি:

Parsva Ekadashi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy