১২টি বায়োকেমিক মেডিসিন ও জ্যোতিষের ১২টি রাশির মধ্যে একটা অদ্ভুত সম্পর্ক রয়েছে। বায়োকেমিক মেডিসিন মানে ১২টি সল্ট। আর এই ১২টি ঔষধ নিয়ে গড়ে উঠেছে একটা চিকিৎসা শাস্ত্র। ৩০০ বছরের উপর বয়স এই চিকিৎসা শাস্ত্রের। ভারতবর্ষে, বিশেষ করে অবিভক্ত বাংলায় প্রায় ১৫০ বছর ধরে এই চিকিৎসা চলছে।
এ বার আমরা দেখাব কালপুরুষের ১২টি রাশি বা ১২টি জন্ম মাসের সঙ্গে বায়োকেমিকের এই ১২টি মেডিসিনের সম্পর্ক কী।
প্রথমেই আমরা জানব বায়োকেমিকের ১২টি মেডিসিনের নাম
(১) কেলি ফস
(২) নেট্রাম সাল্ফ
(৩) কেলি মিউর
(৪) ক্যাল্কেরিয়া ফ্লর
(৫) ম্যাগ ফস
(৬) কেলি সাল্ফ
(৭) নেট্রাম ফস
(৮) ক্যাল্কেরিয়া সাল্ফ
(৯) সাইলেসিয়া
(১০) ক্যাল্কেরিয়া ফস
(১১) নেট্রাম মিউর
(১২) ফেরাম ফস
এ বার আমরা জানব সায়ন মতে রবি সঞ্চারিত বারোটি রাশির নাম—
(১) মেষ (২১ মার্চ থেকে ২১ এপ্রিল)
(২) বৃষ (২১ এপ্রিল থেকে ২১ মে)
(৩) মিথুন (২১ মে থেকে ২১ জুন)
(৪) কর্কট (২১ জুন থেকে ২২ জুলাই)
(৫) সিংহ (২২ জুলাই থেকে ২৩ অগস্ট)
(৬) কন্যা (২৩ অগস্ট থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর)
(৭) তুলা (২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২৩ অক্টোবর)
(৮) বৃশ্চিক (২৩ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর)
(৯) ধনু (২২ নভেম্বর থেকে ২১ ডিসেম্বর)
(১০) মকর (২২ ডিসেম্বর থেকে ২১ জানুয়ারি)
(১১) কুম্ভ (২১ জানুয়ারি থেকে ২০ ফ্রেব্রুয়ারি)
(১২) মীন (২০ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে ২১ মার্চ)
এ বার আমরা দেখব সায়ন মাসের সঙ্গে বায়োকেমিক ঔষধের রসায়নগত সম্পর্ক কী ভাবে গড়ে উঠেছে—
(১) মেষ: কালপুরুষের প্রথম মাস সায়ন মতে মেষ। বাংলা মাস বৈশাখ। জ্যোতিষে মেষ বোঝায় মস্তিষ্ক এবং মুখমণ্ডল। মস্তিষ্ক মানব শরীরের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। মস্তিষ্কে রয়েছে হোয়াইট ম্যাটার ও গ্রে ম্যাটার। বায়োকেমিকে ‘কেলি ফস’ হচ্ছে সেই মেডিসিন যা গ্রে বা ধূসর অংশকে কনট্রোল করে। কেলি ফস দ্বারা বায়োকেমিকে সমস্ত রকম মেন্টাল ডিসঅর্ডার সারিয়ে তোলা হয়।
(২) বৃষ: বাংলা মাস জেষ্ঠ। বৃষ থেকে নিয়ন্ত্রণ হয় থাইরয়েড বা প্যারাথাইরয়েড। পক্ষান্তরে যা নিয়ন্ত্রণ করে লিভার ও অগ্ন্যাশকে। আর এখানকার মেডিসিন নেট্রাম সাল্ফ। আমরা জানি, নেট্রাম সাল্ফ শরীরের অতিরিক্ত জল বাইরে বের করে দিয়ে পিত্ত বা ম্যালেরিয়ার মতো রোগ থেকে শরীরকে রক্ষা করে। একই সঙ্গে লিভার, অগ্ন্যাশয়, কিডনিকে রক্ষা করে ডায়াবেটিসর হাত থেকে বাঁচায় নেট্রাম সাল্ফ।
(৩) মিথুন: বাংলা মাস আষঢ়। মিথুন নিয়ন্ত্রণ করে ফুসফুস, কাঁধ, হাত, আঙুল ইত্যাদি। মিথুনের ঔষধ হচ্ছে ক্যালি মিউর। ক্যালি মিউর নিয়ন্ত্রণ করে ফায়াব্রিনকে। হাড় বাদে শরীরের সমস্ত কলাতে থাকে ফায়াব্রিন। ক্যালি মিউর আমাদের সর্দিকাশিকে নিয়ন্ত্রণ করে। শরীরের প্রতিরোধ শক্তি জাগিয়ে ক্যালি মিউর মাম্পস, হাম, সলেন গ্ল্যান্ড, গলা, টন্সিল সারিয়ে তোলে।
(৪) কর্কট: বাংলা মাস শ্রাবণ। কর্কট রাশির অধিপতি চন্দ্র। রবি মানে পিতা, যিনি জীবন দান করে জীবনী শক্তি দেন। আর চন্দ্র মাতা তার পুষ্টি যোগায়, লালন পালন করে। চন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করে শরীরের সমস্ত ফ্লুইড সিস্টেম। আর কর্কটের বায়োকেমিক ঔষধ হচ্ছে ক্যাল্কেরিয়া ফ্লোরাইড। এই ঔষধ স্বাভাবিক প্রসবে সাহায্য করে, মায়েরা প্রসব যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পায়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্থিতিস্থাপকতা যাতে নষ্ট না হয় এই সল্ট তা রক্ষা করে।
(৫) সিংহ: বাংলা মাস ভাদ্র। সিংহের অধীনে হৃদয়। আর সিংহের মেডিসিন হচ্ছে ম্যাগ ফস। ম্যাগ ফস নিয়ন্ত্রণ করে মোটর নার্ভকে। যা পক্ষান্তরে হার্টকে রক্ষা করে। রোজ ম্যাগ ফস এবং কেলি ফস খেলে নার্ভাস সিস্টেম ভাল থাকে, পক্ষান্তরে প্রেশার নিয়ন্ত্রণে থাকে।
(৬) কন্যা: বাংলা মাস আশ্বিন। কন্যা রাশি মানে ‘হসপিটাল সাইন’। সায়ন মতে এই রাশিতে জন্ম হলে আজীবন রোগ রোগ একটা বাতিক থাকে। আজীবন হজম নিয়ে কম বেশি একটা সমস্যা থেকেই যায়। আর এর ঔষধ হচ্ছে ‘কেলি সাল্ফ’। কেলি সাল্ফ কী করে। শরীরের সমস্ত অয়েল মলিকুল টেনে এনে লিভারে নিয়ে যায় এবং তেলের অণুকে কনভার্ট করে রক্তকে শোধন করে। পক্ষান্তরে হজমে সাহায্য করে।
(৭) তুলা: বাংলা মাস কার্তিক। তুলা মানে দাঁড়িপাল্লা বা ব্যালান্স। বায়োকেমিক সল্ট ‘নেট্রাম ফস’ হচ্ছে তুলার ঔষধ। এই ঔষধটি ক্ষারকীয় গুণ সমৃদ্ধ। ফলে শরীরের অম্ল প্রভাব কমিয়ে রক্তের বা পাকস্থলীর ক্ষারকীয় সমতা বজায় রাখে।
(৮) বৃশ্চিক: বাংলা মাস অগ্রহায়ণ। বৃশ্চিকের অধিপতি মঙ্গল। মঙ্গল জন্ম ছকে সক্রিয় থাকলে শরীরের সমস্ত দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যায় এবং রক্ত বিশুদ্ধ থাকে। তাই বৃশ্চিকের বায়োকেমিক সল্ট হচ্ছে ক্যাল্কেরিয়া সাল্ফ। এই ঔষধটি বিশেষ রকমের ‘পিউরিফায়ার’। বৃশ্চিক হচ্ছে অষ্টম ভাব, আর অষ্টম ভাব থেকে বিচার হয় জনন অঙ্গ, প্রস্ট্রেট, লিঙ্গ, গুহ্যদ্বার(রেক্টাম), ফিসচুলা ইত্যাদি। ক্যাল্কেরিয়া সাল্ফ মেয়েদের সন্তান হতে বাধা সৃষ্টি কমায়। আর ছেলেদের ধ্বজভঙ্গ দূর করে।
(৯) ধনু: ধনুর অধিপতি বৃহস্পতি। এখানকার ঔষধ সাইলেসিয়া। সাইলেসিয়াকে ‘নেচার সার্জেন’ বলে, কারণ কোথাও পুঁজ হলে সাইলেসিয়া ভাল কাজ করে।
(১০) মকর: বাংলা মাস মাঘ। মকরের অধিপতি শনি। শনি মানেই হাড়। আর হাড় মানেই ক্যালসিয়াম। তাই এখানকার বায়োকেমিক মেডিসিন ক্যাল্কেরিয়া ফসফেট। যা হাড় গঠনে সাহায্য করে।
(১১) কুম্ভ: বাংলা মাস ফাল্গুন। কুম্ভের জাতকদের রক্ত দূষিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এখানকার বায়োকেমিক সল্ট হচ্ছে ‘খাবারের নুন’ যার রাসায়নিক নাম ‘নেট্রাম মিউর’। স্থুল ভাবে প্রতি দিন আমরা এটা নিয়ে থাকি। কিন্তু বায়োকেমিক মেডিসিন সূক্ষ্ম মাত্রার ঔষধ। শরীরের জলীয় অংশকে প্রতিনিয়ত নিয়ন্ত্রণ করছে নেট্রাম মিউর। নানা রোগে এই মেডিসিনটি ব্যবহার হয়।
(১২) মীন: বাংলা মাস চৈত্র। মীনের অধিপতি বৃহস্পতি। বৃহস্পতি দুর্বল বা নীচস্ত বা অন্য গ্রহদ্বারা অশুভ হলে ‘অ্যানিমিয়া’ হয়। অ্যানিমিয়া হওয়া মানে শরীরের রক্তে লৌহ কম বা আয়রন ডেফিসিয়েন্সি। আর এর মেডিসিন হল ফেরাম ফস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy